ঝালদায় তৃণমূলের হাতে ঘেরাও বিডিও

পঞ্চায়েতে তৃণমূলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ও উপপ্রধানকে দায়িত্ব দিতে গড়িমসি করছে ব্লক প্রশাসন। এই অভিযোগ তুলে বিডিওকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাল তৃণমূল। ঘটনাটি পুরুলিয়ার ঝালদা ২ ব্লকের চিতমু পঞ্চায়েতের। তাদের অস্থায়ী প্রধানকে দায়িত্ব দিচ্ছেন না বিডিও। এই অভিযোগে শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে প্রায় ৬ ঘণ্টা বিডিও অভিজিত্‌ সাহাকে ঘেরাও করেছিল স্থানীয় তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝালদা শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৩৮
Share:

পঞ্চায়েতে তৃণমূলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ও উপপ্রধানকে দায়িত্ব দিতে গড়িমসি করছে ব্লক প্রশাসন। এই অভিযোগ তুলে বিডিওকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাল তৃণমূল। ঘটনাটি পুরুলিয়ার ঝালদা ২ ব্লকের চিতমু পঞ্চায়েতের। তাদের অস্থায়ী প্রধানকে দায়িত্ব দিচ্ছেন না বিডিও। এই অভিযোগে শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে প্রায় ৬ ঘণ্টা বিডিও অভিজিত্‌ সাহাকে ঘেরাও করেছিল স্থানীয় তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। পরে প্রশাসনের উপর মহল থেকে বিষয়টি হস্তক্ষেপ করায় ঘেরাও উঠে যায়। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ২১ নভেম্বর ব্লক কার্যালয়ে চিতমু পঞ্চায়েতের সদস্যদের নিয়ে প্রধান নির্বাচনের সভা হবে। এর পরেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

Advertisement

নির্বাচনে চিতমু পঞ্চায়েতের ১৩টি আসনের মধ্যে তৃণমূল জিতেছিল ছ’টি আসনে। বামফ্রন্ট পেয়েছিল পাঁচটি ও কংগ্রেসের দখলে গিয়েছিল দু’টি আসন। বামেদের সমর্থন নিয়ে ওই পঞ্চায়েতে প্রধান হয়েছিলেন কংগ্রেসর জটাল কুমার। কিন্তু পরে বামেদের দুই সদস্য তৃণমূলে যোগ দেয়। পঞ্চায়েতের আটটি আসন তাদের হওয়ায় কংগ্রেসের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে তৃণমূল। অনাস্থা গৃহীত হলেও তৃণমূল তাদের সদস্যদের ভয় দেখিয়ে নিজেদের দিকে টেনেছে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিল বামেরা। সেই মামলাতে আদালত অনাস্থার উপরে স্থিতাবস্থা জারি করেছিল এবং মামলাটি এখনও হাইকোর্টে বিচারধীন রয়েছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পঞ্চায়েতে অনাস্থা ঘিরে মামলার জেরে পঞ্চায়েতের কাজকর্মে অচলাবস্থা তৈরি হয়। সে জন্য দিন পঁচিশ আগে ব্লক কার্যালয়ে চিতমু পঞ্চায়েতে অস্থায়ী প্রধান নির্বাচনের জন্য সভা হয়। কিন্তু সেই সভার বৈধতা নিয়ে বাম ও কংগ্রেস প্রশ্ন তোলায় সভাতে প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচন করা হলেও সভাটি পরে বাতিল করা হয়। কিন্তু তৃণমূলের দাবি, ওই সভার পরে ব্লক প্রশাসন মৌখিকভাবে জানিয়েছিল, তাদের দলের কিষানচন্দ্র মাহাতো প্রধান এবং সুমিত্রা সোরেন উপপ্রধান হয়েছেন। তৃণমূলের স্থানীয় নেতা সুনীল কুমার এ দিন বলেন, “প্রশাসন এখনও আমাদের অস্থায়ী প্রধান ও উপপ্রধানকে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেওয়াতে পঞ্চায়েত অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। উন্নয়নমূলক সমস্ত কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। ফলে আমরা দাবি করেছি পঁচিশ দিন আগের ওই সভাতে নির্বাচিত হওয়া আমাদের প্রধান ও উপপ্রধানকে দ্রুত দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে কাজকর্ম স্বাভাবিকভাবে শুরু করতে হবে” মামলাটির প্রসঙ্গে সুনীলবাবুর মন্তব্য, “হাইকোর্টের রায় সব সময়েই মাথা পেতে নেব। কিন্তু এখনও মামলাটি বিচারাধীন। তাই কোর্টেরই নির্দেশ রয়েছে পঞ্চায়েতের কাজকর্ম স্বাভাবিকভাবে করতে অস্থায়ী প্রধান নির্বাচন করার জন্য এবং সেই প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু প্রশাসন কিছু রাজনৈতিক দলের কথা শুনে আমাদের প্রধানকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিচ্ছেন না।”

Advertisement

এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ ব্লক কার্যালয়েই তৃণমূলের শ-দুয়েক কর্মী-সমর্থক ঢুকে বিডিওকে ঘেরাও করে। আটকে পড়েন যুগ্ম বিডিও। পরিস্থিত সামাল দিতে ব্লকে এসেছিলেন কোটশিলা থানার ওসি। বিডিও অভিজিত্‌বাবুর মোবাইল বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযাগ করা যায়নি। পুরুলিয়ার জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তী বলেন, “চিতমু পঞ্চায়েতে অস্থায়ী প্রধান নির্বাচনের দিনেই নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে কয়েকজন সদস্য আপত্তি তুলেছিলেন। সে জন্য আমরা ওই দিনের নির্বাচন স্থগিত রেখে বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টের সরকারি আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এই বিষয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ জানতে চেয়েছিলাম। সরকারি আইনজীবী সম্প্রতি জানিয়েছেন, ওই পঞ্চায়েতে অস্থায়ী প্রধান নির্বাচন করা যাবে। আমরা সেই নির্বাচন দ্রুত সম্পন্ন করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন