সাঁতুড়িতে ডাইন অপবাদ দিয়ে নির্যাতনের নালিশ

ডাইন অপবাদে একটি আদিবাসী পরিবারের উপরে নির্যাতনের অভিযোগ উঠল গ্রামের কয়েক জনের বিরুদ্ধে। প্রথমে সালিশি সভা বসিয়ে জরিমানা এবং তা দিতে না চাওয়ার পর থেকে মানসিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে পুলিশে অভিযোগ করেছেন পুরুলিয়ার সাঁতুড়িতে গড়শিকা পঞ্চায়েতের পলাশপাহাড়ি গ্রামের বিমল টুডু। তাঁর দাবি, ছ’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার পরেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সাঁতুড়ি শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৪ ০৫:২৭
Share:

ডাইন অপবাদে একটি আদিবাসী পরিবারের উপরে নির্যাতনের অভিযোগ উঠল গ্রামের কয়েক জনের বিরুদ্ধে। প্রথমে সালিশি সভা বসিয়ে জরিমানা এবং তা দিতে না চাওয়ার পর থেকে মানসিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে পুলিশে অভিযোগ করেছেন পুরুলিয়ার সাঁতুড়িতে গড়শিকা পঞ্চায়েতের পলাশপাহাড়ি গ্রামের বিমল টুডু। তাঁর দাবি, ছ’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার পরেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামের আদিবাসী পাড়ায় পাশাপাশি বাস বিমলবাবু ও তাঁর ভাই গোপাল টুডুর পরিবারের। গোপালবাবুর মৃত্যুর পরে সেখানে থাকেন তাঁর স্ত্রী শ্রীমতিদেবী ও ছেলে রঘুনাথ। রঘুনাথ দীর্ঘ দিন ধরে অসুস্থ থাকায় শ্রীমতিদেবী গ্রামের কয়েক জনকে নিয়ে ঝাড়খণ্ডের বোকারোয় জেনাডি গ্রামে এক জানগুরুর কাছে যান। সেই জানগুরু নিদান দেন, বিমল টুডু ডাইন। বিমলবাবুর অভিযোগ, “বোকারো থেকে ফিরে চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে গ্রামে সালিশি সভা ডাকে কয়েক জন মাতব্বর। সেখানে আমাকে ডাইন অপবাদ দিয়ে বলা হয়, ভাইপো রঘুনাথের অসুস্থতার জন্য না কি আমি দায়ী। আমাকে সে জন্য পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু আমি তা দিতে রাজি হইনি। তার পর থেকেই নিয়মিত গালিগালাজ, কটূক্তি শুনতে হচ্ছে আমাকে। ওই মাতব্বরদের সঙ্গে আমার ভাইয়ের স্ত্রী-ও এই নির্যাতন করছে।” তাঁর আরও অভিযোগ, তাঁকে এখন সামাজিক ভাবে একঘরে করে রাখার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে।

বিমলবাবু জানান, এর পরেই তিনি সাঁতুড়ি থানায় গোটা ঘটনা জানিয়ে ছ’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। কিন্তু তার পরে পুলিশ এক বারও গ্রামে তদন্তে আসেনি বলে তাঁর দাবি। বিষয়টি তিনি স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য তৃণমূলের বড়করাম টুডুকেও জানান। তবে পরিস্থিতি পাল্টায়নি। পুলিশের যদিও দাবি, অভিযোগ পাওয়ার পরেই তদন্ত শুরু হয়েছিল। দু’পক্ষকে থানাতেও ডাকা হয়। কিন্তু থানায় এসে তারা জানায়, সমস্যাটি গ্রামে বসেই নিজেরা মিটিয়ে নেবেন।

Advertisement

বারবার চেষ্টা করেও অভিযুক্তদের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। জেলা পরিষদ সদস্য বড়কারামবাবু বলেন, “পালশপাহাড়ি গ্রামে এক জনকে ডাইন অপবাদে নির্যাতনের ঘটনা শুনেছি। সময়ের অভাবে গ্রামে যেতে পারিনি। কিন্তু পুলিশকে বিষয়টি দেখার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। দ্রুত গ্রামে গিয়ে সকলকে নিয়ে বসে সমস্যাটি মেটানোর চেষ্টা করছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন