তৃণমূলের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিল সিপিএম। আস্থা প্রমাণের সভাতে দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধেই দাঁড়ালেন তৃণমূলেরই এক সদস্য। ওই সদস্যের সমর্থনে অপসারিত হতে হল প্রধানকে। ঘটনাটি সাঁতুড়ির গড়শিকা পঞ্চায়েতের। সাঁতুড়ির বিডিও দিব্যেন্দুশেখর দাস বলেন, “গড়শিকা পঞ্চায়েতের প্রধান রীনা লায়েকের বিরুদ্ধে আনা অনস্থায় সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য সমর্থন জানানোয় প্রধান অপসারিত হয়েছেন। এর পরে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওই পঞ্চায়েতে নতুন প্রধান নির্বাচন করা হবে।”
গড়শিকা পঞ্চায়েতে ৯টি আসনের মধ্যে পাঁচটি পেয়েছিল তৃণমূল। বাকি চারটি দখল করেছিল সিপিএম। দিন পনেরো আগে তৃণমূলের প্রধান রীনা লায়েকের বিরুদ্ধে পঞ্চায়েত পরিচালনা নিয়ে একাধিক অভিযোগ তুলে অনাস্থা এনেছিলেন সিপিএমের চার সদস্য। সেই মতো মঙ্গলবার ছিল আস্থা প্রমানের সভা। সেই সময়েই সিপিএমের স্থানীয় নেতৃত্ব দাবি করেছিল, পঞ্চায়েত পরিচালনা নিয়ে তৃণমূলেরই কিছু সদস্য তাঁদের প্রধানের কাজকর্ম নিয়ে ক্ষুব্ধ। তারই প্রতিফলন ঘটবে আস্থা প্রমানের সভাতেও। তারই প্রতিফলন ঘটল মঙ্গলবার। এ দিনের সভাতে ভোটাভুটিতে সিপিএমের চার সদস্য হেমন্ত টুডু, সহদেব বাস্কে, সাধমনি সোরেন, দিলীপ মুর্মুর সঙ্গে অনাস্থায় সমর্থন জানিয়েছেন পঞ্চায়েতের বেড়িয়া সংসদের তৃণমূল সদস্য শুকদেব হাঁসদা। ফলে অনাস্থার পক্ষে ভোট পড়েছে পাঁচটি। বিপক্ষে চারটি।
তৃণমূল সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই অনাস্থা ঘিরে দলের মধ্যে যে ভাঙন ধরতে পারে তা হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব। সে জন্য সোমবার ওই পঞ্চায়েতের দলীয় সদস্যদের নিয়ে ঘরোয়া সভা করেছিল তৃণমূল। সেখানেও উপস্থিত ছিলেন শুকদেববাবুও। কিন্তু তিনি যে এমনটা করবেন তা হয়তো বুঝতে পারেননি নেতৃত্ব। ভোটাভুটির পরে তৃণমূলের সাঁতুড়ি ব্লকের অন্যতম নেতা রামপ্রসাদ চক্রবর্তী প্রতিক্রিয়া দেন, “সিপিএম অনৈতিক পদ্ধতি অবলম্বন করে আমাদের পঞ্চায়েত সদস্যকে ভাঙিয়েছে। ওই পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে দলগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” আর শুকদেববাবু বলেন, “পঞ্চায়েত পরিচালনার ক্ষেত্রে দুর্নীতি হচ্ছিল বলেই প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থায় সমর্থন জানিয়েছি।” সিপিএমের স্থানীয় নেতা বিবেকানন্দ রায় বলেন, “পঞ্চায়েত পরিচালনা নিয়ে প্রধানের বিরুদ্ধে তৃণমূলের মধ্যেই ক্ষোভ রয়েছে। এ দিনের সভাতে তারই প্রতিফলন ঘটেছে। আমরা তৃণমূলের সদস্যকে ভাঙাতে যাইনি। উনি নিজে থেকেই অনাস্থায় সমর্থন করেছেন।”