শ্লীলতাহানির অভিযোগ দলেরই মহিলা প্রধানের

তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব চলছেই পাত্রসায়রে। এ বার তৃণমূল পরিচালিত বীরসিংহ পঞ্চায়েতের মহিলা প্রধান হেনস্থা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ করলেন দলেরই অন্য গোষ্ঠীর কর্মীদের বিরুদ্ধে। সোমবার রাতে তিনি পুলিশ ও বিডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাত্রসায়র শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৪ ০২:০৩
Share:

তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব চলছেই পাত্রসায়রে। এ বার তৃণমূল পরিচালিত বীরসিংহ পঞ্চায়েতের মহিলা প্রধান হেনস্থা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ করলেন দলেরই অন্য গোষ্ঠীর কর্মীদের বিরুদ্ধে। সোমবার রাতে তিনি পুলিশ ও বিডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে।

Advertisement

পাত্রসায়রে শাসকদলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব কিছুতেই থামছে না। ওই পঞ্চায়েতের প্রধান নমিতা মুর্মুর অভিযোগ, সোমবার দুপুরে তৃণমূল কর্মী শান্তি কাপড়ি, নির্মল মণ্ডল, স্বপন ঘোষ, স্বরূপ মালের নেতৃত্বে বেশ কিছু দুষ্কতী লাঠি রড নিয়ে অফিসে ঢুকে গালিগালাজ শুরু করে। অফিসে আসা স্থানীয় মানুষজন ভয়ে ছুটে পালান। তাঁর কথায়, “আমি ও উপপ্রধান এর প্রতিবাদ করতে গেলে শান্তি ও নির্মল হুমকি দেয়, তাঁদের কথা মেনে পঞ্চায়েত না চালালে আমাকে তুলে নিয়ে যাবে। উপপ্রধানকে ওরা মারতে যায়। আমার শাড়ি ধরেও টানাটানি করে ওরা।” তাঁর অভিযোগ, কিছু দুষ্কৃতীকে সঙ্গে নিয়ে দলের এক গোষ্ঠীর নেতা-কর্মীরা প্রায়দিনই পঞ্চায়েত কার্যালয়ে গিয়ে হামলা করছে। এর ফলে পঞ্চায়েত চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

পাত্রসায়রের বিডিও অপূর্বকুমার বিশ্বাস বলেন, “বীরসিংহ গ্রাম পঞ্চায়েতে কিছুদিন আগেও ঝামেলা হয়েছিল। সোমবার ওই পঞ্চায়েত অফিসের ভিতরে তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছে বলে প্রধান লিখিত ভাবে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” রাজনৈতিক সমীকরণে বীরসিংহ পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের পাত্রসায়র ব্লক সভাপতি স্নেহেশ মুখোপাধ্যায়ের গোষ্ঠীর পাল্লা ভারী। গত পঞ্চায়েত ভোটে এই পঞ্চায়েতে টিকিট বিলির ক্ষমতা পেয়েছিলেন স্নেহেশবাবুর বিরোধী বলে পরিচিত ব্লকের আর এক নেতা বাবলু সিংহ। স্নেহেশবাবুর অনুগামীরা টিকিট পাননি। নির্দল হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তাঁরাই পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল করেন। বোর্ড গঠনের পর নির্দলরা অবশ্য তৃণমূলে যোগ দেন। সম্প্রতি স্থানীয় তন্তুবায় সমবায় সমিতির নির্বাচনে ৯টি আসনেই বাবলু সিংহের গোষ্ঠীর লোকেরা হেরে গিয়েছেন।

Advertisement

উপপ্রধান রহিত মিদ্যার অভিযোগ, “একের পর এক হার মানতে না পেরেই ওরা গায়ের জোরে পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল করতে চাইছে। এর জেরে এলাকার উন্নয়নের কাজ স্তব্ধ হয়ে যাচ্ছে।’’ স্নেহেশবাবুর অনুগামী বীরসিংহ অঞ্চল তৃণমূল নেতা সাধন কাপড়ির অভিযোগ, “সিপিএমের মদতপুষ্ট এলাকার কিছু দুষ্কৃতী এলাকায় অশান্তি সৃষ্টির জন্য পঞ্চায়েতে গিয়ে দিনের পর দিন গণ্ডগোল পাকাচ্ছে। দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁদের তরফে শান্তি কাপড়ি দাবি করেন, “সোমবার দুপুরে আমরা পঞ্চায়েত অফিসে যাইনি। আমরা কোনওদিন প্রধানকে হুমকি, শাসানি দিইনি।”বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি অরূপ খাঁ বলেন, “আমার কাছে এখনও লিখিত অভিযোগ আসেনি। তবে দলের মহিলা প্রধানকে হেনস্থার ঘটনা কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। ঘটনাটি খোঁজ নিয়ে দেখছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন