ঠান্ডা বাড়ছে, জমে উঠছে খোয়াই

উত্তরের কনকনে হাওয়া যত বাড়ছে, জমে উঠছে খোয়াই বনের অন্য হাটও! বীরভূম জেলার অন্যতম আকর্ষণ জেলাজুড়ে ছড়িয়ে থাকা অরণ্য। বর্ষা ও শীত- এই দুটি ঋতুতেই জেলার জঙ্গলগুলি হয়ে ওঠে আরও মোহময়। শান্তিনিকেতন লাগোয়া যে সেচ ক্যানাল, তার দু’পাশেই রয়েছে জঙ্গল ও জলাশয়।

Advertisement

অরুণ মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:৫৮
Share:

খোয়াই হাটে বিকিকিনি।—নিজস্ব চিত্র।

উত্তরের কনকনে হাওয়া যত বাড়ছে, জমে উঠছে খোয়াই বনের অন্য হাটও!

Advertisement

বীরভূম জেলার অন্যতম আকর্ষণ জেলাজুড়ে ছড়িয়ে থাকা অরণ্য। বর্ষা ও শীত- এই দুটি ঋতুতেই জেলার জঙ্গলগুলি হয়ে ওঠে আরও মোহময়। শান্তিনিকেতন লাগোয়া যে সেচ ক্যানাল, তার দু’পাশেই রয়েছে জঙ্গল ও জলাশয়। রয়েছে একটি ডিয়ার পার্কও। শীত পড়তেই তাই এখানকার জঙ্গল হয়ে ওঠে পর্যটনের ক্ষেত্র। তবে পৌষ উত্‌সবের সময়েও পর্যটকদের কাছে বাড়তি আকর্ষণ, এই সোনাঝুরি বনের ভিতর খোয়াই হাট।

এখন যদিও সারা বছরই ভিড় জমে সোনাঝুরিতে। তবে, শীতকালে এই ভিড় উপচে পড়ে। পর্যটক থেকে স্কুল পড়ুয়া, বাউল শিল্পী থেকে বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রী-ভিড় করেন সকলেই। এঁদের মধ্যে সকলেই আসেন শীতের দিনে পর্যটনের মন নিয়ে।

Advertisement

এক পর্যটকের কথায়, “এক বন্ধুর ফেসবুক ওয়ালে এই হাটের ছবি দেখি। ফটোগ্রাফির শখ। এখানে জঙ্গলের মধ্য এত রঙিন মেলা দেখে ঘুরতে চলে এলাম। জঙ্গলের মধ্যে এমন হাটের পরিবেশ ভাবাই যায় না!”

সোনাঝুরি এলাকায় যে দুটি হাট বসে ফি সপ্তাহে, তার একটি ‘খোয়াই বনের অন্য হাট’। কলাভবনের প্রাক্তন ছাত্রী, প্রয়াত শ্যামলী খাস্তগিরের উদ্যোগে ওই হাটটি ১৪ বছর আগে ‘শনিবারের হাট’ বলে এলাকায় পরিচিতি পায়। বসতও শনিবার বিকেলে। তখন হাটটি শুরু করার উদ্দেশ্য ছিল, এলাকার মানুষ বিশেষ করে মহিলাদের নানান হস্তশিল্প, বাড়িতে করা খাবার বিক্রি করা। অনেকে নিজেদের উত্‌পাদিত সব্জি ওই হাটের মাধ্যমে বিক্রি করত। আস্তে আস্তে বিক্রি বাড়তে থাকে। এখন বছরের বিশেষ দিনেও হাট বসে। তবে রোজই কিছু বিক্রেতা বসেন সোনাঝুরি ঢোকার আগে। পৌষ উত্‌সবের সময়ও সেখানে দেখা গেল বিকিকিনির ছবি।

শনিবারের এই হাটে যে বাউল শিল্পীরা বসেন, তাঁদের একজন তরুণ খ্যাপ্যা। তিনি বলেন, “শুধু বাউল গান করে দুটো টাকা রোজগার নয়, এখানে গান গাওয়ার সঙ্গে নানা জায়গার দর্শক-শ্রোতাদের সঙ্গে পরিচয় হয়। বলতে পারেন যোগাযোগের একটা সেতু এই হাট। অনেকেই আছেন, গান-বাজনার সঙ্গে মেতে ওঠেন নিজেরাও। এতে হাটের মধ্যে একটা সাংগীতিক পরিবেশ তৈরি হয়।”

কেউ কেউ অবশ্য অধুনা হাটের পরিধি দেখে, ‘বাজার’ বলেন। কাঁথাস্টিচের শাড়ি থেকে সালোয়ার কামিজ, টপ, জ্যাকেট, পুঁথি, বনজ শিল্পের নানা অলঙ্কার সবই মিলে যায় এখানে। অনেক হস্তশিল্পের সামগ্রীর সঙ্গে লেমন গ্রাসের চা, পিঠে, ঢেঁকি ছাঁটা চাল নিয়ে বসেন।

হাটে নিয়মিত আসেন, তেমন বিক্রেতা শিউলি সূত্রধর, সোমা ঘোষ, চম্পা দস্তিদার, পিয়াল, সমরজিত্‌ প্রমুখর কথায়, “নিজে হাতে হাটের জন্য আমরা সামগ্রী বানাই। শীতকালে ভিড় একটু বেশি হয়। এবারও দিন দিন সেই ভিড় বাড়ছে। মানুষ এখানে এসে স্থানীয় জিনিষই খোঁজ করেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement