ব্যাঙ্ক নেই হাঁসনে, নাজেহাল গ্রাহক

এলাকায় কোনও ব্যাঙ্ক নেই। ফলে রামপুরহাট ২ ব্লকের হাঁসন ১, হাঁসন ২ এবং বুধিগ্রাম- এই তিনটি অঞ্চলের বাসিন্দাদের দীর্ঘদিন ধরে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা চালু না থাকার জন্য সরকারি ভাবে চালু করা ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার পদ্ধতি (উপভোক্তাদের টাকা সরাসরি ব্যাঙ্কের মাধ্যমে তাঁদের অ্যাকাউন্টে যায়)-র সুবিধা পেতে নাজেহাল হতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

মাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৫ ০২:৩১
Share:

এলাকায় কোনও ব্যাঙ্ক নেই। ফলে রামপুরহাট ২ ব্লকের হাঁসন ১, হাঁসন ২ এবং বুধিগ্রাম- এই তিনটি অঞ্চলের বাসিন্দাদের দীর্ঘদিন ধরে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা চালু না থাকার জন্য সরকারি ভাবে চালু করা ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার পদ্ধতি (উপভোক্তাদের টাকা সরাসরি ব্যাঙ্কের মাধ্যমে তাঁদের অ্যাকাউন্টে যায়)-র সুবিধা পেতে নাজেহাল হতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।

Advertisement

বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের টাকা যাতে দ্রুত উপভোক্তারা পান, সে জন্য তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা আবশ্যিক করেছে প্রশাসন। এর ফলে যাতে উপভোক্তাদের অ্যাকাউণ্টে সরাসরি টাকা চলে যায়, তার জন্য গঠিত হয়েছে ব্লক লেবেল ব্যাঙ্কার্স কমিটি। যার মূল কনভেনর হচ্ছেন বিডিও। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার জনধন যোজনা চালু করায়, সকলের জন্য ব্যঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে হচ্ছে। কিন্তু যেখানে ব্যাঙ্কই নেই, সেখানে কি করে খাতা খুলবেন বাসিন্দারা?

কার্যত এমন প্রশ্ন নিয়ে সরকারি দফতরে দফতরে ঘুরছেন ওই তিন অঞ্চলের বাসিন্দারা। রামপুরহাট ২ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য, মাড়গ্রাম থানার সন্তোষপুর গ্রামের বাসিন্দা রফিউদ্দিন মোমিন বলেন, “হাঁসন ১ ও ২ এবং বুধিগ্রাম এই তিনটি অঞ্চলে কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক নেই, নেই কোনও গ্রামীন ব্যাঙ্ক। এর ফলে এই তিনটি অঞ্চলের প্রায় পঞ্চাশ হাজার বাসিন্দা ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পেতে নাজেহাল হচ্ছেন। আমরা এলাকার পঞ্চায়েত ভবন গুলিতে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা চালু করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করছি।” এলাকার বাসিন্দা তথা রামপুরহাট ২ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি তথা সিপিএমের রামপুরহাট ২ জোনাল সম্পাদক কালাম মোল্লা বলেন, “ব্যাঙ্কিং পরিষেবার জন্য এলাকার বাসিন্দাদের অন্য অঞ্চল শুধু নয় অন্য ব্লকে যেতে হয়। এর ফলে ষাঠোর্দ্ধ ব্যক্তি যারা, বা কোনও ভাতা পাচ্ছেন তাঁদের কষ্ট করে একটি অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে যেতে হয়। একটি ব্যাঙ্কের খুব দরকার।”

Advertisement

ঘটনা হল, অন্য অঞ্চলে যখন একজন বয়স্ক মানুষকে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পেতে যেতে হয়, তখন উপভোক্তাদের সঙ্গে আর একজনকে সঙ্গে নিয়ে যেতে হয়। এর ফলে যে উপভোক্তা যায় তারও যেমন সময়ের অপচয় হয় এবং তেমনি বাড়তি অর্থও খরচ করতে হয়। হাঁসন ১ অঞ্চলের বেলুন গ্রামের বাসিন্দা ছবি রাণী বন্দ্যোপাধ্যায়, শেফালি ভুঁইমালিরা জানালেন, তাঁদের বয়স্ক ভাতা আনতে পাঁচ কিলোমিটার দূরে মাড়গ্রাম থানার দিঘুলি তে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে যেতে হয়। কিংবা নলহাটি ১ ব্লকের কুরুমগ্রাম ডাকঘরে যেতে হয়। এর জন্যও অনেক সময় লেগে যায়।

রামপুরহাট ২ ব্লকের বিডিও সৌমনা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “একটি জায়গায় ব্যাঙ্কের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র থাকা আর একটি শাখা থাকা দুটি সম্পূর্ণ আলাদা ব্যাপার। ব্লক লেবেল ব্যাঙ্কার্স কমিটির সভা অনেকবার ডেকেছি। কিন্তু দু’ একটি ব্যাঙ্কের প্রতিনিধি ছাড়া অন্যান্য ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা কেউ আসেনি। ফলে ওই তিনটি অঞ্চলে ব্যাঙ্কের শাখা খোলার ব্যাপারে তেমন কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।”

রামপুরহাট ২ পঞ্চায়েত সমিতির বুধিগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের ১০০ দিন প্রকল্প থেকে ইন্দিরা আবাস, বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা এবং কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকা নেওয়ার জন্য ৬ কিমি দূরে অন্য অঞ্চল বিষ্ণুপুর অঞ্চলের বসোয়া গ্রামে একটি রাস্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় যেতে হয় বাসিন্দাদের। বুধিগ্রাম অঞ্চলের বাসিন্দা সেন্টু সেখ বলেন, “বর্ষা কালে এলাকার বাতিনা, লাহা গ্রামের বাসিন্দাদের কাঁদর পেরিয়ে আসতে হয়। এর জন্য আমরা চাই বুধিগ্রাম অঞ্চলে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা চালু করা হোক।”

কী বলছেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিক?

বীরভূম জেলা লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার বর্তমানে অসুস্থ আছেন। দায়িত্ব প্রাপ্ত আধিকারিক ঘনশ্যাম মুখোপাধ্যায় বলেন, “এ ব্যাপারে যা বলার লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার বলবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন