আচমকাই মতিবদল সাগরের অতিথির!
মায়ানমারের দিকে ছুটে যাওয়া অতিগভীর নিম্নচাপটি সোমবার ওড়িশা-বাংলা উপকূলের দিকে মুখ ঘুরিয়েছে। আজ, মঙ্গলবার সে ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নেবে বলে মনে করছেন আবহবিদেরা। ফলে সেই হবু ঘূর্ণিঝড় মায়ানমারের বদলে ওড়িশা-বাংলা উপকূলের দিকে চলে আসবে। এর ফলে দীপাবলীর আকাশে বৃষ্টির আশঙ্কা করছে হাওয়া অফিস। আবহাওয়া দফতরের একটি সূত্রের দাবি, বৃহস্পতিবার থেকেই উপকূলীয় এলাকাগুলিতে বৃষ্টি শুরু হতে পারে।
পুজোর সময় হামলা চালিয়েছিল জোড়া ঘূর্ণাসুর। নবমীর রাতে বৃষ্টিতে নাকানিচোবানি খেতে হয়েছিল অনেককে। এ দিন থেকেই শহরের নানা প্রান্তে বাজি বাজার শুরু হয়েছে। কিন্তু এ বার কালীপুজো, দিওয়ালিতে এই নয়া ঘূর্ণাসুর হানা দিলে সেই বাজারের বাজি ফাটিয়ে মজা মিলবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
বঙ্গোপসাগর, আন্দামান সাগর এবং আরব সাগরের এলাকায় ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে এই অঞ্চলের আটটি দেশ পালা করে নাম দেয়। সেই পালা অনুযায়ী এ বার মায়ানমারের নাম দেওয়া পালা। সেই অনুযায়ী, হবু ঘূর্ণিঝড়ের নাম হয়েছে ‘কিয়ান্ত’।
উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে এ দিন মৌসম ভবন জানিয়েছে, আন্দামান ও মায়ানমারের মাঝে অতিগভীর নিম্নচাপটি অবস্থান করছে। ঋতু বদলের সময় হওয়ায় তার মতিগতিও চট করে বোঝা যাচ্ছে না। এর আগে বিজ্ঞানীরা মনে করেছিলেন, এ দিনই হয়তো ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নেবে অতিগভীর নিম্নচাপটি। তেমনটা হয়নি। বরং বঙ্গোপসাগরের উপরে ধীরে ধীরে শক্তি বাড়াচ্ছে সে এবং মায়ানমারের দিক থেকে ক্রমশ তার অভিমুখ ঘুরছে ওড়িশা-বাংলা উপকূলের দিকে। মৌসম ভবনের ঘূর্ণিঝড় বিভাগের অধিকর্তা মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানান, আবহাওয়ার অস্থিরতা থাকলে ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ বদলে যেতে পারে। কিন্তু এই ঘূর্ণিঝড় কবে কোথায় আছড়ে পড়বে এবং তার প্রভাবে কোন কোন এলাকায় দুর্যোগ হবে, তা এ দিন স্পষ্ট করে বলেনি মৌসম ভবন। মৃত্যুঞ্জয়বাবুর কথায়, ‘‘ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার পরেই তার আছড়ে পড়ার জায়গা এবং দাপট নির্দিষ্ট ভাবে বলা সম্ভব।’’ যদিও আলিপুর আবহাওয়া দফতরের বিজ্ঞানীদের মতে, ঘূর্ণিঝড়টি ওড়িশা উপকূলের দিকেই যাবে এবং তার প্রভাবে বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।
আবহবিদদের কেউ কেউ মনে করছেন, এই পূর্বাভাসও বদলে যেতে পারে। কারণ, অস্থির আবহাওয়ার জন্য অভিমুখ ফের বদলে গেলে ঘূর্ণিঝড়টি সরাসরি চলে আসতে পারে পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে। সে ক্ষেত্রে দীপাবলীর সন্ধ্যায় দুর্যোগের আশঙ্কা কিন্তু ষোলো আনা!