বোরোয় জল কি মিলবে, চিন্তায় মন্ত্রী

শুক্রবার কংসাবতী জলাধারের বর্তমান অবস্থা সরেজমিনে দেখতে এসেছিলেন সেচমন্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মুকুটমণিপুর শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৪৫
Share:

মুকুটমণিপুরে জলাধারে এ বার জল কম। নিজস্ব চিত্র

বৃষ্টির ঘাটতি জেরে জল কম মুকুটমণিপুরের কংসাবতী জলাধারে। তাই এ বার বোরো চাষে কংসাবতী থেকে জল দেওয়ার আশ্বাস দিতে পারলেন না সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। তবে, দীর্ঘদিন ধরে মজে যাওয়া সেচ ক্যানালগুলি সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

শুক্রবার কংসাবতী জলাধারের বর্তমান অবস্থা সরেজমিনে দেখতে এসেছিলেন সেচমন্ত্রী। এ দিন দুপুরে মুকুটমণিপুরে তিনি বলেন, ‘‘স্বাভাবিকের তুলনায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ এ বার বেশ কিছুটা কম। তাই জল ছাড়ার ব্যাপারে কোনও আশ্বাস দেওয়া যাচ্ছে না। তবে, যদি আরও বৃষ্টি হয়, তখন পরিস্থিতি বুঝে জল ছাড়ার বিষয়টি দেখা যাবে।’’

মন্ত্রী জানান, রাজ্যে যতগুলি জলাধার রয়েছে, তার কোনওটিতেই পরিমিত জল নেই। মুকুটমণিপুরেও সেই চিত্র। তবে, গ্রীষ্মকালে যেমন গবাদি পশু ও সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্য জল দেওয়া হয়, এ বারও এই জলাধার থেকে সেই রকম ভাবে জল সরবরাহ করা হবে।

Advertisement

মন্ত্রী বলেন, ‘‘মুকুটমণিপুর জলাধারে এখনও যে পরিমাণ জল আছে, তার উপর নির্ভর করছে এলাকার পানীয় জল। সেই প্রয়োজন মিটিয়ে বোরোয় কতটা জল দিতে পারব, তা নিয়ে যথেষ্ট ভাবনা রয়েছে। তাই বোরো চাষিদের আমরা বলেছি, এ বার চাষে পরিবর্তন আনুন। তৈলবীজ, শষ্যবীজ চাষ করুন। কারণ, বর্তমান পরিস্থিতিতে কিছু বিকল্প কৃষির প্রয়োজন আছে। তাতে জলের সমবন্টন হবে।’’

মন্ত্রী জানান, সেচ ক্যানাল মজে গিয়েছে বলে বেশ কিছু অভিযোগ ছিল চাষিদের। মেদিনীপুর ও বাঁকুড়ায় সেই সেচ ক্যানালগুলি সংস্কারের কাজ হচ্ছে।

এ দিকে জলের জন্য এ বার বোরো চাষে নামতে পারেননি দক্ষিণ বাঁকুড়ার বহু চাষি। তাঁরা জানাচ্ছেন, অন্য বছর রবি শষ্যের জন্য জানুয়ারিতেই এক বার কংসাবতী থেকে জল দেওয়া হত। সেই জলেই চাষিরা বোরোর বীজতলা করতেন। কিন্তু এ বার সে ভাবে বৃষ্টি হয়নি। সেচ ক্যানালেও জল পাওয়া যায়নি। ফলে, বোরো চাষ মার খাচ্ছে।

সিমলাপালের কুকরাকন্দর এলাকার চাষি আজিত মাহাতো, রানিবাঁধ অম্বিকানগরের তপন মাহাতো বলেন, ‘‘পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়া আমন চাষেও পর্যাপ্ত ফলন হয়নি। এ বার বোরো চাষও মার খাচ্ছে। আমরা খুব সমস্যায় পড়ে গিয়েছি।’’ সিমলাপালের দুবরাজপুরের শঙ্কর ঘোষ, বলেন, ‘‘আমি পাঁচ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করতাম। এ বার এক কাঠা জমিতেও চাষ করা সম্ভব.হচ্ছে না সেচের জলের অভাবে।’’

বোরো চাষ যে এ বার মার খাচ্ছে, সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন খাতড়া মহকুমা কৃষি আধিকারিক গণেশ সিং সর্দার। তিনি বলেন, ‘‘খাতড়া মহকুমা এলাকায় প্রতি বছর সাড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হত। কিন্তু, গত সপ্তাহ পর্যন্ত যা খবর পাওয়া গিয়েছে, তাতে এ বার বোরো চাষ আদৌ করা যাবে কি না, ঘোর সংশয় রয়েছে। যেটুকু এলাকায় চাষ হচ্ছে, তা কোনও হিসাবের মধ্যেই আসছে না।’’

সেচমন্ত্রীর সঙ্গে এ দিন ছিলেন রানিবাঁধের বিধায়ক জ্যোৎস্না মান্ডি ও খাতড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জয়ন্ত মিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন