Recruitment Scam

‘কালো গাড়ি করে রাতেও লোক আসত ব্যান্ডেলে শান্তনুর বাড়ি, গত ছ’মাসে রহস্যজনক ভাবে উধাও তাঁরা’

ইডি তদন্তের আবহে শান্তনুর প্রতিবেশী শ্যামল ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, আগে ওই বাড়িতে গাড়ি করে লোকজন যাতায়াত করত। তবে গত ৬ মাসে তিনি কাউকে ওই বাড়িতে আসতে দেখেননি বলেও দাবি করেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ব্যান্ডেল শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৩ ১২:৩৫
Share:

‘কালো গাড়ি করে রাতেও লোক আসতেন শান্তনুর বাড়ি’, বলছেন জেলবন্দি প্রাক্তন যুবনেতার প্রতিবেশী। ফাইল চিত্র।

দিনে রাতে কালো গাড়িতে লোক আসত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যান্ডেলের বালির মোড়ের বাড়িত। কিন্তু গত ছ’মাসে রহস্যজনক ভাবে কাউকে আর দেখা যায়নি। এমনই জানাচ্ছেন ইডি তদন্তের মধ্যে শান্তনুর বৃদ্ধ প্রতিবেশী শ্যামল ভট্টাচার্য। শ্যামলের কথায়, ‘‘দিনে এবং রাতে কালো গাড়ি করে লোকজন আসা-যাওয়া করত এই বাড়িতে। তবে গত ৬ মাসে আর কাউকে ওই বাড়িতে আসতে দেখিনি।’’

Advertisement

শনিবার সকাল থেকেই নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি, রিসর্ট-সহ একাধিক জায়গায় হানা দিচ্ছেন ইডি আধিকারিকরা। ইডি সূত্রে খবর, এই সব সম্পত্তির সঙ্গে নামে এবং বেনামে যোগ রয়েছে শান্তনুর। নিয়োগ দুর্নীতিতে অবৈধ উপায়ে নেওয়া টাকা এই সব সম্পত্তি কিনতে ব্যবহার করা হয়েছে বলেও ইডি সূত্রে খবর। ব্যান্ডেলের বালির মোড়ে কিছু বছর আগে শান্তনু একটি দোতলা বাড়ি কেনেন।

Advertisement

গত জুলাই মাসে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার হন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। একে একে গ্রেফতার হন এসএসসি এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের একাধিক কর্তাব্যক্তি। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ড জনপরিসরে আলাপ-আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। এই ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে ওই বাড়িতে গত কয়েক মাস ধরে লোক না আসার মধ্যে কোনও সংযোগ থাকতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। প্রতিবেশী শ্যামল ভট্টাচার্যের দাবি মোতাবেক, আগে বাড়িটি ‘মজুমদারবাবু’ বলে এক জনের ছিল। কোভিডের আগে ২০১৯ সাল নাগাদ তিনি বাড়িটি বিক্রি করে দেন জানিয়েছেন শ্যামল। বলাগড়ে শান্তনু অতিথিনিবাস তৈরির জন্য জন্য সেখানকার বাসিন্দাদের হুমকি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বহিষ্কৃত তৃণমূল যুবনেতার ব্যান্ডেলের প্রতিবেশী অবশ্য জানাচ্ছেন, জমি বিক্রির জন্য শান্তনু হুমকি দিয়েছেন, এমনটা তাঁর জানা নেই। জমিটা যে শান্তনু কিনেছেন, তা-ও তিনি জানতেন না বলে দাবি করেছেন শ্যামল। তাঁর কথায়, “শুধু এটুকুই জানতাম যে, জেলা পরিষদের আধিকারিক এই বাড়িটা কিনেছেন এবং আনুমানিক ৫০ লক্ষ টাকায় এটি বিক্রি হয়েছিল।” শান্তনু হুগলি জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন।

ওই বাড়িতে কারা আসতেন, তা অবশ্য বলতে পারেননি তিনি। তবে শ্যামল জানিয়েছেন, বাড়িটি মোটের উপর এক রাখলেও তার ভিতরে এবং বাইরে নানা অঙ্গসজ্জা (রিমডেলিং) করা হয়েছিল। শনিবার হুগলির ব্যান্ডেল চার্চের কাছে একটি বাড়ি এবং বলাগড়ের চাদরার একটি রিসর্টে তালা ভেঙে ঢোকেন ইডি আধিকারিকরা। এর পাশাপাশি, তল্লাশি চালানো হচ্ছে ব্যান্ডেলের বালির মোড়ের কাছের দোতলা এই বাড়িটিতেও। এই বাড়িতেও তালা ভাঙার চেষ্টার পর পিছনের দরজা দিয়ে ভিতরে ঢোকেন ইডি আধিকারিকরা। ইডির আরও একটি দল চুঁচুড়ার জগুদাসপাড়ায় শান্তনুর একটি ফ্ল্যাটে হানা দেয় বলেও ইডি সূত্রে খবর। ইডি সূত্রে খবর, কয়েক বছর আগে ত্রিশ লক্ষ টাকায় বালির মোড়ের এই বাড়িটি শান্তনুর স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে কেনা হয়েছিল। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে শান্তনুর গ্রেফতারির পর থেকেই তাঁর এবং তাঁর স্ত্রীর নামে থাকা বিপুল সম্পত্তির হদিস মিলেছে। নামে-বেনামে একাধিক বাড়ি, ধাবা, রেস্তোরাঁ, হোম স্টে, বাগানবাড়ি, ফ্ল্যাটের সন্ধান মিলেছে বলেও সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন