নির্যাতনের কথা আইনি শিবিরে জানাল মেয়েরা

স্বামী নেশা করে এসে এসে স্ত্রীকে বেদম পেটায়। প্রতিবাদ করলে উল্টে মারধর আরও বেড়ে যায়। আবার থানা পুলিশ বা আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললে একেবারে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আর এক মহিলার অভিযোগ, তুচ্ছ কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মানবাজার শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৫ ০১:২৮
Share:

স্বামী নেশা করে এসে এসে স্ত্রীকে বেদম পেটায়। প্রতিবাদ করলে উল্টে মারধর আরও বেড়ে যায়। আবার থানা পুলিশ বা আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললে একেবারে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।

Advertisement

আর এক মহিলার অভিযোগ, তুচ্ছ কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য হয়েছিল। স্ত্রী অভিমান করে সেই গ্রামেই বাপের বাড়িতে চলে যান। কয়েকদিনের মধ্যে স্বামী আবার একজনকে বিয়ে করে বাড়িতে তোলেন।

সদ্য বিয়ে হওয়া এক তরুণী বিবাহ বিচ্ছেদ চান। অথচ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা নানা টালবাহানায় বিচ্ছেদে বাধা সৃষ্টি করছে। এ ক্ষেত্রে উপায় কী?

Advertisement

এমনই নানা সমস্যায় থাকা মহিলারা আইনি সহায়তা কী ভাবে পেতে পারেন, তা নিয়ে সচেতন করতে সম্প্রতি মানবাজার ২ ব্লকের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ‘অনন্যা ভবনে’ গার্হস্থ্য হিংসা রোধে আইনি প্রশিক্ষণ শিবির হয়ে গেল। শিবিরের আয়োজন করেছিল মানবাজার থানার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অন্যতম কর্তা বৃহস্পতি মাহাতো। তিনি বলেন, “দু’দিনে মানবাজার ২ ব্লকের ৭টি পঞ্চায়েতের বাছাই করা মহিলা প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এই আইনি প্রশিক্ষণ শিবির হল। জেলা আইনি পরিষেবা বিভাগ গার্হস্থ্য হিংসা রোধ, আর্থিক হয়রানি, যৌন নির্যাতন প্রভৃতি বিষয়ে মহিলাদের সচেতনতা বাড়ায় এবং আইনি পরামর্শ দেয়।”

মানবাজার ২ ব্লক মূলত আদিবাসী প্রধান এলাকা। সংস্থার কর্তাদের মতে, শিক্ষার অভাব এবং অজ্ঞতার কারণে এই সব এলাকায় মহিলারা বেশি নির্যাতিতা। আইনি সহায়তার দ্বারস্থ হলে তাঁদের উপর বেশি কোপ নেমে আসে। প্রশিক্ষণ শিবিরে মহিলাদের বধূ নির্যাতনের ৪৯৮ (ক) ধারার আইনগত প্রয়োগের বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই ধারার অপপ্রয়োগের ফলে অনেক নিরপরাধ ব্যক্তিও জেল খাটছেন। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট এই ধারা প্রয়োগের ক্ষেত্রে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আগে অভিযোগ দায়ের হলে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হত। জামিনের সুযোগ ছিল না। পাশাপাশি মহিলাদের অধিকারের বিষয়টি সুরক্ষিত থাকছে কি না তাও দেখতে বলা হয়েছে। দু’দিনের শিবিরে আদিবাসীদের জমি হস্তান্তর বা বিক্রি, একাধিক বিবাহ, পারিবারিক হিংসা রোধের বিষয়ে আইনের ধারা ও অধিকার প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে।

জেলা আইনি পরিষেবা সেলের সম্পাদক রোহন সিংহ বলেন, “প্রশিক্ষণ শিবিরে মহিলারা তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। আমরা তাঁদের করণীয় বিষয় সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করেছি। জেলা আইনি পরিষেবা বিভাগ থেকে তারা প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা পাবেন। শিবিরে উপস্থিত মহিলারা সংসারে ও তাঁদের কর্মক্ষেত্রে কী ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন এবং এ বিষয়ে তাঁদের আইনগত অধিকার প্রসঙ্গে জানতে চেয়েছেন। একেবারে প্রত্যন্ত এলাকার মহিলাদের কাছ থেকে এই ধরনের প্রশ্ন উঠে আসায় শিবিরের উদ্দেশ্য সার্থক।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন