হুড়ার লালপুর মোড়ে অবরোধে আটকে পড়ল বহু যানবাহন। বৃহস্পতিবারের নিজস্ব চিত্র।
একশো দিনের বকেয়া মজুরি প্রদান, ধানের সহায়ক মূল্য বৃদ্ধি, সারের কালোবাজারি বন্ধ করা সহ বিভিন্ন দাবিতে বৃহস্পতিবার হুড়া ও খাতড়ার পাম্পমোড়ে বেশ কিছুক্ষণ পথ অবরোধ করল সারা ভারত কৃষক ক্ষেতমজুর সমিতি। হুড়ার লালপুর মোড়ে বেলা ১১টা থেকে পুরুলিয়া-বাঁকুড়া ৬০এ জাতীয় সড়কে অবরোধ করায় যান চলাচল বন্ধ থাকে। এর জেরে আটকে যাওয়া গাড়ির যাত্রীরা বিপাকে পড়েন।
অবরোধে অংশ নেওয়া রাঙাডি গ্রামের আদরী হেমব্রম, চাঁদমনি হেমব্রম, তপন মুর্মু, দেউলি গ্রামের বেদনী মাহাতো, খৈরি-পিহিড়া গ্রামের সুবোধ মাহাতোদের কথায়, “১০০ দিনের কাজ করার পরেও আমরা আমাদের পারিশ্রমিক পাচ্ছি না। ডাকঘর বলছে টাকা আসেনি, আর প্রশাসন বলছে সমস্যার সমাধান হবে। আমরা গরিব মানুষ সংসার চালাব কী করে?” মজুরির দাবির পাশাপাশি ধানের সহায়ক মূল্য ক্যুইন্টাল প্রতি ১৮০০ টাকা করারও দাবি করেন তাঁরা। একই সঙ্গে সারের কালোবাজারি রুখে চাষিদের নায্য মূল্যে সার দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা। উল্লেখ্য, চলতি বছরে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলাকে খরা ঘোষণা করা হবে কি না তা নিয়ে কয়েক মাস আগে রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু যখন পুরুলিয়ায় আসেন, তখনও সারের কালোবাজারি নিয়ে অভিযোগ উঠেছিল। কৃষকদের চড়া দামেই সার কিনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন খোদ পুরুলিয়ার সভাধিপতি শান্তিরাম মাহাতোও। এমন অভিযোগ শুনে দৃশ্যতই অস্বস্তিতে পড়তে হয় মন্ত্রী সহ দফতরের আধিকারিকদের। লালপুর মোড় অবরুদ্ধ হওয়ায় মানবাজারগামী রাস্তাও আটকে যায়। জাতীয় সড়ক সহ মানবাজারগামী রাস্তাতেও দাঁড়িয়ে পড়ে গাড়ির সারি। বেলা ১২টা অবধি অবরোধ চলার পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, যে শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তাঁদের পারিশ্রমিক পেতে সমস্যা হয়নি। ডাকঘরে যাঁদের অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে সমস্যা। কী ভাবে তাঁদের টাকা দেওয়া যায়, সে চেষ্টা চলছে।”
খাতড়ার পাম্পমোড়ে সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে আধ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলে এই অবরোধ। এর জেরে বাঁকুড়া-রানিবাঁধ রাস্তায় বেশ কিছুক্ষণ যান চলাচল ব্যাহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলার পরে অবরোধ ওঠে। সারা ভারত কৃষক ও খেতমজুর সংগঠনের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক তারাশঙ্কর গোপ বলেন, “যাত্রীদের অসুবিধার কথা ভেবে দ্রুত অহরোধ তুলে নেওয়া হয়।”