দফতরের সামনে খুন তৃণমূল নেতা

মৃত রবিউল হক (৫০) স্থানীয় রকঘরিয়া গ্রামের বাসিন্দা। দীর্ঘদিন কংগ্রেস করার পরে গত বিধানসভা ভোটের আগে তিনি তৃণমূলে আসেন। দলের বড়ঞা ব্লক ও সাবলপুর অঞ্চল কমিটির সদস্য ছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বড়ঞা শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৮ ১৫:১৪
Share:

দলীয় দফতরের সামনেই তৃণমূল নেতাকে বোমা মেরে খুন করে গেল দুষ্কৃতীরা। সোমবার সকালে মুর্শিদাবাদের বড়ঞায় ঘটনাটি ঘটে। কংগ্রেসের মদতে এই খুন বলে দাবি করছে তৃণমূল। তবে খুনের পিছনে যার হাত রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে, সে দীর্ঘদিন তৃণমূলের লোক বলেই এলাকায় পরিচিত।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মৃত রবিউল হক (৫০) স্থানীয় রকঘরিয়া গ্রামের বাসিন্দা। দীর্ঘদিন কংগ্রেস করার পরে গত বিধানসভা ভোটের আগে তিনি তৃণমূলে আসেন। দলের বড়ঞা ব্লক ও সাবলপুর অঞ্চল কমিটির সদস্য ছিলেন। সকালে বাজার সেরে কান্দি-ডাকবাংলো রাজ্য সড়কের ধারে বড়ঞা ব্লক অফিসের পাশে দলীয় দফতরে গিয়েছিলেন তিনি। বাইরে তাঁর মোটরবাইক দাঁড় করানো ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, দলীয় দফতর থেকে বেরিয়ে মোটরবাইকের কাছে যেতেই পরপর দু’টি বোমা ফাটায় দুষ্কৃতীরা। লোকজন ভয়ে পালাতে শুরু করে। রবিউলকে তাক তিনটি বোমা মারা হয়। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। তিনটি মোটরবাইকে কাপড়ে মুখ ঢাকা ন’জন দুষ্কৃতী রাজ্য সড়ক ধরে‌ পালায়। অভিযোগ দায়ের না হলেও পুলিশ নিজেই মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। তবে রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।

Advertisement

তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, দলবদলের পরেই বড়ঞা ব্লক তৃণমূল সভাপতি জালালুদ্দিন ওরফে আফাজের সঙ্গে রবিউলের বিরোধ বেধেছিল। আফাজ আপাতত মাদক মামলায় জেলে। তাঁর অনুপস্থিতিতে প্রভাবশালী হয়ে উঠেছিলেন রবিউল। পঞ্চায়েত ভোটে বিভিন্ন অঞ্চলে প্রার্থী দেওয়ার ব্যাপারে তাঁর ভূমিকা ছিল। নিজের অঞ্চলে তাঁর জামাই রাজফুল শেখও প্রার্থী হয়েছেন। কোণঠাসা হয়েছেন আফাজের অনুগামীরা।

রাত পর্যন্ত অভিযোগ দায়ের না হলেও আফাজের অনুগামী সামজেদ শেখই বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসে এই খুন করিয়েছে বলে রবিউল-ঘনিষ্ঠদের সন্দেহ। খুনের পরে গাছের গুঁড়ি ফেলে রাজ্য সড়ক অবরোধ করেছিলেন তাঁরা। পরে ঝাঁকে-ঝাঁকে বোমা মেরে সামজেদের বাড়ি পুড়িয়ে তছনছ করে দেওয়া হয়। রবিউলের স্ত্রী রঙ্গেলা বিবি বলেন, “উনি ইদানীং প্রায়ই বলছিলেন, সামজেদরা ওঁকে খুন করতে পারে। ওঁর সেই আশঙ্কাই সত্যি হল!”

তৃণমূল এবং রবিউলের পরিবার অবশ্য দাবি করছে, সামজেদ বর্তমানে কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত। পরে এলাকায় গিয়ে প্রদেশ যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সৌমিক হোসেনও বলেন, “কংগ্রেস খুনের রাজনীতি করতে চাইছে। তাতে আমাদের উন্নয়নকে থামিয়ে রাখা যাবেনা।’’

বড়ঞা ব্লকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেলা পরিষদের আসন, পঞ্চায়েত সমিতি ও ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছে তৃণমূল।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘তৃণমূলের বাধায় আমরা মনোনয়নই জমা দিতে পারিনি। দলীয় কোন্দলে খুন হল আর দোষ চাপল আমাদের?’’ জেলার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, “কে বা কারা খুনে জড়িত, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন