সব জমি হাতে না পেলে লাইন পাতবে না রেল

রেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এ বার থেকে নতুন লাইন তৈরির পরিকল্পনার সময়েই ৭০% জমি পাওয়ার লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারকে। বাজেটে সেই প্রকল্প ঘোষণার পর বাকি জমির নিশ্চয়তা চাই। একমাত্র তবেই নতুন লাইন পাতার কাজ শুরু হবে।

Advertisement

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:০৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

ফেলো কড়ি মাখো তেল।

Advertisement

রেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এ বার থেকে নতুন লাইন তৈরির পরিকল্পনার সময়েই ৭০% জমি পাওয়ার লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারকে। বাজেটে সেই প্রকল্প ঘোষণার পর বাকি জমির নিশ্চয়তা চাই। একমাত্র তবেই নতুন লাইন পাতার কাজ শুরু হবে।

নতুন লাইন পাতার কাজে অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে সম্প্রতি রেলকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন রেলমন্ত্রী পীষূষ গয়াল। সেখানে এক রেলকর্তা জানান, গত ১০-১৫ বছরে নতুন লাইন পাতার যত প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, জমির অভাবে তার একটা বড় অংশের কাজ এখনও শেষ হয়নি! সবচেয়ে খারাপ অবস্থা পশ্চিমবঙ্গের।

Advertisement

থমকে লাইন

দক্ষিণ-পূর্ব রেল

• চাঁপাডাঙা-তারকেশ্বর • আমতা-বাগনান • জঙ্গিপাড়া-ফুরফুরা

• কাঁথি-এগরা • বোয়াইচণ্ডী-আরামবাগ

পূর্ব রেল

• কামারপুকুর-ময়নাপুর • আজিমগঞ্জ-জিয়াগঞ্জ • নামখানা-চন্দননগর
• হাসনাবাদ-হিঙ্গলগঞ্জ • বেলানগর-বালি-লিলুয়া

ওই কর্তার কথায়, রেললাইন পাততে লম্বা ফালি জমি দরকার, যা অধিগ্রহণ না-করে পাওয়া যায় না। কিন্তু সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রামের ঘটনার পর জমি অধিগ্রহণ করা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ফলে প্রতি বছর প্রকল্প খরচ ১০ থেকে ১৫% বেড়ে যাচ্ছে, কিন্তু কাজ শেষ হচ্ছে না! তাই রেল বোর্ডের এই নতুন সিদ্ধান্ত, যার খুঁটিনাটি এখন চূড়ান্ত হওয়ার অপেক্ষায়।

রেল বোর্ড ঠিক করেছে, নতুন লাইন পাতার পরিকল্পনা হলেই কত জমি লাগবে, তার উল্লেখ-সহ বিস্তারিত রিপোর্ট বা ডিপিআর তৈরি করে ফেলতে হবে। জমির লিখিত আশ্বাস চাওয়া হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের থেকে। রাজ্য তখনই ৭০% জমি দেওয়ার লিখিত আশ্বাস দিলে বাজেটে প্রকল্পটি ঘোষণা করা হবে। কাজ শুরুর আগে বাকি ৩০% জমি দেওয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে রাজ্যকে। রেল জানিয়েছে, রাজ্যের প্রতিশ্রুতি কতটা বাস্তবসম্মত— প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে তা খতিয়ে দেখবেন রেলের সংশ্লিষ্ট জোনের জেনারেল ম্যানেজার। কিন্তু তার পরেও যদি রাজ্য জমি দিতে অপারগ হয়? রেলের ওই কর্তা জানান, সে ক্ষেত্রে কী হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।

রেলকর্তারা জানাচ্ছে, এত দিন স্থানীয় চাপ, জনপ্রতিনিধিদের আব্দার অথবা রেল নিজে মনে করলেই লাইন পাতার প্রকল্প বাজেটে ঘোষণা করে দেওয়া হতো। তার পর হতো সমীক্ষা এবং ডিপিআর তৈরির কাজ। শেষে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকের কাছে গেজেট নোটিফিকেশন পাঠিয়ে দেওয়া হতো। তার পরে জমি চিহ্নিত করে শুরু হতো অধিগ্রহণ। ওই কর্তাদের কথায়, ‘‘বছর দশেক আগেও লাইন পাততে জমির সমস্যা তেমন হতো না। এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পাল্টে গিয়েছে। তাই আগে থেকে প্রকল্প ঘোষণা করে রেল আর অর্থ ও সময় নষ্ট করতে রাজি নয়।’’

কিন্তু চালু প্রকল্পগুলির কী হবে? সূত্রের খবর, বোর্ড ঠিক করেছে, কাজ না হলে প্রয়োজনে আর্থিক ক্ষতি স্বীকার করেও প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়া হবে। সূত্রের খবর, জমির কারণে এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে কী কী প্রকল্প আটকে রয়েছে— তার তালিকা চেয়েছে রেল মন্ত্রক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement