লক্ষ্য ভোট, তৈরি হচ্ছে আরএসএস

সঙ্ঘ সূত্রের খবর, কোর কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে চরম হিন্দুত্ববাদী বলে পরিচিত হিন্দু জাগরণ মঞ্চের প্রদেশ কার্যকরী কমিটির সদস্য রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

Advertisement

সুস্মিত হালদার

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:৪১
Share:

—প্রতীকী ছবি।

লোকসভা ভোটে নদিয়া জেলার দু’টি আসনে বিজেপির সম্ভবনার কথা মাথায় রেখে নিজেদের হোমওয়ার্ক শুরু করে দিয়েছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)। সঙ্ঘ পরিবারের একাধিক গণ সংগঠনের নেতৃত্বকে নিয়ে তৈরি হয়েছে কোর কমিটি। তাতে বিজেপি থেকে যে দু’জনকে নেওয়া হয়েছে তারাও আরএসএস ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। কৃষ্ণনগরে আলাদা অফিস খোলার পাশাপাশি আরও নানা রকম প্রস্তুতি নেওয়া চলছে।

Advertisement

সঙ্ঘ সূত্রের খবর, কোর কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে চরম হিন্দুত্ববাদী বলে পরিচিত হিন্দু জাগরণ মঞ্চের প্রদেশ কার্যকরী কমিটির সদস্য রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি এই জেলারই লোক। ছ’জনের কমিটিতে রয়েছেন সংগঠনের জেলার সহ-কার্যবাহক প্রবীর বিশ্বাস ও নদিয়া-মুর্শিদাবাদ বিভাগ প্রচারক কর্ণধর দে। রয়েছেন সঙ্ঘের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র জেলা কমিটির প্রমূখ আশিস বিশ্বাসও। বিজেপি থেকে নেওয়া হয়েছে কৃষ্ণনগর উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহাদেব সরকার এবং প্রাক্তন নদিয়া জেলা সভাপতি আশু পালকে। তাঁরা দুজনেই আরএসএস-এর প্রশিক্ষণ পাওয়া। আশু দীর্ঘদিন আরএসএসের সংগঠনের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন।

বিজেপির উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহাদেব সরকারকে কোর কমিটিতে রাখা হলেও ঠাঁই হয়নি দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি জগন্নাথ সরকারের। বিজেপিরই এক অংশের দাবি, নানা কারণে এখন তিনি সঙ্ঘের সুনজরে নেই। সেই কারণেই তিনি বাদ পড়েছেন। যদিও জগন্নাথ নিজে তা মানতে নারাজ। তিনি বলেন, “আমি যত দূর জানি, রানাঘাট কেন্দ্রের জন্য আলাদা কোর কমিটি তৈরি হবে।”

Advertisement

নদিয়া জেলার দু’টি কেন্দ্রের মধ্যে কৃষ্ণনগরে দীর্ঘদিন ধরেই বিজেপির সাংগঠনিক শক্তি আছে। পাশাপাশি, রানাঘাট নিয়েও এ বার তারা হিসেব কষতে শুরু করেছে। সঙ্ঘ পরিবারের বিভিন্ন গণ সংগঠনও অনেক দিন ধরেই জেলায় তৃণমূল স্তরে কাজ শুরু করেছে। জেলার কিছু এলাকায় যে হিন্দুত্ববাদী ভাবাবেগ তৈরি হয়েছে, তারও ইঙ্গিত মিলেছে সাম্প্রতিক কিছু সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার ঘটনায়। হিন্দু ভাবাবেগ উসকে মতুয়াদের একটি অংশকেও সংহত করার চেষ্টা চলছে। নদিয়ার দক্ষিণে প্রায় ১৭ শতাংশ মতুয়া ভোট তাদের পক্ষে যাবে বলেই আশা করছেন বিজেপি তথা আরএসএস নেতারা।

তবে হিন্দু জাগরণ মঞ্চের নেতা রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, “এটা একেবারেই আমাদের সাংগঠনিক বিষয়। তাই সেটা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের উৎসাহ থাকার কথা নয়।” মহাদেবও বলেন, ‘‘এ সব একান্তই আমাদের সাংগঠনিক বিষয়। এটুকু বলতে পারি, এ বার সমস্ত গণ সংগঠনকে সঙ্গে নিয়েই ঝাঁপাচ্ছি।’’

নদিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তের কটাক্ষ, ‘‘এ থেকে আবারও প্রমাণিত হল যে বিজেপি আসলে আরএসএস-এর একটি শাখা সংগঠন। তবে চৈতন্যের এই ভূমিতে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মানুষ কখনও গ্রহণ করেনি, করবেও না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন