সামনেই পুজো, ঈদ্। অথচ প্রায় ৯ মাস যাবত্ ১০০ দিন কাজের প্রকল্পের টাকা শ্রমিকরা পাচ্ছেন না। প্রাপ্য মজুরি দেওয়ার দাবিতে শেষে পঞ্চায়েত ভবনের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিলেন শ্রমিকরা।
শুক্রবার মুরারই ২ পঞ্চায়েত সমিতির পাইকর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। এ দিন দুপুর দেড়টার পরে পঞ্চায়েতের মূল দরজায় তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। এর জেরে পঞ্চায়েতের ভিতরে প্রধান, উপপ্রধান, দু’জন পঞ্চায়েত সদস্য পঞ্চায়েত ভবনে আটকে পড়েন। তাঁদের সঙ্গেই আটকে পড়েন পঞ্চায়েতের নির্বাহী সহায়ক, পঞ্চায়েত সচিব-সহ দু’জন নির্মাণ সহায়ক, দু’জন গ্রাম পঞ্চায়েত কর্মী। আড়াই ঘণ্টা ধরে তালাবন্দি অবস্থায় থাকার পর পঞ্চায়েত কর্মীরা ব্লকের যুগ্ম বিডিও-কে ঘটনাটি জানান। বকেয়া মজুরির টাকা দেওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস মিললে আন্দোলনকারী শ্রমিকরা পঞ্চায়েত ভবনের তালা খুলে দেন।
পাইকর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের পাইকর, কাশিমনগর, কুতুবপুর, মীরপুর গ্রামের প্রায় ৩০০ জন শ্রমিক তাঁদের প্রাপ্য মজুরির দাবিতে পঞ্চায়েত ভবনে জমায়েত করেছিলেন। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০০ দিন প্রকল্পে পাইকর ১ পঞ্চায়েতে ২০১৩-১৪ আর্থিক বছরে ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার কাজ হয়েছিল। তার মধ্যে এখনও পর্যন্ত ১৪ লক্ষ টাকা শ্রমিকদের মজুরি বাবদ পাওনা বকেয়া আছে। এ ছাড়া ২০১৪-১৫ আর্থিক বছরে ৩৫,০০০ শ্রমদিবসের প্রায় ৫৫ লক্ষ টাকা শ্রমিকরা এখনও পাননি। মোট ৬৯ লক্ষ টাকা পাইকর ১ পঞ্চায়েতে শ্রমিকরা মজুরি বাবদ পাবেন বলে সশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের সচিব প্রসাদ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন।
পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কংগ্রেসের রফিকুল হক বলেন, “পুকুর সংস্কার, নিকাশিনালা সংস্কার, ভুমি সংস্কারের মতো শ্রম নির্ভর বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ হয়েছে। কাজের জন্য প্রশাসন চাপ দিচ্ছে, ধমক দিয়ে কাজের মাস্টার রোল জমা দিতে বলছে, অন্য দিকে শ্রমিকদের মজুরির টাকা সময়মতো দিচ্ছে না। উভয় সঙ্কটে পড়েছি।” পাইকর ১ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ফরওয়ার্ড ব্লকের আদরি রবিদাস বলেন, “শ্রমিকদের প্রাপ্য মজুরি দেওয়ার জন্য আমরা বিডিওকে একাধিক বার বলেছি। কিন্তু তারা জানাচ্ছে, টাকা না আসায় শ্রমিকদের প্রাপ্য টাকা দিতে পারছে না। আমরা কী করব?”
জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী বলেন, “১০০ দিন প্রকল্পের টাকার জন্য আমরা ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সেখান থেকে টাকা পাওয়া গেলে আমরা পঞ্চায়েতকে দিতে পারব।”
অন্য দিকে, ন’মাস ধরে মজুরি না পেয়ে কাশিমনগর গ্রামের শ্রমিক জসিমউদ্দিন সেখ, মীরপুর গ্রামের শ্রমিক মনিরুল ইসলাম, পাইকর গ্রামের রজিবুল সেখরা জানিয়েছেন, “খুশির ঈদ্ গেল, এ বার কুরবানির ঈদ্ আসছে। মাসের পর মাস কেটে গেল, অথচ শ্রমিকদের নায্য টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রেই প্রশাসনের আধিকারিকদের যত সমস্যা। এ নিয়ে কেন টালবাহানা চলছে?” তাঁরা জানান, নিতান্ত বাধ্য হয়ে এ দিন তাঁরা পঞ্চায়েত ভবনের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। পরে প্রশাসন শীঘ্রই টাকা দেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যে মজুরির টাকা না পাওয়া গেলে তাঁরা ফের আন্দোলনে নামবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
অটো ছিনতাই। যাত্রী সেজে চালককে মারধর করে অটো ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রামপুরহাট-সাঁইথিয়া রাস্তার উপর রামপুরহাট থানার বড়শাল উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কাছে ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। অটোর মালিক রামপুরহাট শহরের বাসিন্দা গোবিন্দ প্রামাণিকের অভিযোগ, “রাত ১২টা নাগাদ তারাপীঠ থেকে ছ’জন যাত্রী নিয়ে রামপুরহাট আসছিলাম। পথে তাদের মধ্যে একজন অটো থামোতে বলে। প্রথমে আমার চালক রাজি হয়নি। পরে ওই যাত্রীরা জোর করে তাঁকে গাড়ি থামাতে বাধ্য করে। ঠিক সেই সময়েই অন্য একটি গাড়ি আসে। তিন জন সেই গাড়ি থেকে নেমে অটোচালকের হাত-পা বেঁধে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে মল্লারপুর-সাঁইথিয়া রাস্তার উপর ময়ূরেশ্বর থানার প্রচন্দপুর গ্রামের কাছে ধান জমিতে ফেলে দিয়ে চলে যায়।” তিনি জানান, ভোরের দিকে ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় এক ভ্যানচালক অটোচালককে দেখতে পেয়ে তাঁর বাঁধন খুলে দেন। ওই ঘটনায় বিকেলে তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন।