ট্রাকে আলু নাকি? হুড়ায় তল্লাশি পুলিশের।
ঝাড়খণ্ডমুখী আলু বোঝাই গাড়ি রুখতে পুলিশ পুরুলিয়া জেলা জুড়ে কড়া নজরদারি শুরু করলেও রবিবার পুরুলিয়ার বড়হাটে গিয়ে টাস্কফোর্সের সদস্যেরা দেখলেন আলু বিক্রি হচ্ছে সেই ২০ টাকা কেজিতেই।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলি বা অন্য জেলা থেকে ত্রিপল ঢাকা অবস্থায় ছোট-বড় যে কোনও ট্রাক, ম্যাটাডোর জেলায় ঢুকলেই রাস্তায় আটকে পুলিশ তল্লাশি করছে। পরীক্ষা করা হচ্ছে গাড়ির কাগজপত্রও। গাড়িতে আলু বোঝাই থাকলেই জানতে চাওয়া হচ্ছে সেই গাড়ি কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে কাগজপত্র পরীক্ষা করে যদি দেখা যায়, সেই গাড়ির আলু নিয়ে জেলারই কোনও এলাকায় যাওয়ার কথা, তখন সেই থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে এ ব্যাপারে খোঁজাখুঁজি করা হচ্ছে। নিশ্চিত হলে তারপরেই ছাড়া হচ্ছে গাড়ি।
আবার এমনও হচ্ছে এই জেলার কোনও ব্যবসায়ীর নাম করে আলু ভর্তি ট্রাক ঝাড়খণ্ডে পাঠানো হচ্ছে। পুলিশ ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে যখন জানতে পারছেন, তিনি আলু আনছেন না, তখন ওই গাড়ি ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “জেলায় আলু আনা হচ্ছে নিশ্চিত হলে তবেই গাড়ি ছাড়া হচ্ছে। না হলে যেখান থেকে ওই গাড়ি আলু তুলেছে, সেখানেই ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।” রবিবার সকাল থেকে বিকেল অবধি জেলার বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে এ রকম আটটি গাড়ি ফেরত পাঠানো হয়েছে। নিতুড়িয়া থেকে ৪টি, পাড়া থেকে ১টি, হুড়া থেকে ১টি ও পুঞ্চা থেকে ২টি গাড়ি ফেরত পাঠানো হয়েছে। তবে কোনও গাড়িকে কোথাও আটকে রাখা হচ্ছে না।
রবিবার পুরুলিয়ার বড়হাটে পরিদর্শনে টাস্কফোর্সের সদস্যেরা।—নিজস্ব চিত্র।
জেলা পাইকারী আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক প্রবীর সেন বলেন, “জেলায় আলুর সরবরাহে এখনও অবধি ঘাটতি নেই। পুলিশ আলুর গাড়ি নিয়ে জোর তল্লাশি শুরু করায় বাইরে থেকে আলু নিয়ে আসার সময় আগেভাগেই আমরা সেই গাড়ির নম্বর পুলিশকে দিয়ে দিচ্ছি। এতে সময়ও বাঁচছে।’’ তিনি জানান, এ দিন তাঁরা পাইকারি বাজারে আলু ১৬৫০-১৬৬০ টাকা কুইন্ট্যাল দরে বিক্রি করেছেন। তবুও এ দিন টাস্কফোর্সের সদস্যেরা পুরুলিয়া বড়হাটে পৌঁছে দেখেন, আলু বিক্রি হচ্ছে সেই ২০ টাকা দরেই। জেলা কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিক সুধীর মাঝি এ দিন নিজেও পরিদর্শনে ছিলেন।
তিনি বলেন, “আমাদের কাছে খবর ছিল যে আলু কোথাও কোথাও একটু বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। তাই আমরা বড়হাটে কত দামে আলু বিক্রি হচ্ছে তা দেখতে এসেছিলাম। এখানে তো আলু ২০ টাকাতে বিক্রি হচ্ছে। আবার জেলার কিছু বাজারে আলু ২২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলেও অভিযোগ পেয়েছি।” তিনি জানান, বস্তায় ৫০ কেজির আলু থাকার কথা থাকলেও অনেক সময় ওজনে কম থাকে। তাছাড়া বহনের খরচও রয়েছে। তবে এত সব সত্ত্বেও তাঁরা এ দিন বাজার ঘুরে ব্যবসায়ীদের আলুর বেশি দাম না নেওয়ার জন্য সতর্ক করছেন।
তা হলে ২০ কিংবা ২২ টাকাই কি আলুর সঠিক দাম? জবাব মেলেনি টাস্কফোর্সের সদস্যদের কাছ থেকে।