মোদী সরকারের জমি বিল থেকে রিয়েল এস্টেট বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগঠিত করতে বিভিন্ন রাজ্যে সফর করছেন কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী। উত্তর প্রদেশ, কেরল, মধ্যপ্রদেশ সফরের পরে আজ, শনিবার তিনি আসছেন পশ্চিমবঙ্গে। কলকাতায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আজ দুপুরে তিনি কর্মিসভা করবেন। তার আগে হুগলির রিষড়ায় একটি চটকলের শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলতে যাবেন রাহুল।
রাহুলের আজকের সফর ঘিরে ভাঙন-বিধ্বস্ত রাজ্য কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত। ২০১৬র বিধানসভা ভোটকে সামনে রেখে রাহুলের আজকের কর্মিসভা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন দলের অধিকাংশ নেতা-কর্মী। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী শুক্রবার বলেন, ‘‘আমাদের দলের সহ-সভাপতির এই কর্মিসভা বাংলার কংগ্রেস কর্মীদের দলকে রাজ্য রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক করে তুলতে উদ্বুদ্ধ করবে।’’
আজ সকাল সাড়ে নটা নাগাদ দিল্লি থেকে কলকাতায় এসে পৌঁছবেন রাহুল। সেখান থেকে তিনি সোজা যাবেন হুগলির রিষড়ায় ওয়েলিংটন জুট মিলে। অধীর জানান, বাংলার ১৭টি চটকল বন্ধ। চালু যে সমস্ত চটকল রয়েছে, তার শ্রমিকরা কী অবস্থায় রয়েছেন তা নিজে জেনে নিতে চান। রিষড়ার ওই চটকলে গিয়ে শ্রমিকের সঙ্গে রাহুল কথা বলবেন জানিয়ে অধীর বলেন, ‘‘এটাকে বলা হচ্ছে ‘চৌপাল’। শ্রমিকদের সঙ্গে আমাদের নেতার প্রশ্নোত্তর পর্ব হবে।’’
ওই কর্মসূচির কড়া সমালোচনা করেছে রাজ্য বিজেপি। দলের এক মাত্র বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘রাজ্যের পাটশিল্পের চরম সর্বনাশ করেছে কংগ্রেসের নেতৃত্বের ইউপিএ সরকার। চিনি-সহ বিভিন্ন শিল্পে চটের বস্তার ব্যবহার কমিয়ে দিয়ে পাটের বাজার নষ্ট করেছে। এখন কুম্ভীরাশ্রু বর্ষণ করতে রাহুল জুটমিলের শ্রমিক মহল্লায় যাচ্ছেন।’’
রিষড়া থেকে রাহুল সোজা কলকাতায় আসবেন বলে জানিয়েছেন অধীর। কলকাতায় কর্মিসভা যাওয়ার আগে কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের অতিথিশালায় ‘হাউস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনে’র প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাঁর আলোচনার কথা আছে। দুপুর দু’টো নাগাদ তিনি যাবেন নেতাজি ইন্ডোরে। সেখানে কর্মিসভা বিকেল সাড়ে চারটে শেষ করেই রাহুল দিল্লি উড়ে যাবেন বলে অধীর জানিয়েছেন।
রাহুলের এই ঝটিকা সফরকে নিয়ে উৎসাহী কংগ্রেস শহর জুড়ে নানা হোর্ডিং, ব্যানার লাগিয়েছে। কিন্তু অধীরের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল শাসিত কলকাতা পুরসভা রাহুলের কলকাতায় আসা পছন্দ করছেনা। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খুশি করতে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় আমাদের ব্যানার, হোর্ডিং পুরসভার কর্মীদের দিয়ে খুলিয়ে দিচ্ছেন।’’ তবে মেয়র জানান, রবীন্দ্রসদন থেকে ডালহৌসি এবং এস এন ব্যানার্জী রোড থেকে স্ট্রান্ড রোড পর্যন্ত এলাকায় হোর্ডিং লাগানো নিষিদ্ধ। গত ৫ বছর ধরে ওই নিষেধা়জ্ঞা রয়েছে। তাই কোনও হোর্ডিং, বড় ফেস্টুন লাগালে পুলিশ এবং পুরসভার লোকেরা খুলে দেয়। মেয়রের কটাক্ষ, ‘‘অধীরবাবু বোধহয় সে বিষয়ে অবগত নন। তাঁর অজ্ঞতা থাকলে আমি আর কী করব?’’