পঞ্চায়েতে তৃণমূলের দুর্নীতি খুঁজবে বিজেপি

তৃণমূলকে চাপে রাখতে সরকারি প্রকল্পে পঞ্চায়েত স্তরে দুর্নীতি হচ্ছে কি না তা নজর রাখতে বিজেপি কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হল। এ জন্য প্রতিটি এলাকায় কয়েকজন কর্মীকে শুধু এই নজরদারির দায়িত্ব দিতে বলা হয়েছে। রবিবার হুড়ার লালপুর মোড়ের জনসভা থেকে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে এই আহ্বান জানালেন বিজেপি-র রাজ্য সম্পাদক শ্যামাপদ মণ্ডল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হুড়া শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৪ ০১:০১
Share:

হুড়ায় কর্মীদের নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন কয়েকজন আদিবাসী নেতা।—নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূলকে চাপে রাখতে সরকারি প্রকল্পে পঞ্চায়েত স্তরে দুর্নীতি হচ্ছে কি না তা নজর রাখতে বিজেপি কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হল। এ জন্য প্রতিটি এলাকায় কয়েকজন কর্মীকে শুধু এই নজরদারির দায়িত্ব দিতে বলা হয়েছে।

Advertisement

রবিবার হুড়ার লালপুর মোড়ের জনসভা থেকে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে এই আহ্বান জানালেন বিজেপি-র রাজ্য সম্পাদক শ্যামাপদ মণ্ডল। তাঁর কথায়, “অতীতে পুকুর চুরি হয়েছে। আপনারা তথ্য জানার অধিকার আইন অনুসারে ১০০ দিনের কাজের মাস্টার রোল বের করুন। তারপর আমাকে ডাকবেন। দেখা যাবে ৫ দিনের পরিবর্তে দু’দিন কাজ হয়েছে। ৫০০ শ্রমিকের পরিবর্তে ২০০ শ্রমিক কাজ করেছে।” শুধু এখানেই থেমে থাকা নয়, উন্নয়নের কাজ ঠিকমতো হচ্ছে কি না, তাও নজরে রাখতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বস্তুত সারদা-কাণ্ডে তৃণমূল নেতাদের একের পর এক গ্রেফতারির পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতির অভিযোগকে শাসকদলের বিরুদ্ধে হাতিয়ার করতে চাইছে যুযুধান বিজেপি। তাই গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতি খুঁজতে কর্মীদের নামাতে চাইছে দল। একই সঙ্গে এই ধরনের অভিযোগকে কেন্দ্র করে আন্দোলন কর্মসূচির মাধ্যমে এলাকায় সাংগঠনিক শক্তির বৃদ্ধি ঘটবে বলে রাজনৈতিক মহলের মত।

Advertisement

শ্যামাপদবাবু কর্মীদের বলেন, “উন্নয়নের বিরোধিতা নয়। পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে গিয়ে এলাকায় কোন কোন প্রকল্পের কাজ চলছে খোঁজ নিন। সেই প্রকল্পের সম্পর্কে তথ্য চান। তিনি তথ্য না দিতে চাইলে পঞ্চায়েতের সচিব বা কর্ম-সহায়কের কাছে তথ্য চান। প্রয়োজনে বিডিওর কাছে যাবেন। জানতে চান কত টাকার কাজ, আর কাজের বিধি। তারপরই এলাকায় সেই তথ্য প্রচার করুন। প্রচার করুন যত টাকা এসেচে তত টাকারই কাজ করতে হবে।” তিনি জানান, মোরামের রাস্তার প্রস্তাব থাকলে যতটা পরিমাণ মোরাম পড়ার কথা ততটাই ফেলা হচ্ছে কি না দেখতে হবে।

কর্মীদের তিনি এও দেখতে নির্দেশ দেন, দরিদ্র বাসিন্দাদের বাড়ি দেওয়ার প্রকল্পে প্রকৃত প্রাপককে টপকে নিজেদের লোকজনকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে দেখলে প্রশাসনের কাছে গিয়ে তালিকা চাইতে হবে। তারপর যাঁদের নাম সেই তালিকায় রয়েছে, তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বোঝাতে হবে তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন কি না। যাঁরা বঞ্চিত হচ্ছে, তাঁদের বিডিওর কাছে নিয়ে যেতে হবে। এ জন্য একের এলাকায় কিছু কর্মীকে শুধু এই কাজই করতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়। এতে তৃণমূল চাপে পড়ে চুপসে যাবে।

এ দিনের সভায় ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টির হুড়া ব্লক সভাপতির সঙ্গে শতাধিক কর্মী বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন দলের জেলা সভাপতি বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়। ঝাড়খণ্ড দিশমের হুড়া ব্লকের নেতা তারাপদ হাঁসদা বলেন, “আমাদের বিভিন্ন সংগঠনের প্রায় ১৫০ নেতা-কর্মী বিজেপিতে যোগ দিলাম।”

বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য বি পি সিংহ দেও দাবি করেন, “বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পরে এখনও অবধি এই জেলায় ৪৫ হাজার মানুষ বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। আর বীরভূমে অনুব্রত মণ্ডলের অত্যাচারে গ্রামের পর গ্রাম বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে। তৃণমূলেরই কিছু লোকজন আমাদের ফোন করে বলেছেন, একটু সবুর করুন। আমরা আসছি।” এরপরেই তাঁর সতর্কতা, “এখানে এলাম আর ফের দাদাগিরি চালু হয়ে গেল, চলবে না। সকলেই স্বাগত। কিন্তু এখানে এসে কোনও দাদাগিরি চলবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন