ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।— ফাইল চিত্র।
বিতর্ক যেন তাঁর পিছু ছাড়ছে না! সদ্যই সিপিএম বহিষ্কার করেছে রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তার পরেপরেই ‘বান্ধবী’র সঙ্গে তাঁর কয়েকটি ঘনিষ্ঠ ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ্যে এসেছিল। তা নিয়েও দেখা দিয়েছিল বিতর্ক। এ সবের রেশ কাটতে না কাটতেই ঋতব্রতের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ আনলেন এক তরুণী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মেল করে তিনি ওই অভিযোগের বিচার চেয়েছেন বলে বালুরঘাটের ওই তরুণীর দাবি। এমনকী, টাকা দিয়ে তাঁর মুখ বন্ধের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ।
ঋতব্রত অবশ্য পাল্টা দাবি করেছেন, তাঁকে ‘প্রলুব্ধ’ করে ও ‘ভয়’ দেখিয়ে দু’দফায় তাঁর কাছ থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা আদায় করেছেন ওই তরুণী। জালিয়াতি ধরে ফেলে তিনি আর টাকা দিতে না চাওয়ায় এখন মনগড়া গল্প সাজিয়ে তাঁর মানহানি করতে নামা হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ। গড়ফা থানায় ওই তরুণীর নামে জোর করে টাকা আদায় ও ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে এফআইআর-ও দায়ের করেছেন সাংসদ। তবে ঠিক কী প্রলোভন বা ভয়ের মুখে সাংসদ পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে রাজি হলেন, তার কোনও ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। ঋতব্রতের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
আরও পড়ুন: ঋতব্রতকে বহিষ্কারেই সায় দিল আলিমুদ্দিন
আরও পড়ুন: যুবনেতার বিদ্রোহে কি মুকুল-যোগ!
বালুরঘাটের ওই তরুণী পেশায় সফ্টঅয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। পেশার প্রয়োজনে বেশ কিছু দিন নেদারল্যান্ডসে ছিলেন তরুণী। সোমবার তাঁর দাবি, আগামী ১৪ অক্টোবর বালুরঘাটে আসতে চান বলে তাঁর মাকেও জানিয়েছিলেন ঋতব্রত। কিন্তু মা জানান, বিয়ে করতে চাইলে আপত্তি নেই। অন্যথায় সাংসদের বালুরঘাটে আসায় তাঁর মা সায় দেননি। তরুণীর অভিযোগ, দীর্ঘ দিন শারীরিক সম্পর্কের পরে এখন বিয়ে করতে সাংসদ নারাজ। এমনকী, অন্য এক জনকে দিয়ে হুমকি এবং মুখ বন্ধ রাখার জন্য তাঁর অ্যাকাউন্টে আড়াই লক্ষ টাকাও দেওয়া হয়েছে বলেও ওই যুবতীর অভিযোগ। যদিও তাঁর বক্তব্য, তিনি টাকা চান না। বিচার চান। উত্তরবঙ্গের পুলিশকর্তাদের বিষয়টি জানানোর পাশাপাশি দিল্লি পুলিশের কাছেও অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে তরুণীর দাবি। যদিও সেই অভিযোগপত্রের বয়ান তিনি প্রকাশ্যে আনেননি। ঋতব্রত নিজের অভিযোগ টুইটে আপলোড করেছেন।
এই ঘটনায় রাজনীতির কলকাঠিও দেখতে পাচ্ছেন ঋতব্রত। সাংসদের দাবি, তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট বার করে নেওয়ার ঘটনা নিয়ে আর না এগোতে এবং দলীয় তদন্ত কমিশনে শুনানির টেপ প্রকাশ না করতে বলা হয়েছিল তাঁকে। চাপে রাখার জন্যই এ ভাবে তাঁর মানহানি করার চেষ্টা শুরু হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ। এফআইআরে তাঁর বক্তব্য, গত বছরের মাঝামাঝি পরিচয় হওয়ার পরে বিপন্ন হিসাবে তুলে ধরেছিলেন ওই তরুণী। দুরারোগ্য ব্যাধির কথাও বলেছিলেন। সাংসদ হিসাবে তাঁকে সব মিলিয়ে পাঁচ লক্ষ টাকা সাহায্য করেছিলেন ঋতব্রত। সম্প্রতি তিনি ওই তরুণীর অভিসন্ধি বুঝতে পেরে আর অর্থ সাহায্যে রাজি না হওয়ায় তাঁর নামে নানা কুকথা বলা শুরু হয়। একটি নাম্বার থেকে ওই তরুণী লাগাতার তাঁকে হুমকি দিচ্ছেন বলেও পুলিশকে জানিয়েছেন ঋতব্রত।