আমানতকারীদের লগ্নি করা অর্থ ফেরত পেতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন একটি বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থার এজেন্টরা। বুধবার ওই এজেন্টরা পুরুলিয়ায় জেলাশাসকের কাযার্লয়ে এসে তাঁদের স্মারকলিপি জমা দেন।
এজেন্টরা জানিয়েছেন, এই সংস্থাটি ২০০৯ সালে পুরুলিয়ায় কাজ শুরু করে। পুরুলিয়া শহর, রঘুনাথপুর ও ঝালদায় সংস্থার শাখা অফিস খোলা হয়েছিল। আঞ্চলিক কাযার্লয় ছিল বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি। ওই সংস্থার এজেন্ট মলয় নন্দী, বিকাশ নন্দী, তৃপ্তি তিওয়ারি প্রমুখেরা বলেন, “সংস্থার কর্ণধারেরা আমাদের আমানত তুলতে বলেছিলেন। পুরুলিয়া ২ ব্লকে পুরুলিয়া-বাঁকুড়া সড়কের ধারে ভাংড়া মোড়ের কাছে একটি হাসপাতাল, দুর্গাপুরে আবাসন প্রকল্প, বাঁকুড়ায় বিএড কলেজ--এ রকম নানা প্রকল্পে সংস্থা লগ্নি করেছে বলে তাঁরা আমাদের জানিয়েছিলেন। তা ছাড়া, এখানে যে হাসপাতাল গড়ে উঠছে, তা আমরা দেখেওছিলাম। তাই সংস্থা কর্তৃপক্ষের কথায় বিশ্বাস করে আমানত সংগ্রহের কাজ শুরু করেছিলাম।”
এজেন্টরা জানান, মাসিক সঞ্চয় প্রকল্পে এক লক্ষ টাকা রাখলে মাস ১১২৫ টাকা করে সুদ মিলবে এবং পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ দেওয়া হবে বলে আমানতকারীদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল সংস্থার তরফে। স্থায়ী আমানত প্রকল্পে সাড়ে পাঁচ বছের টাকা দ্বিগুণ, আর এক হাজার টাকা করে মাসে সঞ্চয় করলে তিন বছরের মেয়াদ শেষে ৫২ হাজার টাকা দেওয়া হবে বলেও কর্ণধারেরা এজেন্টদের জানিয়েছিলেন। ২০০৯ থেকে শুরু করে ২০১৩ সালের মার্চ অবধি এই সংস্থা শুধু পুরুলিয়া জেলা থেকেই অন্তত ১৭ কোটি টাকা তুলেছে বলে প্রশাসনকে জানিয়েছেন এজেন্টরা। কিন্তু, এর পরেই সারদা-কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসে। সেই সঙ্গে রাজ্যে পরের পর অর্থলগ্নি সংস্থার ঝাঁপ বন্ধ হতে শুরু করে। এজেন্টদের ক্ষোভ, “পুজোর আগে অবধি কর্ণধারেরা আমাদের আশ্বা দিয়েছিলেন, তাঁরা আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিয়ে দেবেন। কিন্তু, পুজোর পরে অনেক চেষ্টা করেও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর, যিনি কলকাতার বাসিন্দা, তাঁর মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে দেখা যাচ্ছে স্যুইচ অফ।” এজেন্টরা জানান, গঙ্গাজলঘাঁটির অফিসে দু’জন ডিরেক্টর ছিলেন। তাঁদের মোবাইলও বন্ধ। এ দিকে, টাকা ফের চেয়ে আমানকারীরা তাঁদের উপরে চাপ সৃষ্টি করছেন। নিরুপায় হয়ে এজেন্টরা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন।
পুরুলিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সবুজবরণ সরকার বলেন, “এজেন্টদের স্মারকলিপি সংশ্লিষ্ট সংস্থার কাছে পাঠিয়ে টাকা ফেরত দিতে বলব। বিষয়টি পুলিশকেও জানানো হবে।”