রাহুলকে জোট বোঝাতে তৈরি অধীররা

ডাক পাঠালেন রাহুল গাঁধী। বিধানসভা ভোটে সম্ভাব্য জোট নিয়ে কথা বলতে আগামী মাসের প্রথম দিনে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। এবং সেখানে রাজ্য নেতারা বামেদের সঙ্গে জোটের পক্ষে জোরদার সওয়াল করবেন বলেই খবর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৬ ০৩:৫৬
Share:

ডাক পাঠালেন রাহুল গাঁধী। বিধানসভা ভোটে সম্ভাব্য জোট নিয়ে কথা বলতে আগামী মাসের প্রথম দিনে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। এবং সেখানে রাজ্য নেতারা বামেদের সঙ্গে জোটের পক্ষে জোরদার সওয়াল করবেন বলেই খবর।

Advertisement

শুক্রবার দুপুরে পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত নেতা সি পি জোশীর দফতর থেকে তলবি ফোন আসার পরেই প্রদেশ নেতাদের তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে। এর আগে প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী তো বটেই, প্রদীপ ভট্টাচার্য, সোমেন মিত্রর মতো নেতারা কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখা করে বামেদের সঙ্গে জোট করার পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, নিচুতলার কর্মীরাই এই জোট চাইছেন। এবং সেটা হলে বিপাকে পড়বেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন না, বাম-কংগ্রেসের মিলিত ভোট অনেক কেন্দ্রেই তৃণমূলের ভোটকে হয় ছাপিয়ে যাবে, না হয় ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলবে। ওমপ্রকাশ মিশ্র সনিয়ার কাছে হিসেব কষে বলেছেন, জোট হলে কংগ্রেস ও বাম মিলে অন্তত ১৭০টি আসন জিততে পারে। প্রদেশ নেতৃত্বের মতে, জোট নিয়ে কথা শুরু হতেই মমতা-সহ তৃণমূল নেতারা যে ভাবে তার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন, সেটা থেকেই স্পষ্ট যে বাম-কংগ্রেস বোঝাপড়া নিয়ে তাঁদের যথেষ্ট চিন্তা রয়েছে।

তবে দিল্লি কংগ্রেসের কিছু নেতা ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে তৃণমূলের সঙ্গে জোটের পক্ষে। তাঁদের যুক্তি, বিজেপি-বিরোধী লড়াইয়ে তুলনায় বেশি শক্তিধর তৃণমূলের হাত ধরাই যুক্তিযুক্ত। অধীরদের পাল্টা বক্তব্য, তৃণমূলের সঙ্গে জোট হলে পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের যেটুকু শক্তি রয়েছে, তা-ও মুছে যাবে। কারণ, জোট নিয়ে যে হেতু বামেদেরও আগ্রহ রয়েছে তাই তাদের সঙ্গে ‘সম্মানজনক’ সন্ধি সম্ভব। কিন্তু মমতা কিছুতেই কংগ্রেসকে বেশি আসন দেবেন না। উল্টে ভোটের পরে কংগ্রেস ভাঙানোর খেলায় নেমে পড়তে পারে তৃণমূল। তাঁরা আরও বলছেন, তৃণমূলের অন্তর্কলহ তুঙ্গে। টিকিট না-পেলে অনেকেই কংগ্রেসে আসতে পারেন। তৃণমূলের সঙ্গে জোট হলে এই রক্তক্ষরণের ফায়দা তোলা যাবে না।

Advertisement

হাইকম্যান্ডের প্রশ্নও তৈরি। বামেদের সঙ্গে গেলে কংগ্রেসে ভাঙন ধরবে না তো? প্রদেশ নেতাদের পাল্টা যুক্তি, কিছু বিধায়ক জেতার অঙ্কে তৃণমূলের সঙ্গে জোটের পক্ষে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে চলবেন সবাই। যেমন, প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি মানস ভুঁইয়া ‘একলা চলো’-র সওয়াল করলেও জানিয়েছেন, হাইকম্যান্ডের কথাই তাঁর কাছে চূড়ান্ত। তবে মুর্শিদাবাদ, মালদা বা উত্তর দিনাজপুরের মতো কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটিতে আসন ভাগের অঙ্ক কী হবে, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন প্রদেশ নেতারা।

জোট নিয়ে যুক্তি-তর্ক যা-ই হোক, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন সনিয়া-রাহুলই। আর অধীরবাবুর কথায়, ‘‘আমাদের কাজ হল, কর্মীদের থেকে যা মতামত পাচ্ছি, তা রাহুল গাঁধীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন