পরিচয়পত্র পরীক্ষার সময় এক যাত্রীর সঙ্গে সিভিক ভলান্টিয়ারের বচসা বেধেছিল। যাত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন এক সহযাত্রী। অভিযোগ, সেই রোষেই ওই সহযাত্রীকে মারধর করেন রেলের সিভিক ভলান্টিয়ার।
শনিবার দুপুরে খড়্গপুর স্টেশনের এই ঘটনায় শাহজাহান আলি নামে ওই যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে প্রথমে রেল হাসপাতাল ও পরে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত পর্যন্ত জিআরপি থানায় লিখিত অভিযোগ হয়নি। তবে প্রহৃতের সঙ্গে কথা বলে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্ত শুরু করেছে খড়্গপুর জিআরপি থানা। জিআরপির এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এক জন সিভিক ভলান্টিয়ার এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। বাকিরা তাঁকে আটকানোর চেষ্টা করে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ইতিমধ্যে অভিযুক্তকে ক্লোজ করা হয়েছে।’’
মাস দেড়েক আগে মধ্যপ্রদেশে কাঠের কাজ করতে গিয়েছিলেন ডেবরার বলভদ্রপুরে বাসিন্দা শাহজাহান। সঙ্গে ছিলেন তাঁর দাদা শেখ সাদ্দাম আলি, পড়শি তাহির মল্লিক-সহ ন’জন। এ দিন তাঁরা বাড়ি ফিরছিলেন। দুপুরে মুম্বই-হাওড়া গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেসে খড়্গপুরে পৌঁছয়। স্টেশন থেকে বেরিয়ে বাস ধরতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁদের। তবে শাহজাহানের অভিযোগ, ট্রেন থেকে নামার পরেই এক সিভিক ভলান্টিয়ার তাহিরের পরিচয়পত্র দেখতে চান। কিন্তু ব্যাগে থাকা পরিচয়পত্র দেখাতে দেরি হওয়ায় তাহিরের সঙ্গে বচসা বেধে যায় ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের। সেই সময় তাহিরকে সমর্থন করেন শাহজাহান। তাহিরকে নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। অভিযোগ, এতেই ক্ষুব্ধ হন ওই সিভিক ভলেন্টিয়ার। ফোন করে আরও কয়েকজন সিভিক ভলান্টিয়ারকে ডেকে এনে শাহজাহান-সহ অন্যদের জিআরপি থানায় নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ। সেখানে বাকিদের বাইরে রেখে শাহজাহানকে ভিতরে নিয়ে যান অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার। কিছু ক্ষণ পরে শাহজাহান সংজ্ঞা হারান। তাঁর সঙ্গীদের খবর দেয় অন্য সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। অসুস্থ শাহাজাহানকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। বিকেলে শাহজাহান বলেন, “ওই সিভিক ভলান্টিয়ারেরা থানায় নিয়ে গিয়ে গালিগালাজ করে টাকা চাইছিল। সেখানে অন্য পুলিশকর্মী ও মহিলা পুলিশকর্মী ছিলেন। আমি প্রশ্ন করলে ওই সিভিক ভলান্টিয়ার মারধর শুরু করে। বুকে ঘুষি মারায় জ্ঞান হারাই।”
গত ২৪ জুন ঝাড়গ্রাম স্টেশনে আরপিএফের মারধরে গুরুতর জখম হয়েছিলেন খড়্গপুরের বাসিন্দা রেলযাত্রী দেবদাস কুণ্ডু। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৯ জুলাই মৃত্যু হয় তাঁর। এই ঘটনায় দেহ ফেলে রেখে বিক্ষোভ হয়েছিল ডিআরএম বাংলোয়। অভিযোগ উঠেছিল, টাকার দাবিতে আরপিএফ কর্মীরা মারধর করেছিল দেবদাসকে।