প্রতীকী ছবি।
এক বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরোধিতায় রক্তক্ষয়ী আন্দোলন দেখেছে ভাঙড়। সেই আন্দোলনের আঁতুড়ঘরেই এ বার পর্যাপ্ত বিদ্যুতের দাবিতে অবরোধ!
রবিবার সকালে সেই ছবিই দেখা গেল পোলেরহাটের শ্যামনগরে। কম ভোল্টেজ এবং লোডশেডিংয়ে জেরবার হয়ে কয়েকশো গ্রামবাসী সকাল ৯টা থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা লাউহাটি-হাড়োয়া সড়ক অবরোধ করেন। পুলিশ পরিস্থিতি সামলায়।
অবরোধকারীদের অভিযোগ, এই গরমে অধিকাংশ দিন ৪-৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। ভোল্টেজও কম। ফলে, কোনও কাজ করা যাচ্ছে না। গরমে কেউ কেউ অসুস্থও হয়ে পড়ছেন। বিভিন্ন জায়গায় সমস্যা সমাধানের আবেদন করেও সুরাহা না-হওয়ায় এ দিন পথে নেমেছেন।
এ কথা শুনে বিস্মিত এক বিদ্যুৎ-কর্তা। তিনি বলেন, ‘‘যেখানে মানুষ পাওয়ার গ্রিড হতে দেবেন না বলে আন্দোলন করছেন, সেখানেই লোডশেডিংয়ের জন্য অবরোধ! গ্রামবাসী সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করলে এই সমস্যা হতো না।’’
প্রায় শেষের মুখে দেড় বছর ধরে ভাঙড়ের পাওয়ার গ্রিড প্রকল্পটি আন্দোলনের জেরে বন্ধ পড়ে রয়েছে। প্রকল্পটি হলে বিহারের পুর্ণিয়া ও ফরাক্কা থেকে রাজ্যের গ্রিডে অতিরিক্ত ১০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আনা যাবে এবং ভাঙড়-সহ দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনার বিদ্যুৎ পরিষেবার মানও বাড়বে বলে প্রশাসনের কর্তাদের দাবি। এ বার আন্দোলনের আঁতুড়ঘর থেকেই পর্যাপ্ত বিদ্যুতের দাবি ওঠায় প্রশাসনের কর্তারা অবশ্য ততটা বিস্মিত নন। তাঁরা মনে করছেন, আন্দোলন এখন মূলত মাছিভাঙা এবং খামারআইটেই সীমাবদ্ধ। নিরন্তর জনসংযোগে গ্রামবাসীদের ভুল ধারণাও অনেকটাই ভাঙানো গিয়েছে। এ দিনের অবরোধে সামিল এক গ্রামবাসীর কথাতেও সে ইঙ্গিত মিলেছে। তিনি বলেন, ‘‘আন্দোলনের সময়ে নানা কথা উঠেছিল। শুনেছিলাম পাওয়ার গ্রিড হলে মহিলাদের গর্ভ নষ্ট হবে, ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই আপত্তি জানাই। কিন্তু বিদ্যুৎ আমাদের চাই। সরকার সমস্যার সমাধান করুক।’’
তবে, জমি রক্ষা কমিটির দাবি, এ দিনের অবরোধের সঙ্গে সম্পর্ক নেই। কমিটির সদস্য মির্জা হাসান বলেন, ‘‘ট্রান্সফর্মার বসালেই লো-ভোল্টেজ সমস্যা মিটবে। অত সহজে মানুষকে বোকা বানানো যায় না।’’