জঙ্গলমহল উন্নয়ন বিরোধী প্রতিরোধ কমিটি বলরামপুর ও আড়শার কিছু এলাকায় মাওবাদীদের ঢুকতে না দেওয়ার দাবিতে মিছিল করেছিল দু’দিন আগে। রবিবার সেই আড়শা থানার কিছু এলাকায় মিলল মাওবাদী নামাঙ্কিত কিছু পোস্টার ও ব্যানার। সিপিআই (মাওবাদী) গঠনের ১০ বছর উপলক্ষ্যে সপ্তাহভর পালনের ডাক দেওয়ার সঙ্গে রাজনৈতিক শত্রুর কুপ্রচারের মুখোশ খুলে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পোস্টার ও ব্যানারগুলি খুলে নিয়ে যায়। জেলা পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীরকুমার বলেন, “কয়েকটি পোস্টার মিলেছে। আমরা দেখছি।”
সম্প্রতি আড়শা ও বলরামপুরের উরমায় কিছু দিন আগে মাওবাদীদের নামাঙ্কিত এমনই কিছু পোস্টার ও ব্যানার পড়েছিল। সেগুলি মাওবাদীদের কি না তা নিয়ে পুলিশ কর্তারা নিশ্চিত ভাবে তখন জানাতে পারেননি। তবে শাসকদলের জঙ্গলমহলের নেতা-কর্মীরা মাওবাদীরা সক্রিয় হয়েছে বলে মিছিল করে বেরিয়ে পড়েন।
গত বৃহস্পতিবার বলরামপুর ও আড়শার একাংশে কয়েকশো মোটরবাইক নিয়ে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে মিছিল করেছিল জঙ্গলমহল উন্নয়ন বিরোধী প্রতিরোধ কমিটি। তাতে মূলত সামিল হয়েছিলেন শাসকদলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরাই। সেই মিছিল থেকে স্লোগান উঠেছিল, ‘মাওবাদীদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে একসাথে, মাওবাদীরা হুঁশিয়ার’। সেই মিছিলের দু’দিনের মাথায় সেই এলাকাতেই মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার পড়ায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বিভিন্ন মহলে। ইতিমধ্যেই বলরামপুরের তিলাগড়া গ্রামে এক তৃণমূলকর্মীর বাড়িতে এসে তাঁর ছেলেকে স্কোয়াডে যোগ দেওয়ার শাসানি দিয়েছে মাওবাদীরা।
এ দিন সকালে আড়শা থানার বুলানটাঁড়, রাজপতি, বরুয়াটাঁড়, মহুলটাঁড় এবং সিঁদুরপুর-বরুয়াটাঁড় রাস্তার উপরে পোস্টারগুলি দেখতে পান স্থানীয় মানুষজন। জঙ্গলঘেরা এই গ্রামগুলির অবস্থান অযোধ্যা পাহাড়ের ঠিক নীচে। রাজপতি জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়ের দেওয়ালে ও বরুয়াটাঁড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেওয়ালে সাঁটানো ছিল পোস্টারগুলি। সিঁদুরপুর-বরুয়াটাঁড় কাঁচা রাস্তার উপরে পাথর চাপা দিয়ে রাখা ছিল আরও কয়েকটি পোস্টার।
তৃণমূলের জঙ্গলমহলের নেতা তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো আগেই বলেছেন, “কেউ মানুষের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করতে চাইলে প্রকাশ্যে এসে মানুষকে নিয়ে রাজনীতি করুন। তাতে আপত্তি নেই। কিন্তু জঙ্গলমহলের শান্তি যদি কেউ নষ্ট করার চেষ্টা করে, তাহলে আমরা রাজনৈতিক ভাবেই প্রতিরোধ করব।”