প্রতীকী ছবি।
ছাত্র জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা মাধ্যমিক। তা নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের উদ্বেগ থাকেই। সে দিকে লক্ষ রেখে পরীক্ষার্থীদের সমস্যা এড়াতে এবং পরীক্ষা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক দফতরের পাশাপাশি পুলিশ-প্রশাসন সব রকম প্রস্তুতি নিয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রে জানানো হয়েছে, পরীক্ষাকেন্দ্রে ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতের জন্য সমস্ত রুটে সময়মতো বাস চালানোর নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। যদি কোনও রুটে বাস বিকল হয়, তার পরিবর্তে অন্য বাস চালানোর জন্য বাসমালিক সমিতিকে সতর্ক করেছে প্রশাসন।
পর্ষদ সূত্রে খবর, শুধুমাত্র পরীক্ষার প্রথম দিন পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর সঙ্গে এক জনকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে (সেটাও পরীক্ষাকেন্দ্র বা স্কুল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী)। কিন্তু পরীক্ষা শুরু হওয়ার ৩০ মিনিট আগে অর্থাৎ ১১টা ১৫ মিনিটে তাঁকে পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে বেরিয়ে আসতে হবে। পরীক্ষার্থীরা প্রশ্নপত্র হাতে পাবে পরীক্ষা শুরুর ১৫ মিনিট আগে অর্থাৎ ১১টা ৪৫ মিনিটে। পরীক্ষার খাতা দেওয়া হবে ১১টা ৫৫ মিনিটে। পরীক্ষা শুরু বেলা ১২টায়। চলবে দুপুর ৩টে পর্যন্ত।
পরীক্ষাকেন্দ্রের ১০০ মিটারের মধ্যে জারি থাকবে ১৪৪ ধারা। নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন থাকবে পুলিশ। মাধ্যমিক শুরুর তিনদিন আগে থেকেই মাইক বাজানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরীক্ষার দিনগুলিতে পরীক্ষাকেন্দ্রের ১০০ মিটারের মধ্যে জেরক্সের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
পরীক্ষার্থীদের কোনও রকম বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি যেমন মোবাইল ফোন বা ক্যালকুলেটর নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ। সাধারণ ভাবে প্রতিটি পরীক্ষা-কক্ষে দু’জন করে ইনভিজিলেটর বা পরিদর্শক থাকেন। পর্যদ সূত্রে খবর, এ বারই প্রথম সেখানে আরও এক জন অতিরিক্ত পরিদর্শক থাকবেন যাঁর কাজ হবে কোনও পরীক্ষার্থী মোবাইল বা অন্য কোনও ইলেকট্রনিক যন্ত্র ব্যবহার করছে কি না, সে দিকে নজর রাখা। মধ্যশিক্ষা পর্যদ মনোনিত ৬৮ জন পর্যবেক্ষকও থাকবেন। প্রতিটি কেন্দ্রের জন্য থাকবেন এক জন করে অ্যাডিশনাল সুপারভাইজার।
পরীক্ষার্থীদের অসুস্থতা দেখতে থাকছে মেডিক্যাল টিম। সংক্রামক কোনও রোগ হলে সেই পরীক্ষার্থীকে অন্য ঘরে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন, নকল রুখতে এবং টুকলি সরবরাহ বন্ধ করতে জেলার তিনটি মহকুমায় একটি করে ভিজিল্যান্স টিম তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়াও পরীক্ষাকেন্দ্রে শিক্ষকদের মোবাইল ব্যবহার রুখতেও ওই দল নজরদারি চালাবে। কোনও সমস্যা হলে জেলা প্রশাসনের হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করতে হবে। সেই নম্বর হল— ১৮০০-৩১৩-৭৪৬৪। তা ছাড়াও মাধ্যমিকের জন্য (উপ-সচিব) ৯০০৭০৮১১৯৯ এবং মাদ্রাসার জন্য (প্রেসিডেন্ট) ৯৪৩৪২৩০৯৫৯ নম্বরে যোগাযোগ করা যেতে পারে। যাতায়াতের সমস্যায় জেলা পরিবহণ আধিকারিককে ৭০৪৪০৪২৫৯৪ নম্বরে ফোন করা যাবে।
পর্ষদ সূত্রে খবর, এ বার বীরভূমে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৪ হাজার ০৯৮ জন। তার মধ্যে ছাত্র ১৮ হাজার ৪৮৮, ছাত্রী ২৫ হাজার ৬১০ জন। জেলায় পরীক্ষাকেন্দ্র ১২২টি। মহকুমাভিত্তিক পরীক্ষাকেন্দ্র এবং পরীক্ষার্থীর সংখ্যা হল— সিউড়িতে পরীক্ষাকেন্দ্র ৪৯টি, পরীক্ষার্থী ১৫ হাজার ৭২৩। বোলপুরে পরীক্ষাকেন্দ্র ২৯টি, পরীক্ষার্থী ১০ হাজার ৪৯৮ জন। রামপুরহাটে পরীক্ষাকেন্দ্র ৪৪, পরীক্ষার্থী ১৭ হাজার ৮৭৭ জন। একই দিন শুরু হচ্ছে মাদ্রাসা পরীক্ষাও। চলবে ২৪ মার্চ পর্যন্ত। জেলার ১০টি কেন্দ্রে ৩ হাজার ৩৮৬ জন মাদ্রাসা পরীক্ষা দেবে।