মোদী-দেব টক্করটা হচ্ছে। কিন্তু, মোদী-মিঠুন আর হল না!
রবিবার সকালে আসানসোল শহরে বিজেপি-র তারকা প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়র সমর্থনে সভা করবেন নরেন্দ্র মোদী। তার পাল্টা হিসাবে বিকেলেই আসানসোল লাগোয়া জামুড়িয়ার নিঘায় তৃণমূল পথে নামাচ্ছে তাদের দলের তারকা-প্রার্থী দেব ওরফে দীপক অধিকারীকে। আসানসোলের পরেই রবিবার বাঁকুড়ায় সভা করবেন মোদী। সেই সভার ভিড় কমাতে একই দিনে মিঠুন চক্রবর্তীকে দিয়ে বাঁকুড়ায় সভা করানোর মরিয়া চেষ্টা করেছিলেন জেলা তৃণমূলের নেতারা। কিন্তু, জমাটি লড়াইটা আর হল না। সভা করার ‘উপযুক্ত’ জায়গা না পাওয়ায় মিঠুনকে দিয়ে সে দিন সভা করাতে পারছে না তৃণমূল।
তার পরিবর্তে সোমবার বাঁকুড়া শহরে মিঠুনের সভা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা জেলা তৃণমূলের কো-চেয়ারম্যান অরূপ চক্রবর্তী। শুক্রবার তিনি বলেন, “রবিবার শহরে সভা করার মতো জায়গা পেলাম না। তাই পরের দিন মিঠুনকে নিয়ে আমরা সভা করব।”
রবিবার বাঁকুড়ায় দলীয় প্রার্থী সুভাষ সরকারের সমর্থনে প্রচার করতে আসছেন বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থি নরেন্দ্র মোদী। পুলিশ সূত্রের খবর, বাঁকুড়া স্টেডিয়ামে তাঁর জন্য হেলিপ্যাড তৈরি করা হয়েছে। মোদী সভা করবেন তামলিবাঁধ স্টেডিয়ামে। ফলে, শহরের দু’টি বড় মাঠই সে দিন ফাঁকা পাওয়া যাচ্ছে না। আর যে ক’টি তুলনায় ছোট মাঠ রয়েছে, তৃণমূলের দাবি, মিঠুনের মতো তারকার সভা করার পক্ষে তা নিতান্তই ছোট।
মোদী সভা করতে আসছেন, এটা জানার পর থেকে সে দিনই বাঁকুড়া শহরে দলের রাজ্যসভার সাংসদ মিঠুনকে দিয়ে পাল্টা সভা করার কথা ভেবেছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের এক জেলা নেতার কথায়, “মোদীর সভার সময়েই আমরা মিঠুনের সভা করার কথা ভেবেছিলাম। মোদীর সভায় যাতে বেশি ভিড় না হয়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য ছিল।” মিঠুনের সভা করার জন্য দলের শীর্ষনেতৃত্বের কাছেও জেলার তরফে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। সভা করার মতো মাঠ খুঁজতে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করেন জেলা তৃণমূলের নেতারা। পুলিশের একটি সূত্রে জানাচ্ছে, বাঁকুড়ায় আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ান ওই সভার আগে চলে আসছে। কিন্তু, বাঁকুড়ার মতো ঘিঞ্জি শহরে মোদী ও মিঠুনের মতো সেলিব্রিটি একই দিনে সভা করলে যে পরিমাণ ভিড় হবে, তা নিয়ন্ত্রণ করা চাট্টিখানি ব্যাপার নয়। শহর কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকবে। বড় কোনও বিপর্যয়েরও ঝুঁকি থাকত। তাই জেলা পুলিশও তৃণমূলকে ওই দিনই মিঠুনের সভা না করার জন্য বুঝিয়েছিল। সেই সঙ্গে ঠিকমতো মাঠ না পাওয়ায় জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব শেষ পর্যন্ত মোদীকে চ্যালেঞ্জ জানাতে মিঠুনকে আনার পরিকল্পনা বাতিল করেন।
অরূপবাবুর অবশ্য দাবি, “মোদী কোনও ফ্যাক্টর নন। বাঁকুড়ার মানুষ মিঠুনকে চাইছেন। তাই সভার আয়োজন করা হচ্ছে। তবে দেখে নেবেন মোদীর সভার থেকে অনেক বেশি ভিড় হবে মিঠুনের সভায়।” যা শুনে সুভাষ সরকারের মন্তব্য, “তা-ই যদি হবে, তা হলে রবিবারই মিঠুনকে দিয়ে সভা করানোর জন্য কেন পাগল হয়ে গিয়েছিলেন তৃণমূলের নেতারা? আসলে ওরা ভয় পেয়েছে।” বাঁকুড়ায় মোদী এলে ভোট হারানোর আশঙ্কা করছে সিপিএমও। দলের জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্র মনে করছেন, “বাঁকুড়ায় মোদী এলে বিজেপি-র ভোট বাড়বে। তাতে তৃণমূল ও সিপিএমের উভয়েরই ক্ষতি হবে।”