১০০ দিনের কাজে দুর্নীতি, প্রধানের নামে এফআইআর

একশো দিনের প্রকল্পের দু’টি আলাদা কাজে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল তৃণমূল পরিচালিত সোনামুখীর রাধামোহনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সোনামুখীর বিডিও থানায় ওই পঞ্চায়েতের প্রধান, নির্মাণ সহায়ক ও দু’টি প্রকল্পের সুপারভাইজরের বিরুদ্ধে প্রকল্পের টাকা নয় ছয় করার অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সোনামুখী শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৪ ০০:২৯
Share:

একশো দিনের প্রকল্পের দু’টি আলাদা কাজে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল তৃণমূল পরিচালিত সোনামুখীর রাধামোহনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সোনামুখীর বিডিও থানায় ওই পঞ্চায়েতের প্রধান, নির্মাণ সহায়ক ও দু’টি প্রকল্পের সুপারভাইজরের বিরুদ্ধে প্রকল্পের টাকা নয় ছয় করার অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে খবর, রাধামোহনপুর গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস থেকে জগমোহনপুর মোড় পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের কাজ ও অন্য দু’টি পুকুর সংস্কারের প্রকল্পের কাজে কারচুপির প্রমাণ পেয়েছে জেলা প্রশাসন। তার পরিপ্রেক্ষিতে রাস্তা সংস্কারের প্রকল্পের সুপারভাইজরের দ্বায়িত্বে থাকা শান্তনু মান্না ও পুকুর সংস্কারের কাজে সুপারভাইজরের দায়িত্বে থাকা আকবর আলি মিদ্যা, পঞ্চায়েত প্রধান অঞ্জনা দাস ও পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক গৌতম কর্মকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন বিডিও।

মাসখানেক আগেই এলাকার বাসিন্দারা এই দু’টি কাজে দুর্নীতি হচ্ছে বলে বিডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। এরপর ঘটনার তদন্তে নামে জেলা প্রশাসন। রাস্তা সংস্কারের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল প্রায় দু’লক্ষ টাকা। জেলা প্রশাসন তদন্তে নেমে জানতে পারে কাজের সুপারভাইজর নিজের ডাক নাম রাজু মান্না নামে এই কাজের দ্বায়িত্ব নিয়েছিলেন। তাঁর প্রকৃত নাম শান্তনু মান্না। মাস্টার রোলে তাঁর নাম শ্রমিক হিসেবে নথিভুক্ত রয়েছে। শ্রমিকের কাজ করার জন্য বেশ কয়েক হাজার টাকা মজুরি হিসেবেও তিনি পেয়েছেন। এমনকী এই প্রকল্পের সাইনবোর্ড (যেখানে প্রকল্পের নাম, বরাদ্দ টাকা সহ বেশ কিছু তথ্য লেখা থাকে) তৈরির বরাতও রয়েছে তাঁর নামেই। এ ক্ষেত্রে তিনি শান্তনু নামটিই ব্যবহার করেছেন। এ ছাড়াও বেশ কিছু ভুয়ো শ্রমিকের নামও মাস্টার রোলে পেয়েছে জেলা প্রশাসন।

Advertisement

অন্য দিকে, পুকুর সংস্কারের কাজের তদন্তে নেমেও বেশ কিছু ভুয়ো শ্রমিকের নাম উঠে এসেছে মাস্টাররোলে। দেখানো হয়েছে এই প্রকল্পে ৩ হাজার ১৬৭ জন শ্রমিক কাজ করেছেন। কিন্তু তদন্তে মাত্র ১ হাজার দু’জন শ্রমিক কাজ করেছেন বলে তথ্য উঠে এসেছে। বিডিও বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য দাবি করেছেন, “দু’টি কাজেই দুর্নীতি হয়েছে বলে তদন্তে নেমে আমরা প্রমাণ পেয়েছি। তাই দুই সুপারভাইজর-সহ পঞ্চায়েত প্রধান ও নির্মাণ সহায়কের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছি।”

উল্লেখ্য, রাধামোহনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৯টি আসনের মধ্যে ১০টি আসন রয়েছে তৃণমূলের দখলে। ন’টি সিপিএমের। অভিযুক্ত পঞ্চায়েত প্রধান অঞ্জনাদেবীকে ফোন করা হলে তাঁর স্বামী রামপ্রসাদ দাস ফোন ধরে জানান, তাঁর স্ত্রী বাড়িতে নেই। ১০০ দিনের প্রকল্পে ওঠা অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি দাবি করেন, “কিছু শ্রমিকের নাম মাস্টাররোলে থাকলেও তাঁরা কাজ করতে করতে মারা গেছেন। এটা সুপারভাইজারের গাফিলতি।” একই ব্যক্তি সুপারভাইজর ও শ্রমিক হয়ে কাজ করেন কী ভাবে? এর অবশ্য সদুত্তর মেলেনি। তিনি বলেন, “আমার স্ত্রী দোষী নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন