Mamata Banerjee

দিদির মুখে ‘কেষ্ট-নাম’ কি শোনা যাবে, কৌতূহল 

অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পরে বীরভূমে দল পরিচালনায় ‘কোর কমিটি’ গড়ে দিয়েছিলেন স্বয়ং দলনেত্রী। সেই কমিটির নেতৃত্বে পঞ্চায়েত ভোটে ভাল ফল করেছে তৃণমূল।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত 

সিউড়ি শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:১৯
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

জেলা তৃণমূলে অনুব্রত মণ্ডলের প্রভাব যে ক্রমশ কমছে, তা নিয়ে এখন আর ধোঁয়াশা নেই বীরভূম জেলা তৃণমূলে। জেলা সভাপতির দায়িত্ব ফের ‘কোর কমিটির’ হাতে তুলে দেওয়ার রাজ্য নেতৃত্বের সিদ্ধান্তে অনেকেই অনুব্রত-যুগের ‘শেষের শুরু’ দেখছেন। এই প্রেক্ষিতেই আগামী ২৩ নভেম্বর কলকাতার নেতাজি ইন্ডোরে হতে চলেছে তৃণমূলের সাংগঠনিক সভা। সভায় দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে অনুব্রতের নাম শোনা যায় কিনা, তা জানতে কৌতূহলী তৃণমূলের কর্মী থেকে শুরু করে জেলা নেতারা। অনুব্রত অনুগামীরা মনে করেন, দলনেত্রী ‘কেষ্টদার’ প্রশংসায় দু’চার কথা বললেই জেলায় দলের অভ্যন্তরে সব সমীকরণ বদলে যাবে।

Advertisement

অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পরে বীরভূমে দল পরিচালনায় ‘কোর কমিটি’ গড়ে দিয়েছিলেন স্বয়ং দলনেত্রী। সেই কমিটির নেতৃত্বে পঞ্চায়েত ভোটে ভাল ফল করেছে তৃণমূল।

কয়েক দিন আগে দলীয় স্তরে রদবদলের পরে দেখা যায় বীরভূমের জেলা সভাপতি পদে কাউকে না বসিয়ে দল পরিচালনার ভার ফের কোর কমিটির হাতেই সঁপেছেন তৃণমূলের শীর্ষনেতৃত্ব। তবে সেই কমিটিতে আগামী দিনে কোনও রদবদল হবে কিনা, তা স্পষ্ট করা হয়নি। দলের একাংশের ব্যাখ্যা, নির্দিষ্ট কাউকে জেলা সভাপতি করলে ‘কোন্দল’ মাথাচাড়া দিতে পারে, এই শঙ্কা থেকেই কোর কমিটির হাতে দায়িত্ব অর্পণ করেছেন শীর্ষনেতৃত্ব।

Advertisement

অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘যতই কোর কমিটি তৈরি হোক, আমাদের দলে দিদিই শেষ কথা বলেন। দিদি যদি ওই বৈঠক থেকে কেষ্টদার পাশে থাকার বার্তা দেন, তা হলে ধরে নিতে হবে সব আগের মতোই আছে। তবে অভিষেক কী বলেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। আর দিদি এবং অভিষেক, দু’জনই যদি কেষ্টদার পাশে দাঁড়ান, তা হলে কোনও কথাই নেই।’’

বৈঠকে বীরভূম বা অনুব্রত নিয়ে আলাদা করে মমতা কিংবা অভিষেক কিছু বলবেন কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এক জেলা নেতার কথায়, ‘‘রাজ্যের হাজার হাজার নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের সভায় বীরভূম বাড়তি গুরুত্ব পাবে, এমন ভাবাও ঠিক নয়।’’
অনুব্রত প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করেননি তৃণমূলের বীরভূম জেলা কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী। তিনি শুধু বলেন, ‘‘দলীয় নির্দেশ মতো কাজ চলছে। যাঁদের যেতে বলা হয়েছে, তাঁদের তালিকা তৈরি হচ্ছে। জেলা থেকে কত জন যাচ্ছেন, সেই তালিকা চলে যাবে যথাস্থানে। বৈঠক শুরু হবে সকাল ১১টায়। তার আগে সকলকে পৌঁছতে হবে। প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে সে ভাবেই।’’

লোকসভা নির্বাচনেও অনুব্রত জেলায় থাকবেন না বলে ধরেই নিয়েছেন নেতা-কর্মীরা।

এক নেতার কথায়, ‘‘লোকসভা ভোট পরিচালনার জন্য যে দক্ষতা প্রয়োজন তা কেষ্টদা ছাড়া এই জেলার আর কারও আছে কিনা, তা নিয়ে দলেই জল্পনা রয়েছে। কোর কমিটি শুধু পঞ্চায়েত ভোট পরিচালনা করেছে। লোকসভা বা বিধানসভা ভোট পরিচালনার পরীক্ষায় তারা এখনও বসেনি।’’ নেতাজি ইন্দোরের বৈঠকে সব জেলার দলীয় সাংসদ, বিধায়ক, পুর-প্রতিনিধি, জেলা পরিষদের সদস্য, ব্লক সভাপতি, শাখা সংগঠনের সভাপতি, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও পঞ্চায়েত প্রধানদের হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বীরভূম থেকে ৩০০ জন হাজির থাকবেন।

জেলা নেতারা মনে করছেন, ওই বৈঠক থেকেই লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে নেমে পড়ার ডাক দেবেন নেতৃত্ব। ২৩ নভেম্বরই বৈঠকে বসার কথা কোর কমিটির।

যদিও সেই বৈঠক হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে দলে। বিকাশ বলেন, ‘‘নেতাজি ইন্ডোরে সভা ১১টায়। তার পরে আমাদের বসতে কোনও অসুবিধা নেই।’’ তৃণমূল সূত্রে খবর, সাংসদ শতাব্দী রায় ২৫ নভেম্বরের আগে জেলায় আসতে পারবেন না বলে দলকে
জানিয়ে দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন