এজেন্টের কাছ থেকে ভিসা আনতে গিয়ে অপহৃত হয়ে দু’সপ্তাহের বেশি বন্দি ছিলেন নেপালের এক যুবক। শুক্রবার বীরভূমের রামপুরহাট থানার কাষ্টগড়া গ্রাম থেকে অনিল নিরৌলা নামে ওই অপহৃত যুবককে উদ্ধার করলেন লালবাজারের গুন্ডা-দমন শাখার গোয়েন্দারা। অনিলের সঙ্গে বন্দি ছিলেন কিশোর তিমাল সিংহ নামে তাঁর এক অসমিয়া বন্ধুও। তবে, কিশোরের পরিবার আগেই দেড় লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়েছিল তাঁকে।
এ দিন অনিল জানান, ম্যানেজমেন্ট পাশ করে তিনি ইরাকের কুর্দিস্তান এলাকার শোনেমালিয়া এলাকায় কাজ করতে গিয়েছিলেন। সেখানেই মহিদুল শেখ নামে মুর্শিদাবাদের এক যুবকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। কিছু দিন আগেই অনিল বাড়ি ফিরে এসেছিলেন। অনিলের দাবি, “দিন পঁচিশ আগে মইদুল ইরাক যাওয়ার ভিসা দেওয়ার জন্য সাঁইথিয়ায় ডাকে। ভিসা দেওয়ার পরে আমার কাছে ২৫ লক্ষ টাকা দাবি করে। আমি তখন মইদুলকে এক লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম। তার পরে ভিসার কাগজপত্র ঠিকঠাক আছে কিনা খতিয়ে দেখছিলাম।” ওই সময় মইদুল তাঁকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে জোর করে আটক করে বলে তাঁর অভিযোগ।
লালবাজার সূত্রের খবর, নেপাল থেকে বিদেশ মন্ত্রকের মাধ্যমে কলকাতায় নেপাল দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন অনিলের মা ইন্দিরাদেবী নিরৌলা। বৃহস্পতিবার তিনি লালবাজারে এসে অনিলের অপহরণ হওয়ার কথা জানান। এর পরেই আলিপুর থানায় অনিলের অপহরণের অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্তভার নেয় লালবাজারের গুন্ডা-দমন শাখা। বৃহস্পতিবারই তদন্তকারীদের ছ’জনের একটি দল অনিলের খোঁজে বীরভূম রওনা দেয়। এ দিন সকালে কাষ্টগড়ার বটতলা পাড়ায় পিস্তাক শেখ নামে এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে অনিলকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার করা হয় পিস্তাকের ছেলে নয়ন শেখকে।
এ দিন এক আত্মীয়ের মাধ্যমে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে মইদুল বলেন, “আমি এখন বড়ঞা থানায় আছি। পরে সব কথা বলব।” তাঁর দাবি, “ইরাকে কাজের সূত্রে ওই নেপালি যুবকের সঙ্গে আমার পরিচয়। ভিসার জন্য অনিলের কাছে ২৪ লক্ষ টাকা পাব। ওকে অপহরণ করা হয়নি।” মইদুল বলেন, “ওই যুবকের পরিবারের সদস্যেরা সাঁইথিয়ায় এসেছিল। কিন্তু, ওঁরা আমার কাছ থেকে ভিসার কাগজপত্র নেওয়ার পরে এখনও টাকা দেননি।” এর পরেই ফোন কেটে দেয় মইদুল। পরে যোগাযোগ করা হলেও তাঁর মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়।
মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানার হরিবাটি গ্রামের বাসিন্দা মইদুল। সেখানে তল্লাশি করে এ দিন মুর্শিদাবাদ পুলিশ আটক করে মইদুলকে। প্রাথমিক তদন্তের পর গোয়েন্দারা জানতে পারেন, মইদুলের সঙ্গে তাঁর ছোট ভাই আলি নুরও এই অপহরণের সঙ্গে জড়িত। নুরের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।