গান, আবৃত্তি, নাচে অভিভাবকদের রঙিন দিন উপহার দিল খুদেরা

বারো মাসের লেখা নিয়ে মেলা

‘সূর্যের মতো হব উজ্জ্বল, আকাশের মতো হব নির্মল’— উদ্বোধনী সঙ্গীতের মতোই বিষ্ণুপুরের বেন্দা গ্রাম শুক্রবার আলো ঝলমলে করে তুলল কচিকাঁচারা। উপলক্ষ ‘পঠন মেলা’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:২০
Share:

ছোট-হাতে: বিষ্ণুপুরের বেন্দা গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

‘সূর্যের মতো হব উজ্জ্বল, আকাশের মতো হব নির্মল’— উদ্বোধনী সঙ্গীতের মতোই বিষ্ণুপুরের বেন্দা গ্রাম শুক্রবার আলো ঝলমলে করে তুলল কচিকাঁচারা। উপলক্ষ ‘পঠন মেলা’।

Advertisement

দ্বারিকা গোঁসাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বেন্দা গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের ৭১ জন পড়ুয়া এ দিন গান গেয়ে, আবৃত্তি করে, নেচে রঙিন একটা দিন উপহার দিল অভিভাবকদের। রং চঙে বেলুন আর কাগজ দিয়ে খুদেরাই সাজিয়েছিল অনুষ্ঠানের জায়গা।

প্রধান শিক্ষক উজ্জ্বল শীট জানান, ১৯৪৬ সালের এই স্কুল থেকে এলাকার বহু কৃতি ছেলেমেয়ে বেরিয়েছে। ২০১৫ সালে বাঁকুড়া জেলাশাসকের হাত থেকে আসে নির্মল বাংলা পুরস্কার। তিনি বলেন, ‘‘২০১৭ সালের জানুয়ারি মাস থেকে বিষ্ণুপুর উত্তর চক্র অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক কুণাল সানকির অনুপ্রেরনায় খুদেদের নিয়ে প্রতি মাসে দেওয়াল পত্রিকা বের করা শুরু করি। কচি কাঁচাদের খুদে হাতে লেখা ছড়া, কবিতা, প্রবন্ধ থাকত।’’

Advertisement

বছর শেষের মাসে বারোটি দেওয়াল পত্রিকার মন কাড়া লেখাগুলি সাজিয়ে তাঁরা একটি পত্রিকা এ দিন বের করেছেন। সেই পত্রিকার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিটপী’।

দেওয়াল পত্রিকা সাজাতে সাহায্য করেছেন শিক্ষক মদনমোহন লোহার, অমিত নন্দী, পার্শ্বশিক্ষিকা বন্দনা ছাতাইত। বিটপী পত্রিকাতে কী নেই? ছড়া, প্রবন্ধ, ছোট নাটক, রং বেরঙের ছবি। আশপাশের বেলডাঙা, নতুনগঞ্জ, রানিখামার, বেন্দা গ্রাম থেকে এসেছিলেন অনেক বাসিন্দা।

বেলডাঙার কাশীনাথ দে, বেন্দার তপন ছাতাইত, ইতু ছাতাইত, উমা ছাতাইতরা অবাক চোখে দেখছিলেন স্কুল চত্বরে গাছ লাগানো, স্কুলের নির্মল বাংলা পুরস্কার পাওয়া নিয়ে খুদেদের লেখা। ছোট্ট অনুষ্ঠানে রূপম দে, প্রীতি ছাতাইতদের শাড়ি সামলাতে সামলাতে নাচ, আবৃত্তি করা দেখতে দেখতে অনেক অভিভাবককে বলতে শোনা গেল— ‘‘আহা রে! বেচারাদের পড়াশোনা করে না বলে কত বকেছি, কিন্তু ওরা এত সুন্দর লিখতে পারে দেখে বুক ভরে গেল।’’

প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘২০১৪ সালে এই স্কুলে আসি। তখন থেকেই সবাই মিলে স্কুল চত্বরে গাছ লাগিয়েছি। এখন সেই গাছের তলায় রোদের মধ্যে ক্লাস হয়। আমাদের দেওয়াল পত্রিকাও এ রকম বৃক্ষ হয়ে উঠবে।’’

এ দিন বেন্দা গ্রামের পঠন মেলায় উপস্থিত থেকে ছোটদের এ ভাবেই এগিয়ে চলার উৎসাহ দেন বিষ্ণুপুর পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ নূর মহম্মদ খাঁ, জেলা পরিষদের সদস্য মথুর কাপড়ি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন