সরস্বতী পুজো না হওয়া নিয়েও আগেই ক্ষোভ ছিল। প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন দেখা গেল স্কুলে জাতীয় পতাকাও উত্তোলন হয়নি। তার জেরে শিক্ষকদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন অবিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। শেষমেষ পঞ্চায়েত প্রধানের মধ্যস্থতায় প্রধান শিক্ষক এ ব্যাপারে ‘ক্ষমা’ চেয়ে নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। মঙ্গলবার মুরারই থানার চাতরা চাতরা জুনিয়র হাইস্কুলের ঘটনা।
গ্রামবাসী যমুনা রাম, পরমেশ্বর তুরি, পলাশ পাল, সুখেন জায়সবালদের অভিযোগ, এলাকার সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ছোটবড় ক্লাব থেকে সমস্ত সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, অফিসে প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে জাতীয় পতাকা তোলা হয়েছে। কিন্তু, চাতরার ওই স্কুলে তা করা হয়নি। পড়ুয়ারা স্কুল থেকে ফিরে এসে এ নিয়ে অবিভাবকদের কাছে ক্ষোভ জানায়। তাঁরা বলেন, “স্কুলে সরস্বতী পুজোও হয়নি। অন্য স্কুলের পড়ুয়ারা যখন তাদের স্কুলের সরস্বতী পুজোর খাওয়া দাওয়া, মজা করার গল্প করছে। সে সব শুনে এখানকার পড়ুয়ারা দুঃখ পাচ্ছে।” স্কুলের এমন কাণ্ডকারখানার প্রতিবাদ করতেই তাঁরা একজোট হয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বলে জানালেন।
বর্তমান শিক্ষাবর্ষে ওই স্কুলে ১৫১ জন পড়ুয়া। শিক্ষক তিন জন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত বেহেরা বলেন, “আমার বাড়ি খয়রাশোলে। আমার উপরই পতাকা উত্তোলনের দায়িত্ব ছিল। কিন্তু, বাড়িতে বাবা হঠাত্-ই ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন। সে জন্যই আমি আসতে পারিনি।” প্রজনাতন্ত্র দিবসের দিন এ ভাবে পতাকা তুলতে না পেরে তিনি সবার কাছেই ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন বলে জানান। স্কুলে সরস্বতী পুজো না হওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, “স্কুল চত্বরে একটি বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। অন্যান্য বার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের নিয়ে একটি সরস্বতী পুজো হয়। এ বার সেখানে পুজো না হওয়ায় আমাদেরও পুজো হয়নি।”
অন্য দিকে, স্কুলে সরস্বতী পুজো না হওয়ায় চাতরা জুনিয়র সংলগ্ন চাতরা সুখদা সুন্দরী বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকাকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখান অবিভাবকদের একাংশ। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা কনিজ ফতেমা বলেন, “আমার স্কুলে ৫৩ জন পড়ুয়া। আমিই স্কুলের একমাত্র শিক্ষিকা। এই পরিস্থিতিতে স্কুলের ছোটছোট পড়ুয়াদের সামলে একা পুজোর বাজার করা, ঠাকুর নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি। এলাকাবাসীর সাহায্য পেলে অবশ্যই পুজো করতাম।” প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন তিনি অবশ্য স্কুলে এসে জাতীয় পতাকা তুলেছেন বলে জানিয়েছেন।