Dinhata

WB Municipal Election 2022: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পর পর পুরসভা দখল, প্রশ্ন উঠছে তৃণমূলের অন্দরেই

তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য প্রকাশ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের বিষয়টিকে বিরোধীদের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক দুর্বলতা হিসাবেই উল্লেখ করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৫:৪৯
Share:

দিনহাটায় পুরসভার নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের পরে তৃণমূল কর্মীদের বাজি পটকা ফাটিয়ে উল্লাস। ছবি: সুমন মণ্ডল

মনোনয়নপর্বেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনটি পুরসভার ‘রাজনৈতিক ভাগ্যনির্ধারণ’ হয়ে যাওয়ায় ফের গাজোয়ারির অভিযোগ উঠেছে শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। সাইঁথিয়া, বজবজ এবং দিনহাটা পুরসভা দলের হাতে এলেও এ নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু করেছে শাসকদলের শীর্ষ নেতৃত্বও।

Advertisement

বিরোধীদের অভিযোগ তো বটেই, চর্চা শুরু হয়েছে তৃণমূলেরই তরুণ প্রজন্মের এক নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্যের ফেসবুক পোস্ট ঘিরে। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত এই নেতা দেবাংশু লিখেছেন, ‘প্রয়োজনে বিধানসভা ভোটের দ্বিগুণ কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হোক।’ মনোনয়নপর্বেই তিনটি পুরসভায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দলের জয়ের পরে দেবাংশুর এই মন্তব্যে স্পষ্টতই আঙুল তোলা হয়েছে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পুরসভা জয়ের দিকে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের পাশাপাশি বোলপুরে মনোনয়নের আগে ১২ বিজেপি প্রার্থীকে আটকে রাখার বিষয়টি নিয়েও আলোড়ন হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, পুলিশে জানানো হলেও তৃণমূলের হাত থেকে ১২ জনকে উদ্ধার করতে এক জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে পাঠানো হয়েছিল।

তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য প্রকাশ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের বিষয়টিকে বিরোধীদের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক দুর্বলতা হিসাবেই উল্লেখ করেছেন। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিধানসভা ভোটে ৩৮ শতাংশ ভোট পেয়ে খুব উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন বিরোধীরা। কিন্তু তার পরে গত সাত- আট মাস ধরে অন্তর্দলীয় কোন্দল ছাড়া আর কিছু করেনি। মানুষের কোনও কাজে আসেনি। দল ভেঙে দল গড়লে প্রার্থী পাওয়া যায় না। দলই থাকে না।’’

Advertisement

রাজ্যে পুরভোট নিয়ে চর্চা শুরুর সময়ই শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘ্ন ভোটপর্বের কথা ঘোষণা করেছিলেন অভিষেক। কিন্তু কলকাতা পুরসভায় সেই আশ্বাস সকলকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। এ বার চারটি কর্পোরেশন এবং ১০৮ পুরসভা ভোটের মুখে তিনটি জায়গায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় নিয়ে ফের তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ ‘ক্ষোভ’ সামনে চলে এল। দেবাংশু আরও লিখেছেন, ‘আর এক বার ২০১৮ হলে আর একটা ২০১৯ কিন্তু সময়ের অপেক্ষা। বার বার সবটা ২০২১ হবে না।’ প্রসঙ্গত, তৃণমূলের একাংশ মনে করেন ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে গাজোয়ারির ফলেই ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপি ১৮টি আসন পেয়েছিল। দেবাংশু লিখেছেন, ‘কিছু স্বার্থান্বেষী বদমায়েশের জন্য দলের গায়ে কালি লাগাতে দেবেন না।’

পুরনির্বাচনের দলীয় প্রস্তুতি নিয়ে বৃহস্পতিবার সামগ্রিক পর্যালোচনা করেছে তৃণমূল। তাতেই দলের দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাংগঠনিক দায়িত্ব নতুন করে বণ্টন হয়েছে। বুধবার এই জেলার কোঅর্ডিনেটর পদ থেকে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে অব্যাহতি দিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল জেলার বিধায়ক সওকত মোল্লা এবং দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে। কিন্তু তৃণমূলনেত্রী চান অরূপ এই দায়িত্বে থাকুন। তাই তাঁকে ফের এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অরূপ পূর্ব বর্ধমানের কোঅর্ডিনেটর হিসাবেও কাজ করবেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় তাঁর সঙ্গে থাকবেন দলের জেলা সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী, সওকত এবং কুণাল। পূর্ব বর্ধমানের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েতমন্ত্রী পুলক রায়কে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন