বসিরহাট-বাদুড়িয়ার গোলমাল পাকাতে বাংলাদেশ থেকে জামাতের লোকজন ঢুকেছিল। এবং বিএসএফের নজরদারির শিথিলতার কারণেই তারা এ দেশে ঢুকতে পেরেছিল বলে রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগ নবান্নে রিপোর্ট দিয়েছে। রাজ্য সরকার এই রিপোর্ট কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকেও পাঠাবে বলে নবান্নের শীর্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে।
গোয়েন্দা বাহিনীর দেওয়া এই খবর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আগেই ছিল। বসিরহাট পর্বে তিনি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কয়েকদফা তোপ দেগেছিলেন। সে সময় মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন ছিল, কেন সীমান্তের ওপার থেকে জামাতের লোকজন ঢুকে পড়তে পারল? সীমান্ত রক্ষার দায় তো রাজ্যের নয়।
গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, ৬ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে স্বরূপনগর থানা এলাকার গোবরা, আমুদিয়া এবং কইজুড়ি সীমান্ত পেরিয়ে জামাত বাহিনী এ পারে ঢোকে। গোবরা এবং কইজুড়ি সীমান্তে কাঁটা তারের বেড়া নেই। আমুদিয়াতে বেড়া আংশিক। ওই তল্লাটের পাহারার দায়িত্ব বিএসএফের ৭৬ এবং ১৪৪ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের উপর। ওই এলাকা দিয়ে কীভাবে ৭০-৮০ জনের দল ঢুকে পড়ল কেন্দ্রের কাছে সেই প্রশ্নই করছে। বৃহস্পতিবারই কলকাতায় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ের দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তো বলেছেন বসিরহাটে বিদেশিদের মদত রয়েছে। খাগড়াগড়েও জামাত ছিল। এখানেও আছে বলে তাঁর দাবি। তিনি বরং এনআইএ তদন্ত করান।’’
রাজ্য গোয়েন্দা বাহিনী অবশ্য এও জেনেছে বাংলাদেশ থেকে ইটিন্ডা হয়ে মালঞ্চ ও ভ্যাবলাতে অস্ত্রশস্ত্রও এসেছিল। জামাতের সঙ্গে যোগসাজশে তা এনেছিল শাসক দলের অনুগত কিছু সমাজবিরোধী। মিনাখাঁ, সন্দেশখালি, মালঞ্চ, হাসনাবাদ, গাজিয়াখালি থেকেও বেশ কিছু সমাজবিরোধী জামাতের সঙ্গে একজোট হয়ে গোলমাল পাকিয়েছিল বলেও গোয়েন্দারা খবর পেয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, বাদুড়িয়ার গোলমালের দিন এক শ্রেণির উন্মত্ত জনতার সামনে কয়েকজন সিনিয়র পুলিশ কর্তাকে কার্যত প্রাণভিক্ষা করে জীবন বাঁচাতে হয়। এক কর্তাকে তো কান ধরে ওঠবোস পর্যন্ত করানো হয়। পুলিশ সেই সব ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করছে। এক কর্তা জানাচ্ছেন, বসিরহাট-বাদুড়িয়ায় কারা গোলমাল পাকিয়েছিল তাদের তালিকা তৈরি হচ্ছে। সবার বিরুদ্ধেই কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।