ফাইল চিত্র।
নবান্নের সামনে দিয়ে গিয়েছে ছ’লেনের বিদ্যাসাগর সেতু। সেতু পেরোলেই হাওড়ার দিকে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে, যা দিল্লি ও মুম্বই রোডে গিয়ে মিশেছে। সেই কোনা এক্সপ্রেসওয়ের উপরে ছ’লেনের ‘এলিভেটেড’ রাস্তা করার জন্য বহু দিন আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। কী ভাবে ওই রাস্তা হবে, কত টাকা খরচ হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরির জন্য কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ সংস্থা রাইটস-কে দায়িত্ব দিয়েছিল প্রশাসন। সেই প্রকল্প-রিপোর্টের সঙ্গে রাইটসের হাইওয়ে ডিভিশন একটি ১৩ মিনিটের ভিডিও প্রোজেকশন তৈরি করেছে। বুধবার নবান্নে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে সেই ভিডিও দেখানো হয়েছে।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, কোনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে মুম্বই রোডের মুখ পর্যন্ত ওই এলিভেটেড রাস্তার দৈর্ঘ্য হবে ৬.৮ কিলোমিটার। এর জন্য খরচ ধরা হয়েছে ১২০০ কোটি টাকার মতো। আগামী জানুয়ারি মাসে দরপত্র ডেকে কাজ শুরু করার মতো সমস্ত কাগজপত্র তৈরি করেছে রাইটস।
রাজ্য পূর্ত দফতর এবং রাইটসের এক পদস্থ কর্তা জানান, বিদ্যাসাগর সেতু তৈরি হওয়ার পরে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক হিসেবে চিহ্নিত হয়। ওই রাস্তার পাশেই রয়েছে সাঁতরাগাছি রেল স্টেশন। সেটিকে টার্মিনাল স্টেশন হিসেবে গড়ে তোলার কাজ হাতে নিয়েছে রেল। টার্মিনাল স্টেশন
তৈরি হলে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের প্রচুর ট্রেন হাওড়ার পরিবর্তে সাঁতরাগাছি স্টেশন থেকে ছাড়বে। তাই ওই স্টেশনের পরিসর বাড়াতে ৪৫০টি গাড়ি রাখার মতো বহুতল পার্কিং প্লাজাও তৈরি করা হচ্ছে। বাড়ানো হচ্ছে প্ল্যাটফর্মের সংখ্যা। বসানো হচ্ছে নতুন লাইন। রাজ্য সরকার সেখানে নতুন একটি বাস টার্মিনাসও তৈরি করছে। তাই সেখানে এলিভেটেড রাস্তা করা ছাড়া উপায় নেই। সে ক্ষেত্রে অতিরিক্ত জমিরও তেমন প্রয়োজন নেই। কাজেই কোনও সমস্যা হবে না।
মুখ্যসচিব মলয় দে-র নেতৃত্বে এ দিনের বৈঠকে পরিবহণ সচিব, পূর্ত সচিব, পূর্ত দফতরের মুখ্য বাস্তুকার, রাইটসের বিশেষজ্ঞেরা ছাড়াও রেল, হাওড়া পুলিশ এবং বিদ্যুৎ দফতরের কর্তারা উপস্থিত ছিলেন। মুখ্যসচিব মলয় দে বৈঠকের মধ্যেই বলেছেন, ‘‘এটা যে হেতু জাতীয় সড়ক সংযোগকারী রাস্তা, তাই কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের কাছেও বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠানো হবে।’’
রাইটসের এক কর্তা বলেন, ‘‘দিন দিন বিদ্যাসাগর সেতুর উপরে গাড়ির চাপ বাড়ছে। সাঁতরাগাছি স্টেশনের কাছে এখনই নিত্যদিন যানজট হচ্ছে। এলিভেটেড রাস্তা তৈরি না হলে ওই যানজটের সমাধান সম্ভব নয়। তাই ওই রাস্তার জন্য ১২০০ কোটি টাকা কেন্দ্রের কাছ থেকেই পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।’’ ডিসেম্বরের শেষ এবং জানুয়ারির প্রথম দিকেই যাতে দরপত্র ডেকে কাজ শুরু করা যায়, তার জন্য রাস্তার পাশ থেকে বিদ্যুতের লাইন, জলের লাইন, আইওসিএল-এর গ্যাসের লাইন সরানোর কাজ শুরু হবে।