সিন্ডিকেটের সাম্প্রতিক দু’টি বৈঠকে তাঁকে দেখা যায়নি। এ বার ঘনিষ্ঠ মহলে পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী রেজিস্ট্রার রাজাগোপাল ধরচক্রবর্তী। আগেও অবশ্য খোদ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে বেশ কয়েক বার সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী শুক্রবার জানান, রেজিস্ট্রার প্রায়ই তাঁকে জানান যে, বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করতে তাঁর ভাল লাগছে না। ‘‘উপাচার্য, সহ-উপাচার্যই বিষয়টি দেখুন। যদি সেখানে সমাধানসূত্র না-বেরোয়, উনি সিন্ডিকেটের কাছে যেতে পারেন। উনিই তো নিজেই সিন্ডিকেটের আহ্বায়ক। এখানে সরকারের কিছুই করার নেই,’’ বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, তিনি যে সম্মান নিয়ে কাজ করতে পারছেন না, রাজাগোপালবাবু সেটা ঘনিষ্ঠ মহলেও বারে বারেই জানিয়েছেন। ধীরে ধীরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে কোণঠাসা হয়ে পড়ছিলেন। এক আধিকারিক জানান, পরপর সিন্ডিকেটের দু’টি বৈঠকে রেজিস্ট্রারের অনুপস্থিতি বিষয়টিকে আরও স্পষ্ট করে দেয়। নিয়ম অনুযায়ী রেজিস্ট্রারই সিন্ডিকেটের বৈঠক ডাকার অধিকারী। গত সপ্তাহে এবং চলতি সপ্তাহে সিন্ডিকেটের জোড়া বৈঠকে যাননি রেজিস্ট্রার। অথচ তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়-চত্বরে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। ছাত্রছাত্রীদের দোলের অনুষ্ঠানের কাছেও দেখা গিয়েছিল রেজিস্ট্রারকে।
উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার জানিয়েছিলেন, সিন্ডিকেটের বৈঠক সাধারণত বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে। রেজিস্ট্রার তাঁকে জানিয়েছেন, তাঁর শারীরিক অবস্থা এমন যে, তিনি অত সময় থাকতে পারবেন না। বুধবারের সিন্ডিকেট বেলা ১টায় শুরু হয়ে শেষ হয় ৪টের মধ্যে। তা হলে রেজিস্ট্রার ছিলেন না কেন? উপাচার্য তখন জানান, তাঁর কিছু বলার নেই।
উপাচার্য হিসেবে সোনালিদেবী দায়িত্ব নেওয়ার পরে পূর্বতন সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) স্বাগত সেন পদত্যাগ করেন। অভিযোগ উঠেছিল, স্বাগতবাবু বিশ্ববিদ্যালয়-প্রশাসনের অন্দরে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। পরে তাঁকে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
পদত্যাগের অভিপ্রায় কেন? রাজাগোপালবাবুর বক্তব্য জানা যায়নি। বারবার ফোন করেও সাড়া মেলেনি। নিয়ম অনুযায়ী পদত্যাগপত্র পেশ করার কথা উপাচার্যের কাছেই। উপাচার্য এ দিন বলেন, ‘‘আমি কোনও পদত্যাগপত্র পাইনি। তাই এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’