রাস্তা বেদখল, বেকায়দায় খাতড়া

রাস্তার দু’দিকে সারি সারি দোকান। দোকানের সামনে সাইকেল, মোটরবাইক, ঠেলাগাড়ি, ভ্যান রিকশা দাঁড়িয়ে থাকে। এর জেরে চওড়া রাস্তা ক্রমশ সরু হয়ে গিয়েছে। বড় গাড়ি, ছোট গাড়ি ও পথচারীদের ভিড়ে ওই রাস্তায় যানজট পাকিয়ে উঠছে। যানজটের এই সমস্যা দক্ষিণ বাঁকুড়ার মহকুমা সদর খাতড়ার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খাতড়া শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৪ ০০:৪৭
Share:

রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে-থাকা বাসে চলছে যাত্রীদের ওঠানামা। ছবি: দেবব্রত দাস।

রাস্তার দু’দিকে সারি সারি দোকান। দোকানের সামনে সাইকেল, মোটরবাইক, ঠেলাগাড়ি, ভ্যান রিকশা দাঁড়িয়ে থাকে। এর জেরে চওড়া রাস্তা ক্রমশ সরু হয়ে গিয়েছে। বড় গাড়ি, ছোট গাড়ি ও পথচারীদের ভিড়ে ওই রাস্তায় যানজট পাকিয়ে উঠছে।

Advertisement

যানজটের এই সমস্যা দক্ষিণ বাঁকুড়ার মহকুমা সদর খাতড়ার। দিনের ব্যস্ত সময়ে তো বটেই, দিনের অন্য সময়েও খাতড়ার করালী মোড়, দাসের মোড়, পুরনো বাজারে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। ওই সময় রাস্তা পার হতে গিয়ে চরম সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন গাড়ি চালক থেকে পথ চলতি সাধারণ মানুষ।

খাতড়া শহরের সবচেয়ে ব্যস্ততম এলাকা হল করালী মোড় ও দাসের মোড়। এই দু’টি মোড়ে খাতড়ার উপর দিয়ে যাতায়াতকারী সরকারি, বেসরকারি-- সব বাসই থামে। করালী মোড়ে বাসগুলি একদিকে বাস দাঁড় করিয়ে রাখা হলেও দাসের মোড়ে রাস্তার উপরেই থাকে বাসগুলি। তার উপর দাসের মোড়ে ছোট গাড়ির স্ট্যান্ড রয়েছে। ফলে ওই এলাকায় যানজটের তীব্রতা বেশি। প্রায় সময় যানজট লেগেই থাকে। একবার কোনও গাড়ি রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে গেলে জট কাটাতে বেশ কিছুক্ষণ সময় পেরিয়ে যায়। ওই সময় রাস্তা পার হতে গিয়ে নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় হয় সাধারণ পথচারীদের।

Advertisement

কাছেই রয়েছে খাতড়া হাইস্কুল, খাতড়া গার্লস হাইস্কুল, কংসাবতী শিশু উচ্চবিদ্যালয়, খাতড়া আদালত। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিজ্ঞতা, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রাস্তায় বাস, ছোট গাড়ি, সাইকেল, মোটরবাইক, ঠেলার পাশাপাশি পথচারীদের ভিড় থাকে ওই এলাকায়। তবু দাসের মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ কিছুক্ষণ থাকায় সাময়িক ভাবে যানজট কমলেও পুরোপুরি কাটে না বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।

বাসিন্দাদের বক্তব্য, “এই এলাকা নামেই বাসস্ট্যান্ড। বাস রাখার জন্য নির্দিষ্ট কোনও জায়গা নেই। ছোট গাড়িরও স্ট্যান্ড নেই। চালকরা কেউ রাস্তার পাশে, কেউ বা রাস্তার উপরে বাস-ছোট গাড়ি রাখেন। তারপরে কিছু দোকানদারও রাস্তার উপরে মালপত্র সাজিয়ে দিব্যি রাস্তা দখল করে বহাল তবিয়তে ব্যবসা করছেন। এ ভাবেই রাস্তা বেদখল হয়ে গিয়ে সরু হয়ে পড়েছে।

এই সমস্যা দূর করার জন্য অবিলম্বে একটি স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড ও ছোটগাড়ির স্ট্যান্ডের দাবি উঠেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী দেবব্রত মিত্র, সোমনাথ আশমোদক বলেন, “বাস-ছোট গাড়ি দাঁড়ানোর জায়গা প্রায় নেই বললেই চলে। যাত্রীদের দাঁড়ানোর জন্য নেই প্রতীক্ষালয়ও।” স্থানীয় স্কুল শিক্ষক সম্পদ খাঁড়াত, উত্তম পাল, বুদ্ধদেব চট্টোপাধ্যায়দের ক্ষোভ, “রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণ বলে কিছু নেই। যেখানে সেখানে গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ছে। কেউ কিছুই দেখছে না। দিন দিন সমস্যা বাড়ছে।”

গাড়িচালকেরা অবশ্য এই সমস্যার জন্য গাড়ি রাখার জায়গার অভাবকেই দায়ী করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, গাড়ি রাখার জন্য নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড নেই। তাই বাধ্য হয়ে রাস্তার পাশে গাড়ি রাখতে হচ্ছে। যানজট এড়াতে প্রশাসনের এদিকে নজর দেওয়া উচিত। খাতড়া ১ পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের অজয় বাউরি এই সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেন, “বড় ও ছোট গাড়ির দু’টি স্ট্যান্ড তৈরি হলেই যানজটের সমস্যা কিছুটা হলেও কমবে। কিন্তু করালী মোড়ে ও দাসের মোড়ে জায়গার সমস্যা রয়েছে।” তিনি জানান, বিকল্প জায়গা থাকলেও তা কিছুটা দূরে। এতেই বিপত্তি দেখা দিয়েছে।”

খাতড়ার মহকুমাশাসক শুভেন্দু বসু বলেন, “একটি বাস টার্মিনাস তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। রাস্তার উপরে বেআইনি দখলদারি উচ্ছেদ করতে হবে। সম্প্রতি এ ব্যাপারে একটি কমিটিও গড়া হয়েছে। লোকসভা ভোটের পরে কাজ শুরু করা যাবে বলে আমরা আশাবাদী।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন