দুর্ঘটনার পরে। নিজস্ব চিত্র।
বন্ধুর মাসতুতো ভাইয়ের বিয়ের নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে বুধবার গাড়ি ভাড়া করে খড়গপুর থেকে বর্ধমানে যাচ্ছিলেন চার বন্ধু। কিন্তু পথে গুড়াপের মাজিনান সেতুর কাছে পথ দুর্ঘটনায় থেমে গেল তাঁদের মধ্যে তিন জনের প্রাণ। গাড়ির চালক-সহ দু’জন গুরুতর আহত অবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম রঞ্জিত দাস (২৭), বিকাশ জানা (২৪), ঋত্বিক রায় (২৬)। এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ খড়্গপুরের ডিভিসি মার্কেটের মায়াপুর এলাকা থেকে গাড়ি ভাড়া করে রওনা দিয়েছিলেন চার বন্ধু। দুপুর ২টো নাগাদ হুগলির গুড়াপের কাছে কলকাতাগামী একটি ডাম্পারের পিছনে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারে গাড়িটি। স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে এসে গাড়ি থেকে চালক-সহ পাঁচ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় বের করেন। তার পর তাঁদের বর্ধমান মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিন জনকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
খড়গপুর থেকে জানা গিয়েছে, মৃত রঞ্জিৎ দাসের বাড়ি খড়্গপুরের তালবাগিচা হাইস্কুল এলাকায়। আগামী জানুয়ারিতে তাঁর বিয়ে ঠিক হয়েছিল। রঞ্জিতের মাসতুতো ভাইয়ের বিয়েতেই যাচ্ছিলেন তাঁরা। মৃত বিকাশ জানা, ঋত্বিক রায় এবং আহত সৌরভ দে তালবাগিচার ছাতিমতলা ক্লাবের সদস্য। সেই সূত্রেই মাসতুতো ভাইয়ের বিয়েতে তাঁদের নিমন্ত্রণ করেছিলেন রঞ্জিৎ। অটোমোবাইল কোম্পানির কর্মচারী ঋত্বিকের বাড়ি প্রেমবাজার সোসাইটিতে। বছর খানেক আগে তাঁর বাবা মারা গিয়েছেন। ডিভিসি মায়াপুরে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন বিকাশ। এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ বিকাশের সঙ্গে শেষ কথা হয়েছিল হীরক দত্ত নামে এক ক্লাবের সদস্যের। দুর্ঘটনার পর সেই সূত্র ধরেই পুলিশ হীরককে ফোন করে।বর্ধমান মেডিক্যালে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন গুরুতর আহত সৌরভ দে’র মা পুতুলদেবী। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘ঈশ্বরের কৃপা, আমার ছেলেটা বেঁচে আছে। কিন্তু আরও তিনটে ছেলে যে চলে গেল!’’