সরেজমিন সাইকেলে

নজরে এল অব্যবস্থা

ব্যক্তিগত মালিকানাধীন পুকুর সংস্কার না করে ফেলে রাখলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিলেন জেলাশাসক। এ বার সরেজমিন একাধিক পুকুরের অবস্থা খতিয়ে দেখলেন তিনি। আর ঘুরতে গিয়ে তাঁর নজরে এল শহরের আরও বেশ কিছু সমস্যা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৫
Share:

রাস্তায় জেলাশাসক। নিজস্ব চিত্র

ব্যক্তিগত মালিকানাধীন পুকুর সংস্কার না করে ফেলে রাখলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিলেন জেলাশাসক। এ বার সরেজমিন একাধিক পুকুরের অবস্থা খতিয়ে দেখলেন তিনি। আর ঘুরতে গিয়ে তাঁর নজরে এল শহরের আরও বেশ কিছু সমস্যা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকালে সাইকেল নিয়ে বাঁকুড়া শহরের একাংশ ঘুরেছেন জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস, মহকুমাশাসক (বাঁকুড়া সদর) সুদীপ্ত দাস। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন বাঁকুড়ার পুরপ্রধান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত, উপপুরপ্রধান দিলীপ অগ্রবাল প্রমুখ। প্রথমে শহরের পাটপুর ও রবীন্দ্রসরণি এলাকার বস্তিগুলিতে যান তাঁরা। দু’টি ব্যক্তি-মালিকানাধীন পুকুরের অবস্থা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জেলাশাসক। দীর্ঘ দিন ধরেই পুকুরগুলি সংস্কার হয়নি বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। কচুরি পানায় ঢেকে রয়েছে জল। ওই এলাকায় বৃষ্টির জল জমার সমস্যাও নজরে আসে জেলাশাসকের। পুরপ্রধানকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেন তিনি।

এর পরে কেঠারডাঙা রেলগেট সংলগ্ন বস্তিতে গিয়ে কয়েক জনকে ঘরের বারান্দায় বসে প্রকাশ্যে মদ্যপান করতে দেখেন তাঁরা। জেলাশাসককে দেখে আসর ফেলে সবাই চম্পট দেয়। ওই রেলগেট সংলগ্ন বস্তিতেই শুয়োর চরে বেড়াতে দেখে ক্ষুব্ধ হন জেলাশাসক। অবিলম্বে এলাকায় শুয়োর চরা রুখতে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন। শুয়োর যাতে কোনও ভাবেই বাড়ির বাইরে না বেরোয়, সে জন্য পশুপালকদের নোটিস দিতে বলেন পুরকর্তাদের।

Advertisement

এর পরে জেলাশাসক যান কেঠারডাঙা বাজারে। ওই বাজার লাগোয়া এলাকাতেই একটি পুকুর রয়েছে। পাড়ে মুরগির মাংস বিক্রির দোকান। ব্যবসায়ীরা নোংরা ফেলেন পুকুরেই। পাশেই হোটেল। তার আবর্জনাও জলেই এসে পড়ে। এই সমস্ত দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জেলাশাসক। ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে নির্দেশ দেন আবর্জনা নির্দিষ্ট জায়গাতেই ফেলতে। কেঠারডাঙা এলাকার মুসলিমবস্তির খেলার মাঠটি দীর্ঘ দিন ধরেই নোংরা হয়ে রয়েছে। স্থানীয় কিছু লোকজন ওই মাঠেই শৌচ করেন। এই অবস্থা দেখেও ক্ষুব্ধ হন জেলাশাসক। পুরসভা তাঁকে জানায়, মাঠটি রেলের। বস্তির ভিতরের পুকুরগুলিও দীর্ঘ সংস্কার না হয়ে পড়ে রয়েছে। পুকুরে অবৈধ নির্মাণ হয়েছে বলেও নজরে আসে জেলাশাসকের।

এ দিন জেলাশাসক মহকুমাশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন ব্যক্তিগত মালিকানাধীন পুকুরগুলির মালিকদের চিঠি দিতে। তিনি বলেন, “নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মালিক যদি পুকুর সংস্কার না করেন তাহলে সেই পুকুর প্রশাসন সংস্কার করে মাছ চাষের জন্য লিজ দিয়ে দেবে। পুকুরের পরিচ্ছন্নতা বজার রাখার ক্ষেত্রে কোনও রকম গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না।” পুরপ্রধান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত বলেন, “রেলের জায়গায় পুরসভাকে কাজ করতে দেওয়া হয় না। বিষয়টি জেলাশাসককে জানিয়েছি। যাঁরা শুয়োর চাষ করছেন তাঁদের নাম কাউন্সিলারদের মাধ্যমে সংগ্রহ করে বাড়িতে শুয়োর আটকে রাখার বিষয়ে নোটিস পাঠানো হবে।”

মহকুমাশাসক সুদীপ্ত দাস জানান, রেলের সঙ্গে শীঘ্রই প্রশাসন ও পুরসভা বৈঠকে বসবে। পুকুরের মালিকদের নোটিস পাঠানোর প্রক্রিয়াও ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন