টাকা সুরক্ষিতই আছে, আশ্বাস ব্যাঙ্ক কর্তাদের

ব্যাঙ্ক বন্ধ। চাষিরা সঠিক সময়ে যেমন ঋণ পরিশোধ করেও ঋণ পাচ্ছেন না তেমনি কেউ মেয়ের বিয়ের জন্য সমিতিতে টাকা তুলতে এসে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন। কেউ আবার চিকিৎসার প্রয়োজনে সমিতি এসে টাকা না পেয়ে ঘুরে যাচ্ছেন। আমানতকারীদের চাহিদা মতো টাকা দিতে না পেরে বেসামাল অবস্থা সামাল দেওয়ার জন্য প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে নলহাটি থানার বুজুং সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির পরিচালন কমিটি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নলহাটি ও সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৪ ০০:৫১
Share:

ব্যাঙ্ক বন্ধ। চাষিরা সঠিক সময়ে যেমন ঋণ পরিশোধ করেও ঋণ পাচ্ছেন না তেমনি কেউ মেয়ের বিয়ের জন্য সমিতিতে টাকা তুলতে এসে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন। কেউ আবার চিকিৎসার প্রয়োজনে সমিতি এসে টাকা না পেয়ে ঘুরে যাচ্ছেন। আমানতকারীদের চাহিদা মতো টাকা দিতে না পেরে বেসামাল অবস্থা সামাল দেওয়ার জন্য প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে নলহাটি থানার বুজুং সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির পরিচালন কমিটি। তারা সোমবার রামপুরহাট মহকুমাশাসক, সংশ্লিষ্ট সমবায় উন্নয়ন পরিদর্শক, বিডিও, জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক ম্যানেজার (নলহাটি শাখা) এবং ব্যাঙ্কের মুখ্য নির্বাহী আধিকারিক ও সমবায় সমিতিগুলির সহকারী মুখ্য নিবন্ধকের কাছে আবেদন করেছে।

Advertisement

অন্য দিকে, কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের লেনদেন বন্ধে প্রভাব পড়েছে পশ্চিমবঙ্গ গ্রামীণ ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের মধ্যেও। এই ব্যাঙ্কও বন্ধ হয়ে যেতে পারে, গ্রাহকদের মধ্যে এমন আশঙ্কায় গ্রাহকদের মধ্যে টাকা তোলার হিড়িক পড়ে গিয়েছিল। গুজবকে ঘিরে এমন ঘটনা আটকাতে তৎপর হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ গ্রামীণ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। মাইকে প্রচার, পঞ্চায়েত সদস্যদের মাধ্যমে প্রচার চলছেই। এ ছাড়াও সাংবাদিক বৈঠকও শুরু করেছেন ব্যাঙ্কের কর্তারা। দিন কয়েক আগে বোলপুর এবং সোমবার সিউড়িতে এমনই সাংবাদিক বৈঠক করলেন তাঁরা। কর্তারা ফের স্পষ্ট করলেন, গ্রাহকদের টাকা সুরক্ষিতই রয়েছে।

বুজুং সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির ম্যানেজার ডালিম পাল বলেন, “১৬ মে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশে বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের নলহাটি শাখা থেকে সমিতি তার জমাকৃত টাকা ফেরত পাচ্ছে না। এর ফলে সমিতি তার অধীন আমানতকারীদের গচ্ছিত টাকা ফেরত দিতে পারছে না। সমিতির কর্মচারী ও পরিচালকমণ্ডলীদের উপর হামলা হচ্ছে। তাই প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি।” ডালিমবাবু জানান, ১৯৯৮ সালে ১৯ অক্টোবর বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে আমানত সংগ্রহ করার জন্য অনুমোদন মেলে এবং তখন থেকে মোট আমানত সংগ্রহের ৭০ শতাংশ টাকা বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে রাখা হয়। বাকি ৩০ শতাংশ টাকা বিভিন্ন ব্যবসায় সমিতি নিয়োগ করতে পারে। এখনও পর্যন্ত ৫,৩৬৬ জনের অ্যাকাউন্ট আছে বুজুং সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে। সমিতি থেকে কেবলমাত্র বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে স্থায়ী আমানত বাবদ ১ কোটি ৮৭ লক্ষ ১৯ হাজার ৭৮৮ টাকা জমা আছে এবং সেভিংস অ্যাকাউন্টে ওই সমিতির প্রায় ২ লক্ষ ১২ হাজারের বেশি টাকা একই ব্যাঙ্কে জমা আছে। টাকা না পেয়ে আমানতকারীরা বাড়িতে এসে হামলা করছে বলে ডালিমবাবুর অভিযোগ।

Advertisement

একই অবস্থা নলহাটি থানার নসিপুর কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে। ওই সমিতির ম্যানেজার সাধন মণ্ডল বলেন, “সমিতিতে ৪২০০ জনের অ্যাকাউন্ট আছে। মোট সাড়ে ৪ কোটি টাকা ফিক্সড আমানত এবং ৮ লক্ষ টাকা সেভিংস্ আমানত হিসেবে একমাত্র বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কে জমা করা আছে।” রামপুরহাট মহকুমাশাসক রত্নেশ্বর রায় বলেন, “আবেদনপত্র হাতে পেলে সংশ্লিষ্ট বিভাগের নজরে আনা হবে।” অন্য দিকে বীরভূম জেলা সমবায় সমিতিগুলির সহনিয়ামক সৌগত সেনগুপ্ত বলেন, “বিষয়টি এখন উচ্চ পর্যায়ে আলোচনাধীন। সেখান থেকে যে রকম নির্দেশ আসবে, আমরা সেই মতো কাজ করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন