শারীরিক এবং মানসিক অসুস্থতা নিয়ে বিশ্বভারতীর পিয়ার্সন মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি হলেন কলাভবনের সেরামিক বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। শ্রীসদন হস্টেল ও হাসপাতাল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। হঠাৎ অচৈতন্য হয়ে পড়লে হস্টেলের ওয়ার্ডেন এবং অন্য বন্ধুরা তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্স করে পিয়ার্সন মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করে।
প্রসঙ্গত, ভিন্ রাজ্যে ছাত্রীটির নিগ্রহের প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁর পাশে দাঁড়ানোয় বিভাগীয় প্রধানের কোপে পড়তে হয় তাঁকে, পুলিশে এমনই অভিযোগ করেছিলেন ওই ছাত্রী। পুলিশের কাছে বিভাগীয় প্রধানের নামে নালিশ জানানোয়, সেই অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্যও তাঁর উপর নানা ধরনের চাপ আসে বলে দাবি ছাত্রীর। গত রবিবার তিনি এমন অভিযোগও পুলিশে জানান, যে শ্রীসদনে কলাভবনের আবাসিক ছাত্রীদের একাংশ তাঁর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পত্রে অন্য ছাত্রীদের স্বাক্ষর সংগ্রহ করছে। নিরাপত্তার অভাব বোধ করে সে দিন রাতেই পুলিশে ফোনও করেন তিনি। এরপরই মঙ্গলবার অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এ দিন তিনি জানান, তাঁর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন কলাভবনের উপাধ্যক্ষ তথা ভাস্কর্য বিভাগের অধ্যাপক ঋষি বড়ুয়া। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ক্রোনিক সাইনাস এবং সাম্প্রতিক অতীতের ঘটনার জেরে ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এখন তিনি সুস্থ। আজ তাঁর হস্টেল ফেরার কথা।
এ দিকে কলাভবনের ভিন্ রাজ্যের প্রথম বর্ষের নির্যাতিতার বাবা এ দিনই চিঠি দিলেন মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বুধবার নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে চিঠি দিয়ে তিনি বলেন, “মেয়ে ভর্তি রয়েছে হাসপাতালে। আতঙ্ক এখনও ওকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। কলাভবনের অভিযুক্ত অধ্যক্ষ ও উপাচার্যের বিরুদ্ধে তদন্তের কি হল, জানতে পারছি না। জানতে পারছি না, চতুর্থ অভিযুক্তের বিষয়টিও।” এ দিনই ওই ছাত্রীর মেডিক্যাল রিপোর্টও হাতে পেল পুলিশ। পুলিশে অভিযোগ জানাবার পরই শান্তিনিকেতনে থাকা কালীন প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রী বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এরপর তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়। ঘটনার তদন্তকারী অফিসার নন্দিতা সাহা মজুমদার এবং শান্তিনিকেতন তদন্ত কেন্দ্রের আই সি অশোক সিংহ মহাপাত্র বর্ধমান মেডিক্যালে যান। নির্যাতিতার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁদের বয়ান লিপিবদ্ধ করেন ঘটনার তদন্তকারী অফিসার নন্দিতা সাহা মজুমদার।