এক ভোট গিয়ে আর এক ভোট এসে গেল। কিন্তু প্রতিশ্রুতি মতো পরিস্রুত পানীয় জলের সঙ্কট মিটল না এলাকায়। পরিস্থিতি এমন যে মাত্রাতিরিক্ত ফ্লোরাইড থাকা নলকূপ থেকে জল সংগ্রহ করতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।
এমনই অভিযোগ তুলে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে নলহাটি পুরসভার বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে। গত পুরভোটের আগে ২০১২ সালে শহরের ১৬টি ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দিতে স্থানীয় পাথরকল পাড়া, করিমপুর এবং নজরুল পল্লিতে তিনটি নতুন রিজার্ভার তৈরি করা হয়। তার পরেও দুর্ভোগ কাটছে না। শহরের ১, ২, ৫, ১৩ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ক’দিন ধরে প্রবল পানীয় জলের সঙ্কট তৈরি হয়েছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। একই দাবি করেছেন ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ফরওয়ার্ড ব্লক কাউন্সিলর হাসিবুল শেখও। সঙ্কটের কথা মেনে নিয়েছেন পুরপ্রধান রাজেন্দ্রপ্রসাদ সিংহ। তাঁর দাবি, জল তোলার জন্য থাকা তিনটি পাম্পের জলস্তর নীচে নেমে যাওয়াতেই শহরে জল সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছে। যে সব ওয়ার্ডে জল সরবরাহে সমস্যা দেখা দিয়েছে, তা দু’ এক দিনের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে বলে তাঁর আশ্বাস।
বিরোধী কাউন্সিলর হাসিবুল জানান, করিমপুর জলাধার থেকে ওই পাঁচটি ওয়ার্ডে জল সরবরাহ করা হয়ে থাকে। কিন্তু গত পাঁচ দিন ধরে ওয়ার্ডগুলিতে পানীয় জলের সরবরাহ অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। দু’বেলা জল দেওয়া হলেও তার পরিমাণ খুবই কম। এর ফলে এলাকায় এলাকায় পানীয় জলের কষ্ট দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতির মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই মাঠে নেমেছে পুরসভা। পুরপ্রধান জানান, করিমপুর জলাধারের জন্য জগধারী সংলগ্ন ব্রাহ্মণী নদীর পাম্প হাউসে তিনটি জায়গায় জলস্তর নীচে নেমে গিয়েছে। নতুন করে খনন করে জল উত্তোলনের কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়াও ১, ২ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জন্য বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দু’টি নতুন যন্ত্র বসিয়ে জল উত্তোলনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এ দিকে, অভিযোগ উঠেছে জল না পাওয়ায় মাত্রাতিরিক্ত ফ্লোরাইড থাকা নলকূপ থেকে জল সংগ্রহ করতে বাধ্য হচ্ছেন বাসিন্দারা। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা জানান, বছর চারেক আগে এলাকার ৫-৬টি সরকারি নলকূপে মাত্রাতিরিক্ত ফ্লোরাইড পাওয়া যায়। সম্প্রতি পানীয় জলের সঙ্কটে এলাকার মানুষ বাধ্য হয়ে ওই নলকূপগুলি থেকে জল পান করতে বাধ্য হচ্ছেন। সব কিছু জেনেও পুরসভা কোনও বিকল্প ব্যবস্থা করছে না বলে ওই বাসিন্দাদের অভিযোগ। রাজেন্দ্রবাবু অবশ্য বাসিন্দাদের ফ্লোরাইড দূষিত পানীয় জল পান করার কথা মানতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ফ্লোরাইড মেলার পরে ওই নলকূপগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তা ঠিক করে এলাকাবাসী কাপড় কাচার জন্য ব্যবহার করলে আমাদের কী করার আছে!’’