পুলিশে বড় রদবদল, রমেশবাবুকে উত্তরবঙ্গের আইজি করলেন মমতা

বাম আমলের নন্দীগ্রাম-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে যে পুলিশকর্তাকে কাঠগড়ায় তুলেছিল তৎকালীন বিরোধী দল তৃণমূল, সেই এন রমেশবাবুকেই এ বার উত্তরবঙ্গের আইজি-র করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। বর্তমানে তিনি রেল পুলিশের আইজি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৫ ২০:৫০
Share:

বাম আমলের নন্দীগ্রাম-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে যে পুলিশকর্তাকে কাঠগড়ায় তুলেছিল তৎকালীন বিরোধী দল তৃণমূল, সেই এন রমেশবাবুকেই এ বার উত্তরবঙ্গের আইজি-র করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। বর্তমানে তিনি রেল পুলিশের আইজি। তাঁর সহকর্মীদের একাংশের মতে, রেলের নিরাপত্তা-সহ প্রায় সব দায়িত্বই এখন আরপিএফের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে রেল পুলিশের কাজ ক্রমেই কমে আসছে। এই অবস্থায় রেলের আইজি-র চেয়ে গোটা উত্তরবঙ্গের পুলিশ প্রশাসনের দায়িত্ব অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী রমেশবাবুকে সেই পদেই বসালেন।

Advertisement

নবান্ন সূত্রের খবর, নন্দীগ্রাম-কাণ্ডের সময় রমেশবাবু মেদিনীপুর রেঞ্জের ডিআইজি ছিলেন। সিবিআই ওই ঘটনায় যে চার্জশিট পেশ করে তাতে রমেশবাবুর-সহ তিন আইপিএসের নাম নেই। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে জেলা জুড়ে আন্দোলনের হুমকি দেন পূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূল নেতৃত্ব। পরিস্থিতি বিবেচনা করে রাজ্য সরকারও ওই চার্জশিট মান্যতা দিতে অস্বীকার করে। তাই নন্দীগ্রাম-কাণ্ডে রাজ্যের অন্য কয়েকজন পুলিশ অফিসারকে অভিযুক্ত করে তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা শুরুর যে অনুমতি চেয়েছিল সিবিআই, রাজ্য সরকার তা এখনও দেয়নি।

রমেশবাবু যাঁর কাছ থেকে উত্তরবঙ্গ পুলিশের দায়িত্ব নেবেন, সেই জ্ঞানবন্ত সিংহের নাম জড়িয়েছিল রিজওয়ানুর-কাণ্ডে। তার জেরে ওই পুলিশকর্তার পদোন্নতি আটকে দিয়েছিল তৎকালীন বাম সরকার। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেও কলকাতা জুড়ে আন্দোলনে নেমেছিল তৃণমূল। বছর দেড়েক আগে সেই তৃণমূলেরই শাসনকালে পদোন্নতি পান জ্ঞানবন্ত। খুব কম সময়ের মধ্যে প্রথমে ডিআইজি ও পরে আইজি হিসেবে তাঁর পদোন্নতিতে ছাড়পত্র দেন মুখ্যমন্ত্রী। মাস আটেক আগে জ্ঞানবন্তকে উত্তরবঙ্গের আইজি করে পাঠানো হয়। সেখান থেকে এ বার একই রকম গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়ে আসা হল জ্ঞানবন্তকে, পশ্চিমাঞ্চলের আইজি করে।

Advertisement

পশ্চিমাঞ্চলের আইজি সিদ্ধিনাথ গুপ্তকে পাঠানো হল আসানসোল-দুর্গাপুরের কমিশনারের দায়িত্ব দিয়ে। সেখানে ছিলেন অজয় নন্দা। তাঁকে কাউন্টার ইনসার্জেন্সি ফোর্স (সিআইএফ)-এর আইজি করা হয়েছে। এই অজয় নন্দাকেই শাসনকালের গোড়ায় আসানসোল-দুর্গাপুরের কমিশনারের দায়িত্ব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বছর দেড়েকের মধ্যে স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে মতবিরোধে তাঁকে আসানসোল থেকে সরিয়ে মেদিনীপুর রেঞ্জের ডিআইজি করা হয়। অজয় নন্দার স্থানে পাঠানো হয় বিনীত গোয়েলকে। কিন্তু রাজ্য সরকার যখন সারদা-কাণ্ডের তদন্তভার সিআইডি’র হাতে তুলে দিয়েছিল তখন বিনীতকে নিয়ে আসা হয় ওই গোয়েন্দা সংস্থায়। সেই পদে ফের পাঠানো হয় অজয়কে। কিন্তু কেন অজয় নন্দাকে কেন দু-দু’বার আসানসোল-দুর্গাপুরের কমিশনারের দায়িত্ব দেওয়া হল, কেনই বা সেখান থেকে সরিয়ে কার্যত গুরুত্বহীন পদ সিআইএফের আইজি করা হয়, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নবান্নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন