এখনও অধরা বিজেপি-র উপরে হামলায় অভিযুক্তেরা

বিজেপির সন্ত্রাস বিরোধী সভায় যোগ দিতে আসা কর্মী-সমর্থকদের মারধর এবং তাঁদের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় থানায় অভিযোগ জানাল বিজেপি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনন্দ রায়ের সঙ্গে দেখা করে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলা সভাপতি দুধকুমার মণ্ডল বলেন, “জেলাজুড়ে বহু কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সিউড়ি ও বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি দু’ জনকে বর্ধমান ও কলকাতা নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” তিনি জানান, “পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থানে বসব।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৪ ০০:৩৬
Share:

বিজেপির সন্ত্রাস বিরোধী সভায় যোগ দিতে আসা কর্মী-সমর্থকদের মারধর এবং তাঁদের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় থানায় অভিযোগ জানাল বিজেপি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনন্দ রায়ের সঙ্গে দেখা করে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলা সভাপতি দুধকুমার মণ্ডল বলেন, “জেলাজুড়ে বহু কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সিউড়ি ও বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি দু’ জনকে বর্ধমান ও কলকাতা নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” তিনি জানান, “পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থানে বসব।”

Advertisement

শুক্রবারই ফের দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ ওঠে। যুব মোর্চার ময়ূরেশ্বর ২ ব্লক সভাপতি চন্দন মণ্ডলের অভিযোগ, “বোলপুরের সভায় যাওয়ার অপরাধে শুক্রবার কবি বাগদি নামে মিত্রপলশার এক বাসিন্দার বাড়িতে গিয়ে তৃণমূলের লোকেরা গালিগালাজ করে। তাঁর বাবা-মা বেরিয়ে লাঠি, রড দিয়ে মারধর করা হয়। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।” থানায় অভিযোগ হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

বিজেপির দাবি, অভিযুক্ত শাসক দল তৃণমূলের নেতা কর্মী এবং তাঁদের আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে, জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, বুধবার বোলপুরের ডাকবাংলো মাঠে বিজেপির সভায় যোগ দিতে আসা দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মারধর, তাঁদের বাসে এবং গাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠে শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার বিজেপি জেলা কমিটির অন্যতম সাধারন সম্পাদক তথা দলের ইলামবাজার ব্লক পর্যবেক্ষক চিত্ত রঞ্জন সিংহ জানান, ইলামবাজার ব্লকের পাড়ুই থানার মঙ্গলডিহি গ্রামে বুধবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ সভায় যাওয়ার গাড়ির জন্য অপেক্ষারত দলীয় শতাধিক কর্মী-সমর্থকদের পরিকল্পিত ভাবে আক্রমণ করে তৃণমূল। শাসকদলের স্থানীয় নেতৃত্ব এবং তাঁদের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা লাঠি, রড়, শাবল নিয়ে হামলা চালায়। তিনি বলেন, “ওই ঘটনায় আমাদের একাধিক কর্মী- সমর্থক আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বিজেপি কর্মী নরেশ বাগদীকে গুরুতর জখম অবস্থায়ে সিউড়ি সদর হাসপাতালে বুধবার দুপুরেই ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনায় আমরা পাড়ুই থানায় অভিযোগ করেছি।”

Advertisement

এ দিকে দলীয় কর্মী নরেশ বাগদি আহতের খবর পেয়ে এ দিন বিকেলে সিউড়ি সদর হাসপাতালে তাঁকে দেখতে যান বিজেপির বীরভূম সভাপতি দুধকুমার মণ্ডল। নরেশবাবুর বাঁ হাতের চোট গুরুতর হওয়ায়, তাঁকে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। এ দিন সিউড়ি সদর হাসপাতালের বেডে-এ শুয়ে, বিজেপি কর্মী নরেশ বাগদী বলেন, “আমরা মঙ্গলডিহির বটতলা বাসস্ট্যান্ডে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। এলাকার তৃণমূলের আশ্রিত দুষ্কৃতী শেখ মাজুন ও শেখ নুরাইয়ের নেতৃত্বে শতাধিক তৃণমূল নেতা কর্মী এবং দুষ্কৃতীরা পরিকল্পিত ভাবে লাঠি, রড, শাবল দিয়ে আক্রমণ করে।”

এদিকে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে বুধবার ভর্তি পাঁচ বিজেপি সমর্থকের মধ্যে এক জনের মাথার চোট গুরুতর। ব্লক সভাপতি উজ্বল মজুমদারের নেতৃত্বে এলাকার বিজেপি-কর্মী সমর্থকরা এ দিন মহকুমা হাসপাতালে গিয়ে দেখা করেন তাঁদের সঙ্গে। উজ্বলবাবু বলেন, “চিকিৎসকদের পরামর্শে একজনকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা চলছে।” দলের জেলার অন্যতম সহ সভাপতি দিলিপ ঘোষ বলেন, “সর্পলেহনা থেকে শতাধিক কর্মী সমর্থক আমাদের সভায় যোগ দিতে আসার খবর পেয়ে তৃণমূল আক্রমণ ওদের করে। লাঠির ঘায়ে জখম হন আমাদের পাঁচ জন। বুধবারই তাঁদেরকে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।” আহতদের মধ্যে রয়েছেন পাড়ুই থানার শেখ সামাদ। তাঁর হাত ভেঙেছে। বোলপুর থানার কেউদহ গ্রামের বুদ্ধদেব বাগদীর দুই পা জখম। রমাপ্রসাদ বাগদীর ডান হাত ভাঙা গিয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, খোকন মাড্ডি নামে এক ব্যক্তির মাথায় গুরুতর চোট রয়েছে। তাঁকে বর্ধমান নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

বিজেপির অভিযোগ, এলাকার তৃণমূল নেতা মহাদেব রায়ের নেতৃত্বে এই আক্রমণ সংগঠিত হয়েছে। এ দিন বোলপুর থানায় মহাদেব রায় সহ ৩৩ জন তৃণমূল নেতা কর্মী ও তাঁদের আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানায় বিজেপি নেতৃত্ব। অন্য দিকে খোকন মাড্ডির বাড়িতে ঢুকে তাঁর স্ত্রী দিদিমনি মাড্ডিকে হেনস্থা ও মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল নেতা কর্মী এবং তাঁদের আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। বোলপুরের এসডিপিও সূর্যপ্রতাপ যাদব বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শুরু হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন