বিষ্ণুপুর পুরসভার সামনে কংগ্রেসের বিক্ষোভ।—নিজস্ব চিত্র।
একাধিক দাবিতে সরব হয়ে বিষ্ণুপুর পুরসভার সামনে মাইক বেঁধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বিরোধীরা! বিগত পাঁচ বছরে এই দৃশ্য শেষ কবে দেখেছেন, তা মনে করতে পারছেন না এলাকার বাসিন্দা এবং পুরসভার কর্মীরা। পুরভোটের মুখে বুধবার এই দৃশ্যই দেখা গেল। বিক্ষোভ দেখাল কংগ্রেস।
এ দিন সকালে প্রথমে জনা কুড়ি কংগ্রেস কর্মী মিছিল করে শহর পরিক্রমা করেন। তার পরে মোট ১৬ দফা দাবিতে তাঁরা পুরসভায় স্মারকলিপি দেন। দাবিগুলির অন্যতম, স্বচ্ছ বিপিএল তালিকা প্রকাশ, একলাখি ঘর নির্মাণ, বিধবা ও বার্ধক্য ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক রং না দেখা, বিষ্ণুপুরের ঐতিহ্যবাহী বাঁধ, বাসস্ট্যান্ড ও মিউজিক কলেজের সংস্কার, পর্যটকদের জন্য পরিকাঠামো গড়ে তোলা। কংগ্রেসের শহর কমিটির সভাপতি উদয় চক্রবর্তী বলেন, “সরকারে রয়েছে তৃণমূল। সেই তৃণমূলেরই পুরবোর্ড বিষ্ণুপুরে। অথচ শহরে উন্নয়নের ছিঁটেফোটাও নেই! নিকাশি নালা না থাকায় যদুভট্ট মঞ্চের জল গড়াচ্ছে রাস্তায়। ২ নম্বর ওয়ার্ডের লোহার পাড়ায় প্রাথমিক স্কুল না থাকায় বহু দূরে যেতে হয় কচিকাঁচাদের।”
এ দিন পুরভবনে পুরপ্রধান তথা রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় না থাকায় কংগ্রেসের স্মারকলিপি গ্রহণ করেন উপপুরপ্রধান বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায়। তাঁর মতে, কংগ্রেসের এই আন্দোলন আদপে পুরভোটের আগে প্রচারে আসার কৌশল। তাঁর দাবি, “বার্ধক্য ও বিধবা ভাতা নিয়ে কোথাও অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেনি। ভোট ঘোষণার আগে গুটি কয়েক জনকে নিয়ে কংগ্রেসের এই লোক দেখানো ভেল্কিতে ভুলবে না বিষ্ণুপুরের মানুষ। আমরা সারা বছর মানুষের পাশে থেকে উন্নয়নের কাজ করেছি।” তৃণমূলের আর এক কাউন্সিলরের কটাক্ষ, “পাঁচ বছর পার হয়ে নতুন করে ভোট ঘোষণা হতে চলল। নিয়ম অনুসারে এর পরে সরকারি প্রকল্পের কাজই তো বন্ধ হয়ে যাবে। কংগ্রেসের ঘুম একটু আগে ভাঙলে ভাল হত!” বিষ্ণুপুর শহরবাসীর একাংশেরও ক্ষোভ, অনুন্নয়ন প্রশ্নে আরও আগে আন্দোলনে নামতে পারতেন বিরোধীরা। উদয়বাবু অবশ্য বলেছেন, “আগেও নানা স্তরে আমরা এই পুরশহরের অনুন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছি। গলা ফাটিয়েছি।”
বাঁকুড়া জেলায় কংগ্রেসের শক্তি তলানিতে এসে ঠেকেছে। তবে আসন্ন পুরভোটে বিষ্ণুপুর পুরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডেই কংগ্রেস প্রার্থী দেবে বলে জানিয়েছেন উদয়বাবু। সাংগঠনিক ক্ষমতা কমে গিয়েছে মেনে নিয়েও তিনি বলেন, “কর্মী নেই। সামনে ভোট। তবু সব ওয়ার্ডে প্রার্থী দিয়ে দল লড়াইয়ে থাকবে। এই শহরের মানুষ কংগ্রেসের পাশে আজও আছেন।”