তৃণমূল-বিরোধিতা জারি থাক, আশ্বাস রাহুলের

দলের মধ্যে মনোমালিন্য যা-ই থাক, রাজ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কর্মসূচি অব্যাহত রাখারই পরামর্শ দিলেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের আশঙ্কা, কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব যদি আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি সহানভূতিশীল হয়ে ওঠেন, তা হলে বাংলায় দলের অবশিষ্ট সংগঠনটুকুও ভেঙে পড়বে!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:২৮
Share:

দলের মধ্যে মনোমালিন্য যা-ই থাক, রাজ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কর্মসূচি অব্যাহত রাখারই পরামর্শ দিলেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের আশঙ্কা, কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব যদি আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি সহানভূতিশীল হয়ে ওঠেন, তা হলে বাংলায় দলের অবশিষ্ট সংগঠনটুকুও ভেঙে পড়বে! কর্মীরা নাম লেখাবেন বিজেপি-তে। তাঁকে আশ্বস্ত করে রাহুল বলেছেন, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রধান বিরোধী দলের কার্যকলাপে ঢিলে দেওয়ার কোনও কারণ নেই।

Advertisement

নরেন্দ্র মোদীর নোটবন্দির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দিল্লিতে যখন রাহুলের পাশে বসে সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন মমতা, তার পরে দলের সহ-সভাপতির সঙ্গে দেখা করে একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। রাজ্যে তৃণমূল-বিরোধিতায় ভাঁটা পড়লে কংগ্রেসের পক্ষে যে দল ধরে রাখাই মুশকিল, এই প্রশ্নে অধীরবাবু ও মান্নানের মতের কোনও ফারাক নেই। রাহুল সেই সময়ে অধীরবাবুকে বলেছিলেন, রাজ্যে তাঁদের কর্মসূচি চালিয়ে যেতে। দিল্লিতে শুক্রবার মান্নান দেখা করতে গেলে রাহুল জানতে চেয়েছেন, উত্তরপ্রদেশের সাফল্যের পরে বাংলাতেও বিজেপি-র তৎপরতা বেড়েছে কি না? মান্নান ব্যাখ্যা করেছেন, নারদ-কাণ্ডে আদালত সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পরেও তৃণমূল নেতারা যদি বেঁচে যান, তা হলে কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দলের আঁতাঁত মানুষকে বোঝাতে কংগ্রেসের সুবিধা হবে। নানা কেলেঙ্কারিতে তৃণমূল দলটাই এক দিন ভেঙে পড়বে! আর আঁতাঁত করলে বিজেপি-ও রাজ্যে কিছু করতে পারবে না। কিন্তু তৃণমূলের সঙ্গে বোঝাপড়া করলে কংগ্রেসের কর্মীরা বিজেপি-কে মমতার আসল প্রতিদ্বন্দ্বী ভেবে গেরুয়া শিবিরে ভিড়ে যাবেন।

আরও পড়ুন:মোদীকে চাপ, ধর্নায় রাহুল

Advertisement

রাহুল বিরোধী দলনেতাকে বলেছেন, রাজ্যে নিজেদের রাজনৈতিক কর্মসূচি চালিয়ে যেতে। তবে কংগ্রেসের একটি সূত্রের মতে, এআইসিসি আসলে চাইছে পশ্চিমবঙ্গে দলকে অন্তত দর কষাকযির জায়গায় রাখতে। যাতে ভবিষ্যতে তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতার প্রয়োজন হলেও মমতা একতরফা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে না পারেন।

রাহুলের আশ্বাস নিয়েই নারদ-কাণ্ডে আজ, শনিবার আবার নতুন উদ্যমে অধীরবাবুর নেতৃত্বে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর কাছে দরবার করতে যাচ্ছে কংগ্রেস। এই প্রশ্নে বিরোধী দলনেতা ও প্রদেশ সভাপতির মধ্যে যে সংঘাত বেধেছিল, দু’জনে কথা বলে তা মিটিয়ে নিয়েছেন। এআইসিসি-র তরফে রাজ্যে কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক সি পি জোশীর সঙ্গেও এ দিন দেখা করেন মান্নান। অধীরবাবুর সঙ্গেও তাঁর কথা হয়েছে। মান্নান বলেন, ‘‘প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি এবং পরিষদীয় দল, কেউ কারও কাজে হস্তক্ষেপ করে না। আমরা যা করছি, কংগ্রেসের স্বার্থেই।’’ অধীরবাবুর বলেন, ‘‘সারদা বা নারদ, যে সব হাতিয়ার এখন হাতে পেয়েছি, তাতে মান্নানের ভূমিকা তো অস্বীকার করা যায় না!’’ আর জোশীর বক্তব্য, ‘‘কোথাও কোনও সমস্যা নেই। আমাকেও কেউ কারও বিরুদ্ধে নালিশ জানাননি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন