দুই পাড়ার ঝামেলাতেও জড়াল বিজেপি, তৃণমূল

দুই পাড়ার ঝামেলায় লাগল রাজনীতির রং। সোমবার রাতে বাঁকুড়া শহরে সেই ঝামেলার জেরে হওয়া সংঘর্ষে কয়েকজন জখম হন। দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনার জন্য একে-অন্যকে দোষারোপ করছে তৃণমূল ও বিজেপি। পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার রাতে বাঁকুড়া শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মাঠপাড়ার একটি ক্লাবে আইপিএল ফাইনাল দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন এলাকার কিছু যুবক। তাঁদের কয়েকজন ওই ক্লাবের মালাকারপাড়া লাগোয়া একটি শৌচাগারে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গেলে স্থানীয় কিছু মহিলা আপত্তি করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৪ ০১:৪৫
Share:

ভাঙচুরের পরে ক্লাবের হাল। সোমবার অভিজিৎ সিংহের তোলা ছবি।

দুই পাড়ার ঝামেলায় লাগল রাজনীতির রং। সোমবার রাতে বাঁকুড়া শহরে সেই ঝামেলার জেরে হওয়া সংঘর্ষে কয়েকজন জখম হন। দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনার জন্য একে-অন্যকে দোষারোপ করছে তৃণমূল ও বিজেপি।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার রাতে বাঁকুড়া শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মাঠপাড়ার একটি ক্লাবে আইপিএল ফাইনাল দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন এলাকার কিছু যুবক। তাঁদের কয়েকজন ওই ক্লাবের মালাকারপাড়া লাগোয়া একটি শৌচাগারে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গেলে স্থানীয় কিছু মহিলা আপত্তি করেন। আপত্তির কারণ, এলাকায় শৌচাগারের দুর্গন্ধ ছড়ানো। তা নিয়ে দু’পক্ষে বচসা বাধে। প্রাথমিক ভাবে দু’পক্ষকে নিরস্ত করেন এলাকার তৃণমূল নেতা তথা ওয়ার্ড উন্নয়ন কমিটির সম্পাদক অসিত আচার্য। কিন্তু মাঝরাতে দুই পাড়ার বাসিন্দাদের মধ্যে মারপিট বাধে। দু’পক্ষই রড, লাঠি নিয়ে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। ভাঙচুর করা হয় ক্লাবঘর এবং রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি গাড়িতে।

ঝামেলার খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে এলাকায় যান ডিএসপি (আইন-শৃঙ্খলা) বাপ্পাদিত্য ঘোষ। জখমদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাতেই মালাকারপাড়ার তরফে মাঠপাড়ার কয়েকজনের বিরুদ্ধে বাঁকুড়া সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মাঠপাড়ার দুই বাসিন্দাকে ধরে পুলিশ। মঙ্গলবার বাঁকুড়া আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক ধৃতদের ১৪ দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন। এ দিনই ওই দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে পথে নামেন স্থানীয় বিজেপি নেতারা। মাঠপাড়ার বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে মালকারপাড়ার কয়েকজনের বিরুদ্ধে সদর থানাতেই পাল্টা অভিযোগ জানানো হয়।

Advertisement

আহত দলীয় সমর্থকদের পরীক্ষা করছেন বিজেপি নেতা, পেশায় চিকিৎসক সুভাষ সরকার।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লোকসভা ভোটের আগে মাঠপাড়া এলাকার বেশ কিছু বাসিন্দা বিজেপিতে যোগ দেন। লোকসভা ভোটে মালাকারপাড়া প্রাথমিক স্কুলের বুথে (মাঠপাড়ার বাসিন্দারা ওই বুথের ভোটার) বিজেপি অন্য দলের থেকে এগিয়েও রয়েছে। সেই সূত্র ধরেই বিজেপি-র জেলা সম্পাদক নীলাদ্রিশেখর দানার অভিযোগ, ওই এলাকায় ভোটে তাঁদের দলের ভাল ফল দেখে স্থানীয় বাসিন্দাদের উপরে চটে গিয়েছিল তৃণমূল। তারই জেরে সোমবার হামলা করা হয়েছে।

এক ধাপ এগিয়ে বাঁকুড়া লোকসভায় বিজেপি-র প্রার্থী তথা দলের রাজ্য সহ-সভাপতি সুভাষ সরকারের দাবি, “বহিরাগত দুুষ্কৃতী এনে তৃণমূলই হামলা চালিয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের পরিকল্পনামাফিক সব ঘটেছে। পুলিশ সুপারকে ঘটনা জানিয়েছি।” অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। স্থানীয় তৃণমূল নেতা অসিত আচার্যের পাল্টা বক্তব্য, “সিপিএম থেকে বিজেপিতে ঢোকা মাঠপাড়া এলাকার কিছু বাসিন্দা বিনা প্ররোচনায় গুন্ডামি করেছে সোমবার।” এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর রেখা দাসরজকের (আচার্য) সংযোজন, “বিজেপি বাসিন্দাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করছে। তার জেরেই এই ঘটনা।”

এ দিন সকালেও এলাকা ছিল থমথমে। দু’টি পাড়াই পুরুষশূন্য। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ডিএসপি (আইন-শৃঙ্খলা) বলেন, “দুই পাড়ার তরফেই অভিযোগ পেয়েছি। দু’জনকে ধরা হয়েছে। তদন্ত এখনও চলছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement