আন্দোলন শুরুর সময়ে বিমল গুরুঙ্গের যুক্তি ছিল, তাঁদের উপরে জোর করে বাংলা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানির সময়েও একই যুক্তি দিয়েছিলেন গুরুঙ্গের আইনজীবী। সেই মামলাতেই বিচারপতি এ কে সিক্রি এ দিন মন্তব্য করেন, দার্জিলিং তো বাংলারই অংশ। সেখানে রাজ্য সরকার যদি চায়, লোকে বাংলা ভাষা শিখুক, তা হলে ভুল কোথায়?
বিচারপতি সিক্রির এই মন্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, গত বছর ৮ জুন ভানুভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখানোর সময়ে ‘জোর করে বাংলা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে’ বলেই আওয়াজ তুলেছিলেন গুরুঙ্গ ও তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গরা। যদিও রাজ্য সরকারের যুক্তি ছিল, মোটেও তা করা হয়নি। পাহাড়ে বাংলাকে ঐচ্ছিক ভাষা হিসেবেই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ সবের পরেও গুরুঙ্গের করা মামলায় আজ ওই একই যুক্তি দেন তাঁর আইনজীবী পি এস পাটওয়ালিয়া। তাঁর কথায়, রাজ্য ২০১৭-র জুনে সার্কুলার জারি করে বাংলা আবশ্যিক করে। তার বিরুদ্ধেই আন্দোলন করেছিলেন গুরুঙ্গ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, পাহাড়ে বাংলা আবশ্যিক ভাষা নয়, ঐচ্ছিক। তবে পরীক্ষা না দিলেও বাংলা পড়তে হবে পাহাড়ের মানুষকে। চতুর্থ ভাষা হিসেবে দশম শ্রেণি অবধি বাংলা শিখলে পাহাড়ের ছেলেমেয়েদেরই উপকার হবে। কলকাতা, শিলিগুড়িতে চাকরি করতে গেলে সুবিধা মিলবে। পাটওয়ালিয়া এ দিন জানান, বাংলা ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে গুরুঙ্গ পাহাড়ে আন্দোলন শুরু করার পরেই তাঁকে রাজ্য সরকারের দমনমূলক নীতির বিরুদ্ধে পড়তে হয়। এই অভিযোগ শোনার পরে বিচারপতি সিক্রি যুক্তি দেন, অন্য সব রাজ্যেই তো রাজ্য সরকার একই নীতি নেয়। দার্জিলিং পশ্চিমবঙ্গের অংশ। তা হলে সেখানেই বা কেন বাংলা পড়ানো হবে না? আজ কোর্টে গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে কী কী এফআইআর হয়েছে, তার উল্লেখ করে প্রতিটির বিরুদ্ধে যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করেন পাটওয়ালিয়া।