জঙ্গলমহলে পিচ রাস্তায় মোরাম দিয়ে মেরামতি

ছিল পিচের রাস্তা। এখন আর নেই। পিচ উঠে বোল্ডার, পাথর কুচি সব উধাও হয়ে গিয়েছে। রাস্তা জুড়ে ছোট-বড় গর্ত। সেই রাস্তা এখন সংস্কারের নামে মোরামের রাস্তা হয়ে গিয়েছে। সারেঙ্গা ব্লকের ব্রাহ্মণডিহা মোড় থেকে রামগড় যাওয়ার রাস্তার এমনই বেহাল দশা। একই অবস্থা কার্গিল মোড় থেকে মাজুরিয়া যাওয়ার রাস্তার। বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের অন্যতম প্রধান এই রাস্তাগুলি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সারেঙ্গা শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৪ ০১:২১
Share:

ব্রাহ্মণডিহার এই রাস্তার সংস্কার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী। ছবি: দেবব্রত দাস

ছিল পিচের রাস্তা। এখন আর নেই। পিচ উঠে বোল্ডার, পাথর কুচি সব উধাও হয়ে গিয়েছে। রাস্তা জুড়ে ছোট-বড় গর্ত। সেই রাস্তা এখন সংস্কারের নামে মোরামের রাস্তা হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

সারেঙ্গা ব্লকের ব্রাহ্মণডিহা মোড় থেকে রামগড় যাওয়ার রাস্তার এমনই বেহাল দশা। একই অবস্থা কার্গিল মোড় থেকে মাজুরিয়া যাওয়ার রাস্তার। বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের অন্যতম প্রধান এই রাস্তাগুলি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা। অবিলম্বে তাঁরা ওই রাস্তা সংস্কারের দাবিতে সরব হয়েছেন। সারেঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ধীরেন্দ্রনাথ ঘোষও রাস্তাগুলির বেহাল দশার কথা মেনে নিয়েছেন। তাঁর দাবি, “মাস কয়েক আগেই ওই দু’টি রাস্তায় বোল্ডার, মোরাম ফেলে আংশিক মেরামত করা হয়েছিল। কিন্তু পাথর ও বালিবোঝাই ভারী গাড়ি যাতায়াতের জন্যই কিছু কিছু এলাকায় রাস্তা ক্রমশ ভেঙে গিয়েছে।”

সারেঙ্গা থেকে ব্রাহ্মণডিহা মোড়, কার্গিল মোড় হয়ে রামগড় যাওয়ার সোজা রাস্তা এটাই। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার লালগড় সীমানা ঘেঁষা বাঁকুড়া জেলার ব্রাহ্মণডিহা, কার্গিল মোড়, মাকড়কোল প্রভৃতি এলাকা জুড়ে থাকা এই রাস্তা দুই জেলার বাসিন্দাদের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ।

Advertisement

একই ভাবে কার্গিল মোড় থেকে বেজডাঙা, পেঁচাড়া, বেলেপাল হয়ে মাজুরিয়া পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিমি রাস্তাও খানাখন্দে ভরে উঠেছে। বাসিন্দারা জানান, প্রায় একবছর ধরে ওই রাস্তাগুলির খারাপ অবস্থা। সারেঙ্গা ব্লকের গড়গড়িয়া পঞ্চায়েতের ব্রাহ্মণডিহা, কার্গিল মোড়, মাকড়কোল, বেজডাঙা, বাইশপাতরা, পেঁচেড়া, বেলেপাল, মাজুরিয়া এবং লালগড় ব্লকের মুড়ার, লোধাশুলি, শ্যামচরণডাঙা-সহ আশেপাশের ২০-২৫টি গ্রামের প্রায় ৩০ হাজারের বেশি মানুষ প্রতিদিন নানা প্রয়োজনে এই রাস্তার উপর দিয়ে যাতায়াত করেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তার অনেক জায়গায় পিচ, বোল্ডার উঠে গিয়েছে। বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটির সংস্কার না করায় খানাখন্দ বড় হয়ে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।

রাস্তার উপর দিয়ে গাড়ি গেলেই করে লাল মোরামের ধুলো উড়ছে। তবু রাস্তা সংস্কারে কোনও উদ্যোগ নেই প্রশাসনের। পেঁচেড়া গ্রামের বাসিন্দা তপন প্রতিহার, শ্যামচরণডাঙা গ্রামের সহদেব মুর্মু বলেন, “এই রাস্তায় আগে রামগড়, লালগড় যাওয়ার ৮-১০টি বাস চলত। গত বর্ষার পর থেকে রাস্তার পিচ, বোল্ডার সব উঠে গিয়েছে। রাস্তার এই বেহাল অবস্থার জন্য বাস চলাচল এখন কমে গিয়েছে। এখন সারাদিনে মাত্র চারটি বাস যাতায়াত করছে।’’

এলাকার ছাত্রছাত্রীদের ক্ষোভ, বাস চলাচল অনিয়মিত হয়ে পড়ায় কলেজ ও টিউশন পড়তে যেতে তাঁদের বেশ অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। এর ফলে পড়াশোনারও ক্ষতি হচ্ছে। বাসিন্দারা জানান, শুধু কলেজের জন্যই নয়, নানা প্রয়োজনে তাঁদের প্রায়শই ব্লক সদর সারেঙ্গায় যেতে হয়। আগের তুলনায় রাস্তার অবস্থা দিন দিন খারাপ হয়ে পড়ায় বাস কমে যাওয়ায় তাই সবারই সমস্যা বেড়েছে। ওই রাস্তায় যাঁরা গাড়ি চালান তাঁদের ক্ষোভ, রাস্তার বেহাল দশার জন্য প্রায়দিনই গাড়ির যন্ত্রাংশ ভাঙছে। সময় মতো গন্তব্যস্থলে পৌঁছনো যাচ্ছে না। এ নিয়ে যাত্রীরাও ক্ষোভ দেখান বাসের কর্মীদের।

সারেঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির আশ্বাস, “ব্রাহ্মণডিহা থেকে কার্গিল মোড় পর্যন্ত রাস্তাটি সম্পূর্ণ ঢালাই করার পরিকল্পনা রয়েছে। কার্গিল মোড় থেকে মাজুরিয়া পর্যন্ত রাস্তাটিও পিচের করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নির্বাচন পর্ব মিটলেই ওই দু’টি রাস্তার পূর্ণাঙ্গ সংস্কার করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন