West Bengal News

হাসপাতালের পথ আটকে গুলিবিদ্ধ রাজেশের ক্ষতস্থানে আঘাত! চাঞ্চল্যকর দাবি বিজেপির

বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘এখানে এসে জানতে পারলাম, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রাজেশকে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন রাস্তাতেই ফের হামলা হয়। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা রাজেশের ক্ষতস্থানে আঘাত করতে থাকে বলে জানতে পেরেছি। ওই রকম নৃশংস হামলা না হলে রাজেশকে হয়তো বাঁচানো যেত।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৫:৩৩
Share:

মৃত রাজেশ দাসের মাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালের পথে ফের হামলা না হলে বেঁচে যেতেন রাজেশ সরকার। ইসলামপুরে পৌঁছে রবিবার এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলল বিজেপির প্রতিনিধি দল।

Advertisement

মুকুল রায় এবং প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল রবিবার সকালে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে পৌঁছয়। যে গ্রামে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে, বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ সেই দাড়িভিটে পৌঁছন বিজেপি নেতারা। প্রতিনিধি দলে মুকুল রায় এবং প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও ছিলেন সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। ছিলেন বিজেপির স্থানীয় সাংগঠনিক জেলা কমিটির সভাপতি শঙ্কর চক্রবর্তীও। গুলিতে নিহত রাজেশ সরকার এবং তাপস বর্মনের বাড়ি গিয়ে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি নেতারা।

বিজেপি প্রতিনিধি দল যে এলাকায় আজ যাবে, সে খবর ইসলামপুরেও ছিল। ফলে আশপাশের গ্রামের লোকজনও ভিড় জমিয়েছিলেন বিজেপির প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করার জন্য। তবে দাড়িভিটে বিজেপির প্রতিনিধি দলকে ঘিরে এদিন মহিলাদের ভিড়ই বেশি দেখা গিয়েছে। লকেট এদিন বলেন, ‘‘পুলিশ এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে, বাড়ি বাড়ি হানা দিয়ে পুরুষ সদস্যদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে। সেই কারণে অনেকেই গ্রামছাড়া। তাই এদিনের জমায়েতে মহিলাদেরই বেশি দেখা গিয়েছে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: অর্চনা হত্যাকাণ্ডে নয়া তথ্য, নতুন ‘প্রেমিক’কে খুঁজতে ঝাড়খণ্ড গেল পুলিশ

বিজেপি নেতারা অবশ্য দাড়িভিটে পৌঁছনোর পরে আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেছেন। রাজেশ সরকারের পরিজনদের সঙ্গে কথা বলার পর বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘এখানে এসে জানতে পারলাম, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রাজেশকে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন রাস্তাতেই ফের হামলা হয়। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা রাজেশের ক্ষতস্থানে আঘাত করতে থাকে বলে জানতে পেরেছি। ওই রকম নৃশংস হামলা না হলে রাজেশকে হয়তো বাঁচানো যেত।’’ রাজ্যের শাসক দল এবং মুখ্যমন্ত্রীকে তীব্র আক্রমণ করে জয়প্রকাশ আরও বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামের চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি তৈরি করেছে তৃণমূল। নন্দীগ্রামে যখন হানাহানি চলছে, তখন শোনা গিয়েছিল একটা পক্ষে মাওবাদীরাও মিশে রয়েছে। কিন্তু ইসলামপুরে তেমন কিছুই নেই। ছাত্ররা আন্দোলনে নেমেছিল। তাঁদের উপর গুলি চালানো হল। গুলিবিদ্ধ ছাত্রকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে ফের হামলা করা হল। আর এখন পুলিশ গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে হানা দিয়ে অত্যাচার চালাচ্ছে, ভাঙচুর করছে, সন্ত্রাস কায়েম করার চেষ্টা চালাচ্ছে।’’

মৃত ছাত্রের বাড়িতে বিজেপির প্রতিনিধিরা। —নিজস্ব চিত্র

আরও পড়ুন: স্বচ্ছ ভারত অভিযানের জঞ্জালে লুকিয়ে জেল থেকে পালাল বন্দি

২০ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার গন্ডগোলের পর মৃত রাজেশ সরকারের ভাই এবং বাবাও কার্যত একই অভিযোগ করেছিলেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, রাজেশকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে ফের হামলা করা হয়েছিল। তবে শুরু থেকেই জেলা পুলিশ জানিয়েছে, তাঁদের কাছে কেউ এই ধরনের অভিযোগ জানায়নি। এদিন বিজেপির দাবির পরে পুলিশের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

ইসলামপুর থেকে রবিবারই শিলিগুড়ির উদ্দেশে রওনা দেয় বিজেপির প্রতিনিধি দল। দাড়িভিটের অশান্তিতে যাঁরা জখম হয়েছিলেন, তাঁদের কয়েকজন শিলিগুড়ির হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিজেপির অভিযোগ, চিকিৎসা নিয়েও ‘ছেলেখেলা’ চলছে। তাই জখমদের চিকিৎসার দেখভাল করতেই তাঁরা শিলিগুড়ি যাচ্ছেন বলে জয়প্রকাশ মজুমদার জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন