বউ পালালেও তাঁকে ফোন, ক্ষুব্ধ শতাব্দী

বেজায় চটেছেন তিনি। বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায় শনিবার সিউড়ির পুরন্দরপুরে কর্মীদের তোপ দেগেছেন, “এটা কী রকম কথা! যে কোনও কারণে আমাকেই ফোন কেন?” কপালে ভাঁজ, ঘন ঘন আঁচলে মুখ মুছে শতাব্দী বলছেন, “পাড়ায় ট্রান্সফর্মার জ্বলে গেলে আমাকে ফোন, পাড়ায় একটি কুকুরের সঙ্গে মারপিট হল আমাকে ফোন! বাড়ির বউ পালালেও আপনারা এমপি-কে ফোন করছেন, কেন?”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৪ ০১:৩৫
Share:

সিউড়ির পুরন্দরপুরের সভায় শতাব্দী রায়। —নিজস্ব চিত্র

বেজায় চটেছেন তিনি। বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায় শনিবার সিউড়ির পুরন্দরপুরে কর্মীদের তোপ দেগেছেন, “এটা কী রকম কথা! যে কোনও কারণে আমাকেই ফোন কেন?”

Advertisement

কপালে ভাঁজ, ঘন ঘন আঁচলে মুখ মুছে শতাব্দী বলছেন, “পাড়ায় ট্রান্সফর্মার জ্বলে গেলে আমাকে ফোন, পাড়ায় একটি কুকুরের সঙ্গে মারপিট হল আমাকে ফোন! বাড়ির বউ পালালেও আপনারা এমপি-কে ফোন করছেন, কেন?” তাঁর পরামর্শ, অভিযোগ জানানোর বিবিধ জায়গা রয়েছে। শতাব্দীর কথায়, “পঞ্চায়েত লেভেল আছে, কাউন্সিলর লেভেল আছে, বিধায়ক লেভেল আছে। তার পর তো সাংসদ। এমপি-র একটা নাম্বার পেয়েছি, আর এমপি শতাব্দী রায়! তাই বেশি করে ফোন করব?”

নায়িকা-সাংসদের এ হেন ক্ষোভে অবশ্য অস্বস্তিতে পড়েছেন শাসকদলের নেতা-কর্মীরা। তাজ্জব বনে গিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও।

Advertisement

কারণ, ক’মাস আগে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে বীরভূমের প্রত্যন্ত এই পুরন্দরপুর এলাকায় এসেই শতাব্দী অকাতরে বিলিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর নিজের মোবাইল নম্বর। দলের স্থানীয় নেতারাই জানান, ভোট-প্রচারে এসে শতাব্দী স্থানীয় কর্মী থেকে এলাকার গ্রামীণ মানুষকে নিজের নম্বর দিয়ে বলেছিলেন, ‘যে কোনও প্রয়োজনে আমাকে ফোন করবেন। দ্বিধা করবেন না।’

দলের এক জেলা নেতার কথায়, “ভোটের সময় শতাব্দী বলেছিলেন, সিনেমায় তাঁকে দেখতে টাকা খরচ করতে হয়। কিন্তু ভোট দিলে বিনা পয়সাতেই পাঁচটা বছর তাঁকে দেখতে পাবেন। মানুষজনকে তিনি অকাতরে নিজের নম্বরও দিয়েছিলেন।”

শতাব্দীর উষ্মা কানে গিয়েছে ওই কেন্দ্রের প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ রামচন্দ্র ডোমের। তিনি বলেন, “মানুষ ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করেন। তাঁদের সুবিধা-অসুবিধা তো তাঁকেই দেখতে হবে। মানুষ যদি নিচুতলায় কাজ না পান, তা হলে কার কাছে যাবেন?” আর, রায়গঞ্জের সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিমের কটাক্ষ, “এই ধরনের অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের ভোটের আগে এক রকম চেহারা থাকে, ভোটের পরে আর এক রকম!”

আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়র মন্তব্য, “উনি ভুলে যাচ্ছেন, যাঁরা ওঁকে ফোন করছেন তাঁরাই ওঁকে সাংসদ করেছেন।” শতাব্দী অবশ্য বলছেন, “বিরক্তি থেকে বলিনি। শুধু বলেছি যে কাজ যেমন পঞ্চায়েত, পুরসভা, বা বিধায়ক স্তরেই মিটে যায় তার দায় আমাকে নিতে হচ্ছে বলে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন